যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে আটকে পড়লেন উত্তরপাড়ার দম্পতি
প্রতীকী চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইজরায়েলে, উগ্র জঙ্গী সংগঠন হামাসের আচমকা হামলায় বহু মানুষ রাতারাতি অকাতরে প্রাণ হারিয়েছেন। এই গণহত্যা ও আক্রমণের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। হামাসের উপর, ইজরায়েলের পালটা জবাবে কার্যত পশ্চিম বিশ্ব রণক্ষেত্রে (Gaza-Israel conflict) পরিণত হয়েছে। এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে আটকে পড়েছেন বাংলার ধনেখালির এক গবেষক। তাঁর পরিবারের মধ্যে তীব্র উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে আটকে পড়েছেন উত্তরপাড়ার এক গবেষক দম্পতি। পরিবারের বাবা মা অত্যন্ত দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। কবে বাড়ি ফিরবেন! আতঙ্কে প্রহর গুনছেন পরিবার।
সূত্রে জানা গেছে, সাইরেন বাজলেই শেল্টার হোমে ঢুকে পড়তে হচ্ছে। যুদ্ধের মধ্যে আটকে পড়েছেন বাঙালি গবেষক সৌরভ কুমার। তাঁর বাড়ি হুগলি জেলার ধনেখালির ভাণ্ডারহাটিতে। ইজারায়েলের তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নায়ু বিজ্ঞান অ্যালজাইমার রোগ নিয়ে গবেষণা করছিলেন তিনি। গত তিন বছর সেখানকার বাণিজ্য নগরী তেল আভিভে থাকছিলেন তিনি। এদিকে স্ত্রী অনিন্দিতা, নিয়ত যোগাযোগ রেখে চলেছেন স্বামীর সঙ্গে। সৌরভ জানিয়েছেন “বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আপাতত থাকছি। হামাসের জঙ্গিরা যখন তখন ঢুকে হামলা চালাচ্ছে (Gaza-Israel conflict)। অনেক বাঙালি এখনে আটকে রয়েছেন। ক্ষেপণাস্ত্র থেকে বোমা ফেলা হচ্ছে। কানে ভেসে আসছে বর্ষণের শব্দ। তীব্র আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।
অপর দিকে সৌরভের স্ত্রী বলেছেন, “পুজোর আগেই বাড়িতে আসার কথা ছিল, কিন্তু এই যুদ্ধের পরিস্থিতি নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছে। অত্যন্ত উচাটনের মধ্যে রয়েছি। কবে বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে পারবো, তাই নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছে।”
ইজরায়েলের হাইফা শহরে থাকতেন উত্তর পাড়ার দম্পতি সমোদয় হাজরা এবং স্ত্রী জয়িতা দত্ত হাজরা। সমোদয় হাজরা নিজে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নায়ুতন্ত্র নিয়ে গবেষণা করতেন। তাঁর স্ত্রী আইআইটিতে গবেষণা করতেন। তাঁদের তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে, নাম সিন্ধিয়া। মেয়ে-স্ত্রীকে নিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন সমোদয়। তবে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় খোলা রয়েছে। এই শহরে যুদ্ধের (Gaza-Israel conflict) তেমন আঁচ এখনও পর্যন্ত এসে পৌঁছায়নি। শহরের স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। যুদ্ধের পরিস্থিতির সম্পর্কে একটি ভিডিও বার্তা দিয়ে বলেন, “আগামী ৭২ ঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় খবার মজুত করে রাখা হয়েছে। ধ্বনি বাজলেই বাঙ্কারের মধ্যে ঢুকে পড়তে হচ্ছে। এই বছর কালী পুজোতে দেশে ফেরার কথা ছিল, সেই অনুযায়ী টিকিটও কাটা হয়েছিল। কিন্তু আচমকা যুদ্ধের (Gaza-Israel conflict) পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে পড়েছে।”
যদিও সমোদয়ের বাবা উদয়শঙ্কর হাজরা গত দুই সপ্তাহ আগেই ইজরায়েল থেকে ফিরেছেন। তিনি বলেন, “ওদের বলা হয়েছে জামা কাপড় শুকনো খবার নিয়ে প্রস্তুত থাকতে। এলাকা নিরাপদ হলেও পরিস্থিতি যে কোনও সময় বদলে যেতে পারে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে আসার জন্য কথা বলেছি।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।