img

Follow us on

Friday, Nov 22, 2024

POJK: ভারতভুক্তির দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে, নেপথ্যে কোন কারণ?

Pakistan: ভারতভুক্তির দাবিতে সরব পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দারা, কেন জানেন?...

img

আন্দোলন দমাতে পাক সেনার গুলি। ফাইল ছবি।

  2024-05-23 08:11:40

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অশান্ত পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর। পাক সেনার অত্যাচারে জেরবার এই এলাকার বাসিন্দারা চান মুক্তি। তবে স্বতন্ত্র কোনও দেশ কিংবা স্বায়ত্ত্ব শাসন তাঁরা চান না। তাঁরা চান এই অঞ্চলকে জুড়ে দেওয়া হোক ভারতের সঙ্গে। ভারতভুক্তিই এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রধান দাবি। যে দাবিতে পাক অধিকৃত এই অঞ্চলে জ্বলছে অশান্তির আগুন। যে আগুন নেভানোর ছলে আন্দোলনকারীদের দমন করতে কোমর কষে নেমে পড়েছে পাক সেনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখ খুলে দিয়েছে মোদি সরকারের জমানায় জম্মু-কাশ্মীরের চোখ ধাঁধানো উন্নয়ন। ভারতের অংশে যেখানে বয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের জোয়ার, সেখানে পাক অধিকৃত অংশের সর্বাঙ্গে স্পষ্ট অনুন্নয়নের ছাপ।

ভারতভুক্তির দাবি (POJK)

প্রত্যাশিতভাবেই তাঁরা দাবি তুলেছেন আজাদির, আরও স্পষ্ট করে বললে ভারতভুক্তির। ২০১৯ সালের ১৪ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীরে রদ হয় ৩৭০ ধারা। তার পর থেকে ভূস্বর্গে আক্ষরিক অর্থেই নেমে এসেছে কাঙ্খিত শান্তি। বুক ভরে তাজা শ্বাস নিচ্ছেন কাশ্মীরের মানুষ। এর ঠিক উল্টো ছবি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। তাই ২০২৩ সাল থেকে ভারতভুক্তির দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন চলছে পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন পকেটে। এহেন পরিস্থিতিতে হাত গুটিয়ে বসে নেই পাক সেনা। আন্দোলনকারীদের ডাণ্ডা মেরে ঠান্ডা করতে মাঠে নেমে পড়েছে তারা। তাদের মারে জখম হয়েছেন গিলগিট-বাল্টিস্তানের পর্যটনমন্ত্রীও। তার পরেও ভারতভুক্তির দাবি থেকে একচুলও সরেননি এই এলাকার মানুষ। ভারতের জাতীয় পতাকা ওড়ানোর পাশাপাশি ‘পাকিস্তানি সেনা মুর্দাবাদ’ স্লোগানও দিয়েছেন তাঁরা। আন্দোলন দমন করতে গুলিও ছুড়েছে পাক সেনা। বেশ কয়েকজন জখম হওয়ার পাশাপাশি নিহত হয়েছেন জাকির হুসেন, গাজি আনওয়ার এবং আশিক মির।

আর পড়ুন: নদিয়ায় হরিনাম বন্ধে ফতোয়া বাংলাদেশের! বিএসএফের উদ্যোগে হচ্ছে নাম সংকীর্তন

ধ্বংস করছে পাকিস্তান

সেই ১৯৯০ সাল থেকে পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দারা মনে করেন তাঁরা জম্মু-কাশ্মীরের নাগরিক, পাকিস্তান তাঁদের শোষণ করছে। তাই জীবন বাজি রেখেই তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন চিনা-পাকিস্তানিদের শোষণ থেকে নিজেদের মুক্ত করতে (POJK)। এর খেসারতও দিয়ে হয়েছে তাঁদের কাউকে কাউকে। নওয়াজ নাজি, বাবা জান, আবদুল হামিদ খান এবং আরও অনেককে জেলে পচিয়ে মারছে পাক সরকার। এঁদের দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তার পরেও পুরোপুরি নেভানো যায়নি স্থানীয়দের বুকে জমে থাকা ক্ষোভের আগুন। পাক রাজনীতির টালমাটাল দশা আর তার সঙ্গে দেশের অর্থনীতির হাঁড়ির হালের কারণেই তাঁরা আরও বেশি করে ঝুঁকছেন ভারতের দিকে। তাই জোরালো হচ্ছে ভারতভুক্তি দাবি।

দখলদারির রাজত্ব

১৯৪৭ সালে রাজন্য-শাসিত রাজ্যগুলিকে হয় পাকিস্তান নয় ভারতের সঙ্গে যোগ দিতে বলা হয়। তখন কাশ্মীরের মহারাজা হরি সিং জম্মু-কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে জুড়ে দেন। এরই একটা অংশ আগেই দখল করে নিয়েছিল পাকিস্তান, উপজাতির ছদ্মবেশে। সেই অংশই পাক অধিকৃত কাশ্মীর।

আরএসএসের ভূমিকা

হরি সিং যখন ভারত না পাকিস্তান কোন দিকে যাবেন তা নিয়ে দোটানায়, তখনই আরএসএসের তৎকালীন সরসঙ্ঘচালক গুরুজি সাক্ষাৎ করেন কাশ্মীরের মহারাজের সঙ্গে। এর পরেই ভারতের সঙ্গে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন হরি সিং। সে খবর (POJK) পেয়েই কাশ্মীরে উড়ে যান ভিপি মেনন। ১৯৪৭ সালের ২৬ অক্টোবর জম্মু-কাশ্মীরের ভারতভুক্তিতে স্বাক্ষর করেন মহারাজা। এর ঠিক দু’মাসের মাথায়ই মঙ্গলা, আলিবেগ, মিরপুর, ভীমবের, দেবা এবং বাটালা অঞ্চল, রাজৌরি ও নৌসেরা, ঝাঁগার এবং কোটলির পুরো অঞ্চলটা দখল করে নেয় পাকিস্তান। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় ভারতের এই অংশগুলোও। গিলগিট-বাল্টিস্তানের রাশও হরি সিং ভারতের হাতে তুলে দেন। যদিও সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্বে তখনও ছিলেন গিলগিট স্কাউটরা। এঁদের নেতৃত্বে ছিলেন মেজর ডব্লিউ ব্রাউন। তিনি মুসলমান কিছু অফিসার ও জম্মু-কাশ্মীরের সৈন্যদের নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত করেন। এর পরেই তাঁরা পৌঁছে যান গিলগিটে, আশ্রয় নেন রাজ্যপাল ঘনসারা সিংয়ের বাসভবনে। পরে তাঁকে বাধ্য করেন সারেন্ডার করতে। সৈন্যদের মধ্যে যাঁরা শিখ এবং হিন্দু ছিলেন, তাঁদের হত্যা করা হয়। রাষ্ট্রসংঘের নির্দেশে যুদ্ধ বিরতি হয় ১৯৪৮ সালে। ততক্ষণে গিলগিট-বাল্টিস্তানের রাশ জোর করে দখল করে নিয়েছে পাকিস্তান (POJK)।

জনসংখ্যার বদল

বস্তুত তার পর থেকেই ধীরে ধীরে শুরু হয়েছে দমন পীড়ন। পাক প্রশাসনের মূল লক্ষ্যই হল, এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ধ্বংস করা, লুটে নেওয়া মাটির নীচে সঞ্চিত প্রাকৃতিক সম্পদ। এলাকার জনসংখ্যার হার বদল করতে পাঞ্জাব এবং নর্থ-ওয়েস্ট ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স থেকে সুন্নি মুসলমানদের এনে এখানে বসতি স্থাপন করতে দেওয়া হয়। পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের বাসিন্দারা কলোনি জীবন যাপন করেন। পণ্ডিতরা যাকে ‘বিশ্বের শেষ কলোনি’ আখ্যা দিয়েছেন। মিরপুর মুজফ্ফরাবাদ কিংবা গিলগিট-বাল্টিস্তানের লোকজনের প্রতিবাদের অধিকারেও লাগাম পরানো হয়েছে। তাই এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের মুখ বুঝে সহ্য করতে হয় অপহরণ, খুন-জখম-রাহাজানি। পাক সেনা জোর করে জমি দখল করে নিলেও টুঁ শব্দটি করার জো নেই এই এলাকার বাসিন্দাদের। পাক শাসকরা কৌশলে ধ্বংস করছে এই এলাকার ভাষা, লিপি, জঙ্গল, উৎসব। বাসিন্দাদের তাঁদের মূল থেকেও উপড়ে ফেলার নিরন্তর চেষ্টা করে চলেছে পাক সেনা। অথচ এই এলাকাটি যেন পাকিস্তানের সোনার ডিম দেওয়া সেই হাঁস। বিদেশ থেকে যাঁরা পাকিস্তানে বেড়াতে আসেন, তাঁদের প্রায় ৭০ শতাংশই আসেন গিলগিট-বাল্টিস্তানে। তাই রোজগার হয় কাঁড়ি কাঁড়ি বিদেশি মুদ্রা। মিরপুর-মুজফফরাবাদ অঞ্চলে মাটির নীচে রয়েছে দামী ধাতু-পাথর। আর গিলগিট-বাল্টিস্তানের পেটে লুকানো রয়েছে ১ হাজার ৪৮০টি সোনার খনি। এসব থেকে রোজগার হলেও, এলাকায় উন্নয়ন থেকে যায় অধরা।

অবহেলায় শারদা পীঠ

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে ১৭ মাইল দূরে রয়েছে শারদা পীঠ। জ্ঞানের দেবী শারদার মন্দির রয়েছে এখানেই। সনাতনীদের কাছে এক সময় যে জায়গা ছিল তীর্থক্ষেত্র, যে মন্দিরে নিত্য বাজত ঘণ্টা, নৈসর্গিক পরিবেশে অবস্থিত মন্দিরের ধূপ-দীপের গন্ধে যেখানে তৈরি হত স্বর্গীয় পরিবেশ, সেখানে আজ শুধুই শ্মশানের স্তব্ধতা। দাঁড়িয়ে রয়েছে ভগ্নপ্রায় এক মন্দিরের কাঠামো। বিগ্রহ? কে জানে কোথায়!

ভারত বরাবর দাবি করে আসছে অখণ্ড জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অংশ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও বহুবার বলেছেন এই অঞ্চলের দখল পেতে আমরা জীবন বলি দিতেও প্রস্তুত (POJK)।

ফিরিয়ে দাও, ফিরিয়ে দাও আমাদের ভূস্বর্গ...পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাতাসে ভাসছে এমনই আর্তি।   

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

 

Tags:

Madhyom

pakistan

India

PM Modi

bangla news

Bengali news

RSS

news in bengali

bharat

POJK

guruji

vp menon

sharda peeth mandir


আরও খবর


খবরের মুভি


ছবিতে খবর