১৬টি ভিন্ন হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে এই মন্দিরে...
ইসলামিক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে খুলল হিন্দু মন্দিরের দরজা
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এবছর দুর্গা পুজোতেই দুবাইয়ে (Dubai) বসবাসকারী হিন্দুরা পেলেন বড় উপহার। মধ্যপ্রাচ্যে এই বিশাল মন্দিরটি ৫ অক্টোবর অর্থাৎ বিজয়া দশমীর (Vijaya Dashami) দিন সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান চিনকে কূটনৈতিকভাবে (Diplomatically) চাপে রাখতে ও মধ্যপ্রাচ্যের (Middle east) দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে সচেষ্ট ভারত। এমত পরিস্থিতিতে ভারতের (India) দিকেও বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহী (United Arab Emirates)। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারী মাস থেকেই এই মন্দির নির্মানের কাজ শুরু হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মন্দিরটির শিলান্যাস করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী (Foreign Minister) এস জয়শঙ্করও এই মন্দিরটির পরিদর্শন করে এসেছেন।
Yet another Hindu temple is opening in a multi-religious complex in Dubai. It houses 16 Hindu deities&also Guru Granth Sahib. UAE's Min of Tolerance Sheikh Nahayan Mabarak Al Nahayan will inaugurate the temple, to open close to Dussehra: Sunjay Sudhir, India's ambassador to UAE pic.twitter.com/HlHw4ejy4g
— ANI (@ANI) October 4, 2022
">
দুবাইয়ে বসবাসকারী হিন্দুরা জানিয়েছেন, এই মন্দিরের মাধ্যমে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দিতে চান তাঁরা। এর পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর প্রশাসনকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। দুবাইয়ের জেবেলি আলি (Jebel ali) গ্রামে বিশাল এই মন্দিরটি উদ্বোধন করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের সহিষ্ণুতা বিষয়ক মন্ত্রকের মন্ত্রী শেখ নাহিয়ান বিন মুবারক আল-নাহিয়ান এবং দুবাইয়ে স্থিত ভারতের রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় সুধী। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সহিষ্ণুতা বিষয়ক মন্ত্রকের মন্ত্রীও এই মন্দির উদ্বোধনের মাধ্যমে সম্প্রীতি ও সহিষ্ণুতার বার্তা দিয়েছেন। জেবেল আলীর 'উপাসনা গ্রামে'(Worship Village) খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সাতটি গির্জা, শিখদের গুরুদুয়ারা সহ হিন্দুদের এই নতুন মন্দির মিলিয়ে মোট নয়টি ধর্মীয় উপাসনালয় রয়েছে। এই উপাসনা গ্রামে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের একত্রে তাদের ধার্মিক এবং আধ্যাত্মিকতার উৎসব পালন করতে পারবেন।এই মন্দিরটির মূল আকর্ষণ বিন্দু হল দেবতাদের মূর্তির সংখ্যা। কোনও নির্দিষ্ট দেবতা নন, ১৬টি ভিন্ন হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে এই মন্দিরে। মন্দির নির্মাতার মতে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সকলকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসতেই এই মন্দির তৈরি করা হয়েছে। আরব আমিরশাহী বসবাস করেন প্রায় ৩০ লক্ষ ভারতীয়। এই মন্দির উদ্বোধনের ফলে হিন্দুদের দীর্ঘদিনের উপাসনালয়ের অভাব পূরণ হল।
৭০ হাজার বর্গফুট এলাকার উপর এই মন্দিরটি বানাতে খরচ হয়েছে এক কোটি ৬০ লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১৩১ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা)। মন্দিরের আদল, দেওয়ালের নকশা (Design) লক্ষ করলে দেখা যায়, এখানে রয়েছে আরব এবং হিন্দু সংস্কৃতির মেলবন্ধন । সাদা মার্বেলের তৈরি এই মন্দিরের সঙ্গে গুজরাতের সোমনাথ মন্দিরের সাদৃশ্য রয়েছে।মন্দিরের তলায় দু’টি বেসমেন্ট ছাড়াও আরও দুই তলা জুড়ে মন্দির বানানো হয়েছে।একসঙ্গে ১০০০ থেকে ১২০০ দর্শনার্থী (Visitors) এই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন। পুজো দেওয়ার পাশাপাশি এই মন্দিরে আলাদা ভাবে শেখানো হবে ভরতনাট্যম এবং গীতা পাঠ। জনসাধারণের জন্য মন্দির খুলে দেওয়ার পর ভিড় উপচে পড়েছে মন্দিরে। ভিড় এড়ানোর জন্য ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকিট বুক করে মন্দিরে যাচ্ছেন পুণ্যার্থীরা।
প্রসঙ্গত, এই মন্দির উদ্বোধনের খবর আসার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন কট্টরপন্থীরা। বিপুল অর্থ ব্যয় করে হিন্দু মন্দির নির্মান করা হল কেন? প্রশ্ন তুলছেন ইসলামের গোঁড়াপন্থীরা। এই নিয়ে হুমকির সুর শোনা গিয়েছে আমিরশাহীর বিখ্যাত সাহিত্যিক আবদুল্লা আলমাদির গলায়। “ভারতে যখন মুসলিমরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তখন বিপুল অর্থ ব্যয় করে দুবাইতে হিন্দু মন্দির তৈরি করা হল কেন?” প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। যদিও তাঁর এই অভিযোগ মানতে নারাজ আরব আমিরশাহী সরকার প্রশাসন।
It's very strange.
— د.عـبدالله العـمـادي (@Abdulla_Alamadi) October 5, 2022
At a time when extremist Hindus are destroying Muslim masjids in India, with the support and encouragement of the fanatical government of Modi, a Hindu temple is being built in the UAE at a cost of 16 million dollars !!
It is unreasonable and unjustifiable. pic.twitter.com/PCfmtlypzM
">
মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ভারতে সবথেকে বেশী পেট্রোলিয়াম রপ্তানি করে থাকে। পাকিস্তানকে দেওয়া ঋণের অর্থ ফেরত চাইছে আরব আমিরশাহী সরকার। জন্মু কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদের ক্ষেত্রে ভারতকে সমর্থন করেছিলেন তাঁরা। আবার এরই মধ্যে হিন্দু মন্দির তৈরি করে আমিরশাহীতে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয়দের মন জিতেছে আমিরশাহী সরকার।