Bangladesh: অডিও বার্তায় চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন শেখ হাসিনা.. কী বললেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী?
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং তার পরবর্তী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে আওয়ামি লিগের সরকারের পতন হয় গত বছরের অগাস্টে। গত ৫ অগাস্ট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। চলে আসেন ভারতে। সাময়িক আশ্রয় নেন এ দেশে। সেদিনের ঘটনা নিয়ে আওয়ামি লিগের সমর্থকদের উদ্দেশে এক অডিও বার্তায় কেঁদে ফেললেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)।
হাসিনা (Sheikh Hasina) বলেন, ‘‘আমাকে হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছিল। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছি।” শুক্রবার রাতে আওয়ামি লিগের ভেরিফায়েড সমাজমাধ্যম হ্যান্ডল থেকে হাসিনার একটি ছোট অডিও ক্লিপ পোস্ট করা হয়। ৪৯ সেকেন্ডের ওই অডিও ক্লিপে ৫ অগাস্ট দেশ ছাড়ার সময়ের কথা বর্ণনা করছিলেন তিনি। সেখানে হাসিনা জানান, ২০-২৫ মিনিটের ব্যবধানে তিনি এবং তাঁর বোন শেখ রেহানা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মাত্র ২০-২৫ মিনিটের ব্যবধানে আমরা (হাসিনা এবং রেহানা) মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি।” সেখানে হাসিনা আরও জানিয়েছেন, এ বারে তাঁর 'বেঁচে যাওয়ার' কথা ছিল না এবং তাঁকে 'হত্যার পরিকল্পনা' করা হয়েছিল। এর পরেই দেশছাড়া হওয়ার দুঃখের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন হাসিনা। তিনি বলেন, ‘‘আমার কষ্ট হচ্ছে, আমি আমার দেশছাড়া, ঘরছাড়া। সব কিছু জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিয়েছে।”
এ দিকে আওয়ামি লিগের সরকারের (Sheikh Hasina) পতনের পর দেশজুড়ে হিন্দুদের ওপর লাগামছাড়া অত্যাচার চলছে। ভারত দখলের হুঁশিয়ারি দিচ্ছে মৌলবাদীরা। একইসঙ্গে আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের ওপর নৃশংস অত্যাচার করা হয়েছে। দেশে হাসিনা-সহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এই অবস্থায় হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে বিচার সম্পন্ন করতে চাইছে অন্তর্বর্তী সরকার। হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য নয়াদিল্লিতে কূটনৈতিক বার্তা (নোট ভার্বাল)-ও পাঠিয়েছে ঢাকা। কূটনৈতিক বার্তার প্রাপ্তিস্বীকার করলেও, হাসিনাকে প্রত্যর্পণের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত এখনও দিল্লির তরফে জানানো হয়নি।
হাসিনা (Sheikh Hasina) বাংলাদেশ ছাড়ার আগের কয়েক ঘণ্টা কেমন ছিল গণভবনের (বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন) পরিস্থিতি, তা নিয়ে গত বছরের অগাস্টে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল সে দেশের সংবাদমাধ্যম 'প্রথম আলো'। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, হাসিনা চেয়েছিলেন দেশ ছাড়ার আগে জাতির উদ্দেশে একটি ভাষণ সম্প্রচার করতে। কিন্তু, ততক্ষণে আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশ 'গণভবন'-এর দিকে এগোতে শুরু করে দিয়েছিলেন। শাহবাগ, উত্তরা থেকে কাতারে কাতারে ছাত্র-যুব আন্দোলনকারীর ভিড় এগিয়ে আসছিল। গোয়েন্দা সূত্রে সে খবর যায় গণভবনে থাকা বাহিনীর শীর্ষকর্তাদের কাছে। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, উন্মত্ত জনতার দূরত্ব যা ছিল, তাতে আনুমানিক ৪৫ মিনিটের মধ্যেই ওই ভিড় গণভবনে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তাই সম্প্রচার করার জন্য হাসিনার ভাষণ রেকর্ডের আর ঝুঁকি নিতে চাননি বাহিনীর শীর্ষকর্তারা। তাঁদের সংশয় ছিল, হাসিনাকে ভাষণ রেকর্ড করার সময় দেওয়া হলে, পালানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় তিনি পেতেন না। তাই ৪৫ মিনিটের মধ্যেই হাসিনাকে দেশ ছাড়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল বলে 'প্রথম আলো'-য় প্রকাশ। হাসিনা রাজি হওয়ার পর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তাঁদের প্রথমে হেলিকপ্টার ও পরে বিমানে করে ভারতে পাঠানো হয়।
এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশ (Bangladesh) সকারের তরফ থেকে জানানো হয়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। আর এরই মাঝে রিপোর্টে দাবি করা হয়, সম্প্রতি নাকি ভারতে থাকার জন্যে শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে ভারত সরকার। জানা গিয়েছে, শেখ হাসিনার রেসিডেন্ট পারমিটের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এরই মাঝে হাসিনাকে সরকারি ভাবে ভারতে 'রাজনৈতিক আশ্রয়' দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। কারণ, এই সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট আইন নেই ভারতে। তবে, হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করে বৈধভাবে তাঁকে ভারতে থাকতে দিতে সম্মত মোদি সরকার। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নাকি ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধিতে সবুজ সংকেত দেয়। এরপরই স্থানীয় ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসের মাধ্যমে হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।