সাংসদ হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়, কলকাতায় কী বললেন বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান?
bangladesh_mp_murder_case
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের ঝিনাইদহের আওয়ামি লিগের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনোয়ারের খুনের ঘটনায় রবিবার থেকে যৌথ তদন্ত শুরু করেছে দুই দেশের গোয়েন্দারা। একদিকে বাংলাদেশের গোয়েন্দা অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। যদিও এই খুনের ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামান শাহিন এখনও ধরা পড়েনি। বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হারুন ওর রশিদের আশঙ্কা, খুনের আখতারুজ্জামান শাহিন আমেরিকা পালিয়ে গিয়েছে।
কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হারুন ওর রশিদ, তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “বাংলাদেশের দন্ডবিধিতে একটি ধারা আছে যেখানে বাংলাদেশের বাইরেও অপরাধ হলে আমরা তদন্ত করতে পারি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য মূল অভিযুক্তদের পাকড়াও করে আইনি প্রক্রিয়ায় মধ্যে আনা। এছাড়াও প্রয়াত এমপির দেহ বা দেহাংশ বিশেষ উদ্ধার করা। আমরা দুই দেশের পুলিশ তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে চাই। এই হত্যার পরিকল্পনাকারী, সুবিধাভোগী এবং যারা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে সকলেই বাংলাদেশি। হত্যার পরিকল্পনাও বাংলাদেশেই করা হয়েছিল। আমাদের প্রধান কাজ এই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, অপরাধস্থল পরিদর্শন ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করার দিকে মন দিয়েছে তাঁরা। একই সঙ্গে আখতারুজ্জামানকে গ্রেফতার করার জন্য ইন্টারপোলের সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশের গোয়েন্দা দল বৃষ্টি উপেক্ষা করে অ্যাকোয়াটিকার ওয়াটার পার্ক সংলগ্ন সঞ্জিভা গার্ডেনে পৌঁছে যায়। ওই তদন্তকারী দল ভবানী ভবনেও পৌঁছয়। সেখানে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়। সিআইডি হেফাজতে থাকা জাহির হাওলাদারকে জেরা করেন দুই অধিকারিক। খুনের মোটিভ ধীরে ধীরে তদন্তকারীদের কাছে পরিষ্কার হচ্ছে। তবে সাংসদ খুনের নেপথ্যে সোনা পাচারের কোন যোগসূত্র আছে কী না তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: এক মাস ধরে পরিকল্পনা শহরে, বাংলাদেশ সাংসদকে খুনের ঘটনা স্বীকার অভিযুক্তের
তদন্তে উঠে এসেছে আনোয়ারুলের ব্যবসায়িক পার্টনার ছিলেন আখতারুজ্জামান। তিনি নিজেকে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এবং ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিলেও সোনা পাচারের সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র ছিল। এখনও পর্যন্ত যে সকল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার হয়েছে তারা সকলেই সোনা পাচারের সঙ্গে কোনও না কোনওভাবে যুক্ত ছিল। আখতারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় সীমান্ত দিয়ে সোনা পাচারের মত অপরাধ নিয়ে অতীতেও প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন ওই সাংসদ। মনে করা হচ্ছে কলকাতাকে কেন্দ্র করে সোনা পাচারের যে বিরাট র্যাকেটের দখল কার হাতে থাকবে তা নিয়েই মনোমালিন্য হয়েছিল ওই দুই পার্টনারের মধ্যে।
শিলিস্তা রহমান নামে যে রহস্যময়ী নারীর কথা সামনে এসেছে তাকে হানি ট্র্যাপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং সম্পত্তি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। মাত্র ২২ বছর বয়সে প্রচুর অর্থের মালিক হয়ে উঠেছিলেন। এই খুনের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্যদেরও মানি ট্রেল খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ধৃত জাহির শেখ জানিয়েছে দিনে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেনাপোল বর্ডার পার করে সোনার বাট আনার চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু এখানে আসার পর সেই অ্যাসাইনমেন্ট নাকি বদলে যায়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।