ইউরোপ এক বেলায় যা জ্বালানি কেনে, ভারত সেই পরিমাণ কেনে গোটা মাসে, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ওয়াশিংটনকে সাফ জানাল নয়াদিল্লি
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এস জয়শঙ্কর ও অ্যান্টনি ব্লিন্কেন।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে(Russia Ukraine war) ফের একবার ভারসাম্যের নীতি নিল ভারত (India)। আমেরিকাকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ হোক চাইলেও, রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধ করবে না নয়াদিল্লি। ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় (India-US 2+2 dialogue) একথা সাফ জানিয়ে দিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর (S Jaishankar)।
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে। এই যুদ্ধ নিয়ে গোটা বিশ্ব ভাগ হয়ে গিয়েছে দু ভাগে। এক দিকে রয়েছে রাশিয়ার মিত্র দেশগুলি। অন্য দিকে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে ন্যাটোভুক্ত (NATO) দেশগুলির পাশাপাশি আমেরিকাও (USA)। যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে (Russian President Vladimir Putin) দায়ী করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (US President Joe Biden)।
ভারত যেন রাশিয়ার কাছ থেকে তেল না কেনে, সে ব্যাপারেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন কর্তাব্যক্তিরা। তবে ভারত যে তাতে বিশেষ কান দেয়নি, তার প্রমাণ মেলে এই কিছু দিন আগেই রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি কেনায়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত যে কোনও একপক্ষ নেবে না, তা প্রথম থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। প্রত্যাশিতভাবেই আমেরিকার হুমকিও ধর্তব্যের মধ্যেই আনেনি নয়াদিল্লি।
ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় জয়শঙ্করের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং (Defence Minister Rajnath Singh)। আর ব্লিঙ্কেন ছাড়া আমেরিকার পক্ষে হাজির ছিলেন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন। জয়শঙ্কর মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে(Antony Blinken) সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ভারত যুদ্ধ চায় না। তবে রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা বন্ধের কথাও আপাতত ভাবা হচ্ছে না।
জয়শঙ্কর বলেন, আপনারা যদি রাশিয়া থেকে ভারতের জ্বালানি কেনার বিষয়টি দেখেন, তবে আমি বলব আপনারা ইউরোপের দিকে তাকান। আমরা জ্বালানি কিনি প্রয়োজনের জন্য। তবে আমরা এক মাসে যে পরিমাণ জ্বালানি কিনি, সেই পরিমাণ জ্বালানি ইউরোপ কেনে এক বেলায়। ভারত যে যুদ্ধের বিপক্ষে,তা ফের একবার স্পষ্ট করে দেন বিদেশমন্ত্রী। জয়শঙ্কর বলেন, আমরা যুদ্ধের বিরুদ্ধে। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও কূটনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধানে বিশ্বাসী আমরা। আমরা হিংসারও বিরুদ্ধে। হিংসা রুখতে যে কোনও পদক্ষেপ করতেও রাজি আমরা।
ভারত যে রাশিয়া থেকে খুবই কম পরিমাণ জ্বালানি কেনে, গত সপ্তাহে তা জানিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসের (White House) প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি। তিনি জানিয়েছিলেন, রাশিয়া যে পরিমাণ জ্বালানি রফতানি করে, তার এক থেকে দু'শতাংশ কেনে ভারত। তবে মস্কোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাইডেন সরকার।
ভারতের বিদেশমন্ত্রীকে তাঁদের দেশের অবস্থান স্পষ্ট করে দেন ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, আমরা ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমিকতার পক্ষে। সে দেশের মূল্যবোধকেও গুরুত্ব দিই আমরা। দশকের পর দশক ধরে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের গভীর সম্পর্ক (India Russia friendship) গড়ে উঠেছে। সেই সময় আমেরিকা ভারতের বন্ধু দেশ ছিল না। তবে এখন আমরা ভারতের বন্ধু হতে উৎসাহী।
চিন ও পাকিস্তানকে চাপে রাখতে আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্বেও আগ্রহী ভারত। তবে সেজন্য এখনই রাশিয়ার হাত ছাড়তে রাজি নয় সাউথ ব্লক। ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক (India-US bilateral relation) বৈঠকে ঠারে-ঠারে সেই কথাটাই আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন জয়শঙ্কর।
Tags:
Modi Biden meet
Modi Biden virtual meet
russia ukraine war
2+2 dialogue
India US bilateral dialogue
s jaishankar
joe biden
rajnath singh
vladimir putin
india news
antony blinken
India-US bilateral relation
India Russia friendship
Russia war 2022
Ukraine vs Russia
Russian oil import
India oil imports
india oil import from russia