Bangladesh: পুজোতে পদ্মার ইলিশ আসছে এপার বাংলায়, মধ্যবিত্তের জন্য কত দাম হবে?...
পদ্মার ইলিশ। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে পুজোতে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির পাতে পড়তে চলছে পদ্মপারের ইলিশ (Hilsa fish)। দুর্গাপুজোতে বাংলাদেশ থেকে তিন হাজার টন ইলিশ আসতে চলেছে। গত ৫ অগাস্ট থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। কোটা বিরোধী আন্দোলনের ফলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদচ্যুত হতে হয়েছিল। ওই দেশে, ভারত বিদ্বেষী মনোভাব অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টার গলায় শোনা গিয়েছিল। একই ভাবে সংখ্যালঘু হিন্দু সমাজের উপর অত্যাচারে ভারত সরকার সতর্কবার্তা দিয়েছিল। প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসকে (Bangladesh), প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হিন্দুদের জীবন-সম্পত্তির রক্ষাকে সুনিশ্চিত করার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। উভয়দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে কিছুটা প্রলেপ দিতে কি ইলিশের আগমন? প্রশ্ন উঠছে।
শনিবার, বাংলাদেশের (Bangladesh) অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রক একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তাতে ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ (Hilsa fish) পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ইতিমধ্যে যারা আগে আবেদন করেছে, তাদের নতুন করে আবেদন করতে হবে না। যারা নতুন করে করতে চায়, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন করলেই হবে। তবে এই ইলিশ এখন কতটা মধ্যবিত্তের নাগালে থাকবে, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। যদিও বাংলদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর, ভারতে তারা ইলিশ পাঠাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে গত একমাসের বেশি সময়ে খারাপ প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেজ্ঞরা। তাই যেহেতু অনেক পণ্য, সরঞ্জাম এবং চিকিৎসায় ভারতের উপর বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হয়, তাই কূটনৈতিক সম্পর্ককে ঠিকঠাক করতে ইউনূস সরকার ইলিশ পাঠিয়ে ইতিবাচক বার্তা দিতে চাইছে। তবে মৎস্য ব্যবসায়ীরা কূটনীতি নিয়ে মন্তব্য করতে একেবারেই নারাজ।
ভারতের মৎস্য আমদানি সংগঠন ‘ফিশ ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “পুজো উপলক্ষে প্রতি বছর ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এপারে ইলিশ চলে আসে। এই বছর তা এখনও সম্ভব হয়নি। শনিবার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ছাড়পত্র দেওয়ায় ইলিশ নিয়ে সকলেই আশাবাদী। একটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, যা মনে হয় এবার কেটে গিয়েছে। উৎসবের মধ্যে এপার বাংলার বাঙালির পাতে ইলিশ (Hilsa fish) পড়বে, এটা খুব আনন্দের কথা। তবে বাজারে দাম কত হবে, তাই এখন দেখার বিষয়।”
শনিবার ঢাকার খুচরো বাজারে এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের (Hilsa fish) দাম ছিল বাংলা ১৭০০ টাকা। যদিও দাম ১৭০০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এই মাছ যখন পশ্চিমবঙ্গে আসবে, তখন কেজি প্রতি ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা হতে পারে। এখান প্রায় ৩০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য গত বছর এই ইলিশের দাম ছিল ৭০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে। এখন এত দাম দিয়ে কি কেউ কিনতে রাজি হবে? তবে বৈধ ভাবে মাছ রফতানিতে বাংলাদেশের ফিশারি অ্যাসোসিয়েশন এবং আসাদুন্নবি ফিশারিজ অ্যান্ড মার্চেন্ট কর্পোরেশন দরপত্র ডাকে। কিন্তু বৈধভাবে মাছ না ঢুকলেও মাছের ছড়াছড়ি হবে। কারণ নদী পথে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ হয়ে থাকে। সেগুলি প্রায় ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ কোয়াড সামিটে বিশ্বনেতা মোদি, বার্তা দিলেন প্রতিটি দেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষার
২০২৩ সালে ৪০০০ টন ইলিশ এসেছিল
বাংলাদেশ (Bangladesh) ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার টন ইলিশ (Hilsa fish) রফতানি করে আসছিল। কিন্তু ২০১২ সালে হঠাৎ করেই তা বন্ধ হয়ে যায় অজ্ঞাত কারণে। কয়েক বছর আগে শেখ হাসিনা সরকার দুর্গাপুজোর সময় নির্দিষ্ট পরিমাণে ইলিশের অনুমোদন দিয়ে রফতানির অনুমতি দেয়। ২০২৩ সালে ওই দেশের মৎস্য মন্ত্রণালয় ৭৯টি কোম্পানিকে দুর্গাপুজো উপলক্ষে ৫০ টন করে মোট প্রায় ৪০০০ টন ইলিশ রফতানি করার অনুমতি দিয়েছিলেন। এবার অনেকটাই ভাটা পড়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।