জীবনের অধিকারই সর্বপ্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত...
ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ফাইল চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আফগানভূমে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তুলতে তাজিকিস্তানে আয়োজিত সাত দেশের আঞ্চলিক নিরাপত্তা বৈঠকে সুর চড়াল ভারত (India)। ওই বৈঠকে ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল (NSA Ajit Doval)। তিনি বলেন, ভারত বরাবরই আফগানিস্তানের (Afghanistan) জনতার পাশে রয়েছে। সুরক্ষা এবং সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে তাঁদের সর্বতোভাবে সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। ডোভাল বলেন, আফগানিস্তানের মানুষের সঙ্গে আমাদের যে শতাব্দীপ্রাচীন বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে, তা কেউ কোনও দিন বদলাতে পারবে না।
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে চতুর্থতম এই আঞ্চলিক সম্মেলনটি সম্প্রতি হয় তাজিকিস্তানে। ভারত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাশিয়া, চিন, ইরান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান এবং কিরঘিজস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কর্তারা। তবে সম্মেলনে উল্লেখযোগ্যভাবে অনুপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের কোনও প্রতিনিধি। ডোভাল বলেন, যাঁরা এই আলোচনায় উপস্থিত রইলেন, তাঁদের প্রত্যেকের উচিত সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন দমনে আফগানিস্তানের হাত শক্ত করা। ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডোভাল বলেন, আফগানিস্তানে ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছে ১৭ হাজার মেট্রিক টন। ৫০ হাজার কোভ্যাক্সিনও পাঠানো হয়েছে। ১৩ টন জীবনদায়ী ওষুধ, পোলিও ভ্যাকসিনের ৬০ মিলিয়ন ডোজ এবং শীতপোশাকও পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন : মোদি-বাইডেন বৈঠকে উঠতে পারে ইউক্রেন, গম রফতানি প্রসঙ্গ
ডোভাল বলেন, সুরক্ষা ও সন্ত্রাস দমনের ক্ষেত্রে আফগানিস্তানবাসীকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। সন্ত্রাসমুক্ত আফগানিস্তান গড়ে তুলতে হবে। এই সময় আফগানিস্তান থেকে শয়ে শয়ে শরণার্থী এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়বে বলে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সতর্ক করে দেন রাশিয়ার প্রতিনিধি নিকোলাই পেত্রুশেভ। তার প্রেক্ষিতে ডোভাল বলেন, জীবনের অধিকারই আমাদের সর্বপ্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের পাশাপাশি সকলের মানবাধিকার সুরক্ষাও প্রয়োজন। তালিবান জমানায় নারীদের ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গের অবতারণা করে ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, নারী ও যুব সমাজ যে কোনও সমাজের ভবিষ্যতের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ। বক্তৃতায় নারী শিক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নের ওপরও জোর দেন ডোভাল। আফগান জাতি গঠনে আফগান সমাজের সব শ্রেণির প্রতিনিধিত্বের ওপরও জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন :মোদিময় জাপান! প্রধানমন্ত্রীকে দেখেই উঠল ‘মোদি মোদি’, ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগান
ইউক্রেন যুদ্ধের (Ukraine war) আবহেও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুতিনের (Putin) প্রতিনিধি। যার অর্থ, আফগানিস্তানে মার্কিন আধিপত্য বৃদ্ধি পাক, তা কোনওভাবেই চায় না মস্কো (Moscow)। চিনও (China) আফগামভূমে আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট। অথচ আফগানিস্তানের নিকটতম প্রতিবেশী পাকিস্তানের কোনও প্রতিনিধিই উপস্থিত ছিলেন না এই সম্মলেন। তাহলে কী সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া চালিয়েই যাবে পাকিস্তান (Pakistan)?