India: ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যদেশের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। সাফ জানিয়ে দিল দিল্লি।
সাংবাদিক বৈঠকে অরিন্দম বাগচী। ফাইল চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গতকাল পাকিস্তানের (Pakistan) করাচিতে (Karachi) একটি হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। তারপরেই পাকিস্তানকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেয় ভারতের বিদেশ মন্ত্রক (Ministry of External Affairs)। ভারতের সেই মন্তব্যকে খারিজ করল পাকিস্তান।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী (Arindam Bagchi) বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, "আমরা সম্প্রতি করাচিতে মন্দিরে ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে পেরেছি। বার বার পাকিস্তানে আক্রান্ত হচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। বিষয়টির আমরা তীব্র নিন্দা করছি। পাকিস্তান সরকারকেও আমরা সেকথা জানিয়েছি। পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও অনুরোধ করেছি।"
অরিন্দম বাগচীর এই মন্তব্যের পরেই পাকিস্তান এক বিবৃতি জারি করে বলে, তারা ভারতের এই মন্তব্যকে খারিজ করছে। এরপর ফের ভারতে মুসলিম নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করার পরামর্শ দেয় পাকিস্তান।
অপরদিকে, নূপুর শর্মার মন্তব্যের বিষয়েও এদিন নিজের অবস্থান স্পষ্ট করল ভারত সরকার। এই বিষয়ে ভারতের স্পষ্ট বক্তব্য, ভারত সরকারের সঙ্গে কারও ব্যক্তিগত মন্তব্য গুলিয়ে ফেলাটা ঠিক নয়। আইনগতভাবে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নূপুর শর্মাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন নেবে। কিন্তু, সেটা সম্পূর্ণই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
সম্প্রতি দুই প্রাক্তন বিজেপি নেতা হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। তারপরেই মুসলিম দেশগুলি ভারতের সমালোচনা করে। পাকিস্তানও ভারতকে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে 'জ্ঞান' দেওয়ার চেষ্ঠা করে। তার কিছুদিন পরেই পাকিস্তানের মুখ পুড়িয়ে দুষ্কৃতীরা হিন্দু মন্দিরে হামলা চালায়। আর তার প্রেক্ষিতেই পাকিস্তানকে 'সংখ্যালঘু নিরাপত্তা' নিয়ে খোঁচা দেয় ভারত।
প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার পয়গম্বরকে নিয়ে করা মন্তব্যে ইসলামিক দেশগুলিতে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ভারতকে। আরব দেশগুলি ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে। সেই স্রোতে গা ভাসায় পাকিস্তানও। কিন্তু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যদেশের হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না। সাফ জানিয়ে দিল দিল্লি।
ইসলামিক দেশগুলোর হস্তক্ষেপ যে কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না, তা কার্যত স্পষ্ট করল নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী সাংবাদিক বৈঠকে জানান,"যে ট্যুইট ও কমেন্টগুলি করা হয়েছে, তা সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন নয়। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মহল ব্যবস্থা নিয়েছে।"
পয়গম্বর সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যে জেরে বিজেপি ইতিমধ্য়েই নূপুর শর্মা ও নবীনকুমার জিন্দালকে দল থেকে সাসপেন্ড করেছে। পাশাপাশি, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কিন্তু, সেই অনভিপ্রেত ঘটনার দোহাই দিয়ে অন্যান্য দেশ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবে, তা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এই বিষয়টি কড়া ভাষায় জানিয়েছে মোদি সরকার।
এর মধ্যেই ভারত সফরে এসেছেন ইরানের বিদেশ মন্ত্রী হোসেন আমির আবদোল্লাহিয়াঁ। দিল্লিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদি, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। গত কাল রাতে ইরানের মন্ত্রী টুইটারে লেখেন, "দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার জন্য আলোচনায় বসেছে দুই দেশ। তেহরান এবং দিল্লি ধর্ম ও ইসলামের পবিত্রতাকে শ্রদ্ধা আর কোনও রকম বিতর্কিত মন্তব্য থেকে দূরে থাকার বিষয় সম্মত। এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।"
এরপরেই অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নিয়ে ভারতের কড়া বার্তায় বিষয়টি থেকে খানিকটা পিছিয়ে আসে ইরানও। ভারত বার্তা দেওয়ার পর এই নিয়ে নতুন কোনও মন্তব্য করেনি ইরান।