রাশিয়ার ৮২টি মিসাইল সহ ড্রোনে হামলা কিভের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে…
কিভে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিস্ফোরণের পর চিত্র। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেনের সব থেকে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন (Power Plant) কেন্দ্র গুঁড়িয়ে দিল রাশিয়া। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন সূত্রে জানা গিয়েছে, ড্রোন (Drone) ও ৮২টি মিসাইল সহযোগে ধ্বংস করা হয়েছে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে হাইপারসনিক (Hypersonic) মিসাইলও। পাল্টা ইউক্রেনের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই হামলার ফলে রাজধানী কিভে (kyiv) এখনও বিদ্যুৎ ঘাটতি হয়নি।
সিএনএন সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইউক্রেনের কিভের খুব কাছে ট্রিপিলস্কায় অবস্থিত এই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গিয়েছে সাম্প্রতিক হামলায়। সামাজিক মাধ্যমে এই হামলা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সোভিয়েত যুগের ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র দাউ দাউ করে জ্বলছে। কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে শহরের আকাশে।
এই ঘটনার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জ়েলেনস্কি প্রতিবেশী রাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে তাঁদের জরুরি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম না দেওয়াকে দায়ী করেছেন। তিনি এই হামলাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে আখ্যা দিয়েছেন। প্রসঙ্গত পশ্চিমী দেশগুলোর কাছে ইউক্রেন জরুরি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহের আবেদন করেছিল। ইতিমধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেনের তাপ ও জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ জ্বালানির ঠিকানাগুলিকে নিশানা করা শুরু করেছে। হামলা ব্যাপক তীব্র হয়েছে। ইউক্রেনের শক্তি ব্যবস্থা ধ্বংস দিতে চাইছে রাশিয়া এমনটাই অভিযোগ জানিয়েছেন জ়েলেনস্কি । রাশিয়ার যে হামলা চালিয়েছিল তার মধ্যে ১৮ টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৩৯ ড্রোনকে আটকানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বাদ বাকি মিসাইল ও হাইপারসনিক মিসাইল সফলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হানে দাবি ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর এক আধিকারিকের। তাঁদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত কিভ, চেরকাসি ও ঝাইটেমির অঞ্চলের জন্য এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছিল খুবই জরুরী।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা করতো সেন্টারেনারগর নামে একটি সংস্থা। ওই সংস্থার তত্ত্বাবধায়ক বোর্ডের প্রধান এন্দ্রে গোটা বলেন, “সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আর বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব নয়। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংসের ফলে আশপাশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলের সাবস্টেশন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে সমস্যা দেখা দেবে। প্রসঙ্গত ইউক্রেনের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির ডিটেক সাম্প্রতিক হামলায় যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। দুটি পাওয়ার স্টেশন রাশিয়ান আক্রমণের জেরে মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।”
আরও পড়ুনঃ পাক-মাটিতে খতম হয়েছে ২০জনেরও বেশি জঙ্গি নেতা, নেপথ্যে কারা?
প্রথমদিকে আমেরিকা ইউক্রেনকে যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে সাহায্য করলেও পরবর্তীকালে ইউক্রেনের দাবি মতো যুদ্ধাস্ত্র আর দেয়নি আমেরিকা এমনটাই অভিযোগ জ়েলেনস্কি। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও জার্মানি যে যুদ্ধাস্ত্র দিচ্ছে তাও দীর্ঘদিন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট নয় বলেই দাবি প্রশাসনের। একদিকে যুদ্ধাস্ত্রের অভাব অন্যদিকে রাশিয়ার আক্রমণে ব্যাপক বৃদ্ধি। সবমিলিয়ে বেশ বেকায়দায় পড়েছে ইউক্রেন। আরব দুনিয়ায় হামাসের সঙ্গে ইজরায়েলের যুদ্ধ বিরতির দিকে এগোলেও দুই বছর পার হলেও রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ এখনও থামার কোনো লক্ষণ নেই। প্রথমদিকে রাশিয়াকে অনেকটা প্রতিহত করতে সক্ষম হলেও এখন দেশের একটা বড় অংশ হাতছাড়া হয়ে গেছে ইউক্রেনের। তাঁরা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অপারগ হলেও রাশিয়া যুদ্ধ থামানোর কোন ইঙ্গিত দিচ্ছে না। প্রথম দিকের বেগতিক অবস্থা কাটিয়ে এখন যুদ্ধের ময়দানে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে পুতিনের বাহিনী।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।