Saudi-Arabia: ৪৩০০ জন পাকিস্তানি ভিক্ষুকদের বিতাড়িত করার ঘোষণা সৌদি প্রশাসনের…
সৌদিতে পাকিস্তানি ভিক্ষুক। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভিক্ষাবৃত্তি রোধ করতে সৌদি আরব (Saudi-Arabia) এবার পাকিস্তানি তীর্থযাত্রীদের (Pakistani Pilgrims) কাছ থেকে মুচলেকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বহিরাগত ভিখারিদের বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতির অংশ হিসেবে ইসিএল তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যার মধ্যে ভিখারিদের মোট সংখ্যা রয়েছে ৪৩০০। সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বিতাড়িত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। একই ভাবে ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পাকিস্তান প্রশাসন। ইতিমধ্যে অবৈধভাবে ভিসা দেওয়ায় ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে ধরপাকড়ের মতো পদক্ষেপও দেখা গিয়েছে। মুসলমান রাষ্ট্রে এক নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে পাকিস্তান। নিন্দার ঝড় বিশ্বজুড়ে।
সৌদি আরবের (Saudi-Arabia) ইসলামিক ধর্মীয় তীর্থস্থানে পাকিস্তানি (Pakistani Pilgrims) ভিখারিদের বিরাট রমরমা! সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে উমরাহ্ তীর্থযাত্রীদের ছদ্মবেশে পবিত্র ধর্মীয় স্থানে এই ভিখারিদের বিরাট আধিপত্য বৃদ্ধি পেয়ছে। স্থানীয় জনবিন্যাস এবং ভিক্ষাবৃত্তির বাণিজ্যিকরণ রুখতে প্রশাসন এবার বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও পাক প্রশাসন উমরাহ্ আইন আনার কথা জানিয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে সৌদি সরকার (Saudi-Arabia) রিয়াদ উমরাহ্ এবং হজ ভিসার অধীনযুক্ত অঞ্চলে বিরাট পরিমাণে পাকিস্তানি ভিখারিদের (Pakistani Pilgrims সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তথ্য সমানে এসেছে। সেই সময়ের বন্যায় এই ভিখারিরা ব্যাপক ভাবে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। তাই এই ভিখারিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক তা জানিয়ে নোটিশ জারি করেছিল সৌদি প্রশাসন। একই ভাবে বলা হয়, এই ধরনের ভিখারিদের ভিক্ষার উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখে ভিসা প্রদানকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সৌদির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “পাকিস্তানি ভিখারিদের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। ৪৩০০ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। অবিলম্বে তাঁদের ফেরত পাঠানো হবে।”
আরও পড়ুনঃ নিজ্জর খুনের ঘটনা জানতেন না মোদি-জয়শঙ্কর-ডোভাল, দিল্লির চাপে ‘ঢোঁক গিলল’ ট্রুডো সরকার
একই ভাবে সমস্যার কথা মাথায় রেখে, বেশ কিছু নিয়ম জারি করেছে সৌদি প্রশাসন। তাতে বলা হয়েছে—
এক) সৌদি আরবে আগত হজযাত্রীদের ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ না করার বিশেষ প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুচলেকা দিতে হবে। আর যদি অন্যথা করেন তাহলে তীর্থযাত্রীদের (Pakistani Pilgrims) বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জরিমানা সহ পাকিস্তানে বিতাড়িত করা হবে।
দুই) তীর্থযাত্রীদের শুধুমাত্র ভ্রমণের জন্য গ্রুপ করে বা দলবদ্ধভাবে ভ্রমণ করতে হবে। দল ছুট হলে ভিক্ষা বৃত্তির সম্ভাবনা বেড়ে যায়, তাই সকল দর্শনার্থীদের একসঙ্গে দলগত ভাবে ভ্রমণ করতে হবে। এই শর্ত অনিবার্য। আর যদি এই ভাবে ভ্রমণ না করে তাহালে তীর্থযাত্রীদের ভিসা বাতিল করা হবে। দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
তিন) একই ভাবে যে সব ট্যুরিষ্টরা ট্র্যাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ভ্রমণ করতে যাবে, তাদের কাছ থেকেও মুচলেকা নেওয়া হবে। শর্ত না মানলে ট্র্যাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কোনও ভাবেই অসৎ উদ্দেশে ধর্মস্থলে ভিক্ষা করা যাবে না।
জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের (Pakistani Pilgrims) ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) ইতিমধ্যে অবৈধভাবে উমরাহ্ ভিসাকে সহজ করতে গিয়ে নানা বেআইনি কাজ করেছে। ইতিমধ্যে সন্দেহভাজন কয়েকটি সংস্থার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কাজ শুরু করেছে পাক প্রশাসন। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পাকিস্তানে চারটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা নানা সময়ে অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকত। ফলে বিশ্বের কাছে পাকিস্তান আরও অসম্মানজনক অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
প্রতিবছর হজের সময় ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের মতো দেশগুলি থেকে বহু তীর্থযাত্রী হজে যায়। তাদের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে এইসব ভিখারিরা। সৌদিতে নেমে হারিয়ে যায় মানুষের ভিড়ে। তারপর তারা ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করে দেয়। ফেরার সময় মোটা টাকা ঘরে নিয়ে আসে। এতে সমস্যায় পড়ে সৌদি প্রশাসন। উল্লেখ্য সৌদির বক্তব্যের পরিপ্রক্ষিতে পাকিস্তানের তরফে বলা হয়েছে, ভিখারিদের সমস্যা মেটাতে একটি উমরাহ আইন নামে একটি আইন আনা হবে দেশে। এতে যেসব উমরাহ এজেন্সিগুলি মানুষজনকে হজে নিয়ে যায় তাদের উপরে নজর রাখা হবে ও তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।