TTP Terrorists: অপহৃত ১৬ পরমাণু বিজ্ঞানীকে মুক্তি দিতে গুচ্ছের শর্ত টিটিপির, ঘোর বিপাকে পাকিস্তান...
পাকিস্তানের গালে মোক্ষম থাপ্পড় টিটিপির। প্রতীকী ছবি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানের লাগানো বিষবৃক্ষে ফল ধরতে শুরু করেছে! ভারতে নিত্য অশান্তি জিইয়ে রাখতে লাগাতার জঙ্গিদের মদত দিয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের (Pakistani Nuclear Scientists Abducted) সরকার। যিনিই মসনদে বসেছেন, তিনিই দেশের বিভিন্ন সমস্যা থেকে দেশবাসীর নজর ঘোরাতে অক্সিজেন জুগিয়ে গিয়েছেন বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীকে। এবার সেই জঙ্গিফাঁদে পড়েই অপহৃত পরমাণু বিজ্ঞানীদের ছাড়াতে কার্যত নাকানি চোবানি খাচ্ছে পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফের সরকার।
ঘটনার সূত্রপাত দিন দুই আগে। তেহরিক-ই-তালিবান, সংক্ষেপে টিটিপির (TTP Terrorists) কয়েকশো জঙ্গি দিনে-দুপুরে হানা দেয় পাকিস্তানের বৃহত্তম ইউরেনিয়াম খনিতে। সশস্ত্র জঙ্গিদের রণমূর্তি দেখে পালিয়ে যায় খনি প্রহরারত নিরাপত্তারক্ষীরা। বিনা বাধায় খনিতে লুটপাট চালায় জঙ্গিরা। যাওযার সময় সঙ্গে নিয়ে যায় প্রচুর ইউরেনিয়াম। পণবন্দি করে ১৬ জন পাক পরমাণু বিজ্ঞানী-সহ মোট ১৮ জনকে। এই খনির নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল পাক রেঞ্জার্স এবং আধা কমান্ড বাহিনী। জঙ্গিদের দেখে প্রাণ বাঁচাতে গা-ঢাকা দেয় তারা। অসহায়ের মতো জঙ্গিদের সঙ্গে যেতে বাধ্য হন পাক পরমাণু বিজ্ঞানীরা। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা-সহ পশ্চিম দুনিয়া। ভয়েস অফ আমেরিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে পাক বিজ্ঞানীদের অপহরণ করেছে টিটিপি। পরে তাঁদের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের অনুমান, ইউরেনিয়ামের সাহায্যে এবার শক্তিশালী বোমা তৈরির চেষ্টা করবে টিটিপি। তাই খনি থেকে ইউরেনিয়াম লুট করেছে তারা (Pakistani Nuclear Scientists Abducted)।
দীর্ঘ সময় ধরে পরমাণু বোমা তৈরির সুপ্ত ইচ্ছে পোষণ করেছে বহু জঙ্গি নেতা। একই সঙ্গে বিজ্ঞানী ও তেজস্ক্রিয় লুট করে সেই স্বপ্ন সফল করতে পারে জঙ্গিরা। জঙ্গি সংগঠনগুলি পরমাণু বোমা তৈরি করলে বিশ্বজুড়ে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হবে বলেই শঙ্কা মার্কিন গোয়েন্দাদের। এর আগেও পাক সেনাবাহিনীর হাতে থাকা পারমাণবিক হাতিয়ারের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। আমেরিকার বহু বিশেষজ্ঞই ইসলামাবাদের কাছে আণবিক অস্ত্র থাকাকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করেন। ইউরেনিয়াম খনি লুট এবং বিজ্ঞানীদের অপহরণের ঘটনায় উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লিও।
বিশ্বে মুখ পোড়ার ভয়ে প্রথমে বিজ্ঞানীদের অপহরণের কথা স্বীকার করেনি পাক সরকার। পরে অবশ্য জঙ্গি-কবল থেকে বিজ্ঞানীদের মুক্ত করতে শাহবাজ শরিফের সরকার দর কষাকষি করছে বলে অসমর্থিত সূত্রের খবর। যদিও এ ব্যাপারে অফিসিয়ালি কিছু জানানো হয়নি পাক সরকারের তরফে। তবে টিটিপি (TTP Terrorists) জঙ্গিরা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রাণ বাঁচাতে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের কাছে কাতর আর্জি জানাচ্ছেন পাকিস্তানের অপহৃত ১৬ জন বিজ্ঞানী এবং দুই ইঞ্জিনিয়র।
এদিকে পণবন্দিদের জীবিত ছেড়ে দিতে গুচ্ছের শর্ত দিয়েছে টিটিপি জঙ্গিরা (Pakistani Nuclear Scientists Abducted)। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল, অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে পাক ফৌজকে। মুক্তি দিতে হবে পাক জেলে বন্দি টিটিপির সমস্ত নেতা ও যোদ্ধাকে। আর পাক-আফগান সীমান্তের ‘ডুরান্ড লাইন’ বাতিল করে নয়া সীমান্ত নির্ধারণ করতে হবে। গত ডিসেম্বরে পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে বড়সড় হামলা চালায় টিটিপি। মৃত্যু হয়েছিল পাক সেনা বাহিনীর এক মেজর-সহ বেশ কয়েকজন জওয়ানের। বদলা নিতে ২৫ ডিসেম্বর আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে এয়ারস্ট্রাইক চালায় পাকিস্তানের বায়ুসেনা। পরে পাকিস্তান দাবি করে জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসন জানায়, পাকিস্তানের বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন শিশু ও মহিলা-সহ প্রায় ৫০ জন। এর পরেই সীমান্তে কয়েক হাজার জঙ্গি পাঠিয়ে দেয় তালিবানরা। তালিবান এবং টিটিপি জঙ্গিদের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেনি পাক সেনা। এই ঘটনার সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই পরমাণু বিজ্ঞানীদের অপহরণ করে টিটিপি বুঝিয়ে দিল পাক সেনার তুলনায় তারা কতটা শক্তিশালী।
আরও পড়ুন: “হিন্দুরা জোটবদ্ধ না হলে এখানেও বাংলাদেশের মতো সংখ্যালঘু হয়ে পড়বেন”, বার্তা শুভেন্দুর
গত ডিসেম্বর (TTP Terrorists) থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে টিটিপি ও পাক সেনার মধ্যে। এই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে জঙ্গির তকমা দিয়েছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের অভিযোগ, আড়ালে থেকে টিটিপিকে (Pakistani Nuclear Scientists Abducted) ক্রমাগত মদত দিয়ে চলেছে তালিবান প্রশাসন। জঙ্গিদের তারা আশ্রয়ও দিচ্ছে বলে অভিযোগ। ঘটনার জেরে ইসলামাবাদ ও কাবুলের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। জানা গিয়েছে, আফগানিস্তানে এয়ারস্ট্রাইক চালানোর পরে পরেই সীমান্তে অন্তত দুটি পাক চৌকি দখল করে টিটিপির জঙ্গিরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয় সেই ভিডিও-ও। চাপে পড়ে পাক সরকার জানায়, চৌকিগুলি খালি ছিল।
২০২১ সালে দ্বিতীয়বারের জন্য আফগানিস্তানের ক্ষমতায় বসে তালিবান। সেই সময় উল্লাস করেছিল পাকিস্তান। তবে ইসলামাবাদের সেই আনন্দ অবশ্য বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। কারণ ‘ডুরান্ড লাইন’কে কোনওদিনই মান্যতা দেয়নি তালিবান। তারাই নিয়মিত অক্সিজেন জুগিয়ে গিয়েছে টিটিপিকে (TTP Terrorists)। সেই টিটিপিই কালি লেপে দিল পাক সরকারের মুখে (Pakistani Nuclear Scientists Abducted)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।