Pannun Assassination Plot Case: ড্যামিয়ান উইলিয়ামসের জায়গায় এলেন ক্লেটন, কী বার্তা দিলেন ট্রাম্প?...
ড্যামিয়ান উইলিয়ামসের স্থলাভিষিক্ত হবেন জে ক্লেটন, জানিয়ে দিলেন ট্রাম্প। সংগৃহীত ছবি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফেডারেল প্রসিকিউটর ড্যামিয়ান উইলিয়ামসের স্থলাভিষিক্ত হবেন মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (SEC)-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান জে ক্লেটন (Jay Clayton)। ১৫ নভেম্বর এই ঘোষণা করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর প্রশাসনের অধীনে নিউ ইয়র্কের দক্ষিণ জেলার জেলা অ্যাটর্নি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ক্লেটন। উইলিয়ামস আগে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (RAW)-এর প্রাক্তন কর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে খালিস্তানি সন্ত্রাসবাদী এবং ‘শিখস ফর জাস্টিস’ জঙ্গি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুনকে (Pannun Assassination Plot Case) হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিলেন।
উল্লেখ্য যে, ভারত সরকার এই বিষয়টিকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। কারণ সরকার এই ধরনের কোনও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন ভারতীয় নাগরিক, পেশায় ব্যবসায়ী নিখিল গুপ্ত এবং এক অজ্ঞাত গোয়েন্দা কর্তা। নিখিলকে মামলার সহ-ষড়যন্ত্রী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং তাঁকে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ২০২৪ সালের জুন মাসে তাঁকে আমেরিকায় প্রত্যর্পণ করা হয়। নিখিল এই তথাকথিত হত্যা ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
উইলিয়ামসের দায়ের করা অভিযোগে যাদবকে ‘র’-এর একজন সিনিয়র ফিল্ড অফিসার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যাদব ভারতে তোলাবাজি ও অপহরণের অভিযোগে আটক রয়েছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (FBI)-এর ওয়ান্টেডের তালিকায় রয়েছেন। যাদব, গুপ্ত এবং অজ্ঞাত ওই কর্মকর্তা পান্নুনকে হত্যা করার জন্য একজন পেশাদার অপরাধীকে ভাড়া করার চেষ্টা করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন (Jay Clayton)। পান্নুন প্রকৃতপক্ষে একজন সরকারী এজেন্ট হিসেবে কাজ করছিলেন। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ট্রাম্প জে ক্লেটনকে উচ্চ প্রশংসিত এক ব্যবসায়িক নেতা, আইনজীবী এবং জনসেবক হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
আরও পড়ুন: লাহোরে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পাক জঙ্গি লখভি, প্রকাশ্যে সেই ছবি
ট্রাম্প লিখেছেন, “আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে নিউ ইয়র্কের জে ক্লেটন, যিনি আমার প্রথম মেয়াদে মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবে অসাধারণ কাজ করেছিলেন, তাঁকে নিউ ইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের মার্কিন অ্যাটর্নি পদে মনোনীত করা হল। জে একজন উচ্চ প্রশংসিত ব্যবসায়িক নেতা, আইনজীবী এবং জনসেবক। তিনি ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ও আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি লাভ করেছেন। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হওয়ার আগে, তিনি সুলিভান অ্যান্ড ক্রমওয়েলের অংশীদার ছিলেন এবং ম্যানেজমেন্ট (Pannun Assassination Plot Case) কমিটিতে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি সুলিভান অ্যান্ড ক্রমওয়েলের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার, একাধিক সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানির বোর্ড সদস্য এবং পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির ওয়ারটন বিজনেস স্কুল ও কেরি ল স্কুলে অ্যাডজাঙ্ক্ট প্রফেসর হিসেবে কাজ করছেন। জে সত্যের জন্য একজন শক্তিশালী যোদ্ধা হবেন, যেহেতু আমরা আমেরিকাকে আবার মহান করে তোলার কাজ করছি।”
ক্লেটন
প্রসঙ্গত, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকালে ক্লেটন ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এসইসি (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট এবং আর্থিক অনিয়ম সম্পর্কিত মামলাগুলিতে বিশেষজ্ঞ। বিনিয়োগ, শেয়ারবাজারে লেনদেনের কারসাজি এবং জালিয়াতি সম্পর্কিত হাই-প্রোফাইল মামলাগুলিও পরিচালনা করেছিলেন তিনি। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ভারতের বিরুদ্ধে খালিস্তানপন্থী জঙ্গি গুরুপতওয়ান্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনে আমেরিকা। এই অভিযোগ ওঠে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর ভারতকে খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যা করার অভিযোগের প্রায় দেড় মাস পরে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডাকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছে বলে দাবি করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল যে নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভারতের হাত রয়েছে। যেখানে পন্নুনের হত্যা ষড়যন্ত্রের তদন্তে ভারত সহযোগিতা করছে, সেখানে নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় এজেন্টদের জড়িত থাকার বিষয়ে কানাডা এখনও কোনও উল্লেখযোগ্য প্রমাণ দিতে পারেনি। এই অভিযোগের পর থেকেই ভারত এবং কানাডার মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি, কানাডা আরও একধাপ এগিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে কানাডার মাটিতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে। যার জেরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠেকেছে (Pannun Assassination Plot Case) তলানিতে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।