কাতার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের জন্য সাধারণ ইরানবাসীরা দলের ওপর প্রবলভাবে ক্ষুব্ধ
দলের হারে উচ্ছ্বাস ইরানের বিক্ষোভকারীদের।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এ এক অন্য উচ্ছ্বাস। ফুটবল বিশ্বযুদ্ধে দেশ হেরেছে আনন্দে ফেটে পড়লেন বহু ইরানবাসী! এমন ঘটনা ক্রীড়াজগতের ইতিহাসেই প্রায় নজিরবিহীন। প্রিয় দল হারলে কান্নায় ভেঙে পড়েন সমর্থকরা। খেলার মাঠেই ওঠে জাতীয়তাবাদের সুর। সেখানে এ যেন উল্টো রাজার দেশ। ফিফা বিশ্বকাপে আমেরিকার কাছে ইরানের পরাজয়ের পর আনন্দে ভাসলেন বহু ইরানি। ইরানের চিত্রটা সম্পূর্ণ আলাদা। হিজাব আইনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলনে কার্যত দু'ভাগ হয়ে গিয়েছে দেশ। তার মধ্যেই, কাতার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের জন্য সাধারণ ইরানবাসীরা দলের ওপর প্রবলভাবে ক্ষুব্ধ। তাই আমেরিকার কাছে ইরানের হারের পর উল্লসিত হাজার হাজার মানুষ তেহরান সহ একাধিক শহরের রাস্তায় গাড়ির হর্ন বাজাতে থাকেন।
রানের চিত্রটা সম্পূর্ণ আলাদা। হিজাব আইনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলনে কার্যত দু'ভাগ হয়ে গিয়েছে দেশ। তার মধ্যেই, কাতার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের জন্য সাধারণ ইরানবাসীরা দলের ওপর প্রবলভাবে ক্ষুব্ধ। তাই আমেরিকার কাছে ইরানের হারের পর উল্লসিত হাজার হাজার মানুষ তেহরান সহ একাধিক শহরের রাস্তায় গাড়ির হর্ন বাজাতে থাকেন।
Surreal: Fireworks reportedly from Saqqez #Iran tonight celebrating US win over Iranian team at World Cup. Saqqez is #MahsaAmini’s hometown, the woman whose death has sparked mass protests against regime pic.twitter.com/1qoXxmBkfK
— Joyce Karam (@Joyce_Karam) November 29, 2022
এই উচ্ছ্বাসযাপনের ভিডিয়ো প্রবলভাবে ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দেখা যাচ্ছে দলের হারের পর কীভাবে বাজি ফাটানো তে মেতে উঠেছেন একদল ইরানবাসী।
Iran is a country where people are very passionate about football. Now they are out in the streets in the city of Sanandaj & celebrate the loss of their football team against US.
— Masih Alinejad 🏳️ (@AlinejadMasih) November 29, 2022
They don’t want the government use sport to normalize its murderous regime.pic.twitter.com/EMh8mREsQn pic.twitter.com/MqpxQZqT20
ইরানের সমর্থকদের এই উচ্ছ্বাসের পিছনে রয়েছে অন্য একটি কারণ। সেপ্টেম্বরে ২২ বছরের তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকে হিজাব বিদ্রোহে অগ্নিগর্ভ ইরান। ‘নীতি পুলিশে’র বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন মুক্তকেশী তরুণীরা। হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে ইসলামের নামে মহিলাদের শিকলবন্দি করার প্রতিবাদ করছেন তাঁরা। কিন্তু থেমে নেই শাসকও। বিক্ষোভ দমনে কড়া পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। উল্লেখ্য, মহিলাদের জন্য কঠোর পোশাকবিধি রয়েছে ইরানে। ওই আইনে বয়স সাত বছরের বেশি হলে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। নির্দিষ্ট নিয়মে পরতে হয় হিজাব। ‘নীতি পুলিশের’ দল হিজাব বিধি সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না, তা তদারকি করে থাকে। সেই বিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশির মারে মৃত্যু হয় তরুণী মাশা আমিনির। তারপর থেকেই দেশজুড়ে চলছে প্রতিবাদী মিছিল।
আরও পড়ুন: যুবরাজের উপহার! মেসিদের হারিয়ে মূল্যবান গাড়ি পেলেন সৌদি ফুটবলাররা
ইরান সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ফুটবলাররাও। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে খেলা শুরুর আগে জাতীয় সংগীত (Iran National Anthem) গাইতেও অস্বীকার করেছিল ইরানের ফুটবলাররা। যদিও পরে সরকারের চাপে তাঁরা সবকিছু মেনে নেন। দল হেরে যাওয়ায় সরকার আর খেলার মাঠকে ব্যবহার করতে পারবে না এই আনন্দেই উচ্ছ্বাস করছেন বিক্ষোভকারীরা।