India: পাকিস্তানের দ্বিচারিতা প্রকাশ্যে! কী হুঁশিয়ারি দিল ভারত?
জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহার (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানের রাস্তায় প্রকাশ্যে ভাষণ দিচ্ছে কান্দাহারে বিমান অপহরণকাণ্ড থেকে সংসদ ভবনে হামলা থেকে পুলওয়ামা হামলার মাথা জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহার। সম্প্রতি এমনই কিছু রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে, যা নিয়ে ক্ষুব্ধ ভারত। মাসুদ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সন্ত্রাসবাদী। তাঁকে 'সন্ত্রাসবাদী' হিসেবে চিহ্নিত করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার নেপথ্যে মাসুদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ। ভারত বরাবরই অভিযোগ করেছে, মাসুদ গা ঢাকা দিয়ে আছে পাকিস্তানে। কিন্তু পাকিস্তান অভিযোগ অস্বীকার করেছে বার বার। সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা রিপোর্ট যদি সত্য হয়, তবে তা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানের (Pakistan) 'দ্বিচারিতা' ফাঁস করল বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। সেই সঙ্গে মাসুদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবিও জানিয়েছে তারা।
সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা একটি রিপোর্টে দাবি, পাকিস্তানের (Pakistan) বাহাওয়ালপুর শহরে প্রকাশ্যে ভাষণ দিয়েছে জইশ প্রধান। এছাড়া পাক সরকার তাকে 'পলাতক' বলে ঘোষণা করলেও, গত মঙ্গলবার, জইশ পরিচালিত এক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মাসুদ আজহারের একটি বক্তৃতা দেওয়ার ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ১৯২৪ সালে তুর্কি খিলাফতের বিলুপ্তি ঘটেছিল। তার শতবর্ষ উপলক্ষে ওই জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। আজহার সেখানে তার বক্তৃতায় ভারত ও ইজরায়েলের বিরুদ্ধে নতুন করে জেহাদি অভিযান শুরুর প্রতিশ্রুতি দেয়। দাবি করে, এর থেকেই বিশ্বব্যাপী একটি নতুন ইসলামী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। খিলাফত পুনরুদ্ধারের জন্য শ্রোতাদের সে তার নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়। শ্রোতাদের করতালির মধ্যে, তাকে বারবার চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, 'ভারত, তোমার মৃত্যু আসন্ন'।
আরও পড়ুন: এবার বাংলাদেশের স্কুল পাঠ্যবই থেকে বাদ যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জীবনী!
বিশ্বের তাবড় তদন্তকারী সংস্থা তাকে খুঁজছে। এই অবস্থায় কী করে পাকিস্তানের (Pakistan) রাস্তায় প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে সে প্রকাশ্যে ভাষণ দিল, সেই প্রশ্ন তুলেছে ভারত। প্রশাসনের মদত ছাড়া তা সম্ভব কি না, তোলা হয়েছে সেই প্রশ্নও। শুক্রবার এ প্রসঙ্গে কড়া বিবৃতি দিয়েছে ভারতের (India) বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘আমরা ওর (মাসুদের) বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি। অবিলম্বে ওকে আইনের আওতায় এনে সাজা দেওয়া উচিত। মাসুদ যে পাকিস্তানে আছে, তা বার বার অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ।” জয়সওয়াল আরও বলেন, ‘‘রিপোর্ট যদি সঠিক হয়, তবে তা নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের দ্বিচারিতার পর্দাফাঁস করল। মাসুদ ভারতের সীমান্তে একাধিক জঙ্গিহানা ঘটিয়েছে। আমরা তার শাস্তি চাই।”
রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ২০১৯ সালের মে মাসে মাসুদকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত এবং তালিকাভুক্ত করা হয়। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তাকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে ভারত। ১৯৯৯ সালে কান্দাহারের ভারতীয় বিমান অপহরণকাণ্ড থেকে শুরু করে ভারতে ২০০১ সালের সংসদ হানা, ২০১৯ সালে পুলওয়ামা জঙ্গিহানা, ২০১৬ সালের পাঠানকোট হামলা, ২০০১ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা চত্বরে জঙ্গি হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত এই মাসুদ। ১৯৯৪ সালে ভারত তাকে গ্রেফতারও করেছিল। কিন্তু ১৯৯৯ সালে তাকে মুক্ত করতে ভারতের একটি বিমান অপহরণ করা হয়। সেই সময়ে বন্দিদের বাঁচাতে মাসুদকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল নয়াদিল্লি। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি জইশ-ই-মহম্মদ নামের জঙ্গিগোষ্ঠী তৈরি করে। ২০০৩ সালে পাকিস্তানের (Pakistan) প্রাক্তন সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মুশারফের প্রাণনাশের চেষ্টা করেছিল মাসুদ আজহার। তার পর থেকে তাকে আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।