Switzerland: যন্ত্রণাবিহীন মৃত্যুর যন্ত্রে অনুমোদিন সুইস সরকারের
স্বেচ্ছামৃত্যুর যন্ত্র 'সারকো-পড' (সংগৃহীত চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরামদায়ক মৃত্যুর খোঁজ মিলেছে সুইজারল্যান্ডে (Switzerland) । নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্য সুইসাইড পড’। গোলাকার কফিন আকৃতির পোর্টেবল যন্ত্রটি সাহায্য করবে কষ্টবিহীন স্বেচ্ছামৃত্যুতে। ২০১৯ সালে যন্ত্রটির প্রথম প্রোটোটাইট তৈরি করে ‘এক্সিট ইন্টারন্যাশনাল’ নামে একটি সংস্থা। মূলত দুরারোগ্য ব্যাধিতে যারা ভুগছেন তাঁদের স্বেচ্ছামৃত্যুর বন্দোবস্ত করার উদ্দেশ্যেই এই মৃত্যু যন্ত্র আবিষ্কার করা হয়। ২০২১ সালে আইনি ছাড়পত্র পেয়েছে স্বেচ্ছামৃত্যুর যন্ত্র ‘সারকো-পড’ (Sarco Pod) ।
দাবি করা হয়েছে, কফিন আকৃতির এই মেশিনে শুয়ে একটি বোতাম টিপলেই মাত্রই ধীরে ধীরে যন্ত্রণা বিহীন ভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে স্বেচ্ছামৃত্যু চাওয়া ব্যক্তি। বোতামে চাপ দিলেই সারকো পডে (Sarco Pod) ভরে যাবে লিকুইড নাইট্রোজেন। দ্রুত নামবে অক্সিজেনের মাত্রা। কয়েক মুহূর্তের অস্বস্তির পরেই জ্ঞান হারাবেন ঐ ব্যাক্তি। মিনিট দশকের মধ্যে হাইপক্সিয়া এবং হাইপোক্যাপনিয়ায় মারা যাবেন ওই ব্যক্তি। প্রাথমিকভাবে ‘সারকো-পড’ ব্যবহারের ন্যূনতম বয়সসীমা ৫০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। কবে এবং কাকে প্রথমে এই যন্ত্র ব্যবহার করতে দেওয়া হবে তা জানানো হয়নি।
Developed by the pro-euthanasia Exit International, Sarco’s mission is to cut the middleman—no doctors, no assistance organisations, just a straightforward, autonomous option for those seeking a voluntary death. https://t.co/qD5uycoPqu
— Sarco Project (@SarcoProject) July 21, 2024
Death on-the-go https://t.co/6TksSkCcWI pic.twitter.com/mmDlCzHvkr
মৃত্যু যে একেবারে যন্ত্রণাদায়ক হবেনা এমনটা অবশ্য দাবি করছে না। কয়েক সেকেন্ড পর অস্বস্তির পর জ্ঞান হারাবেন (Sarco Pod) স্বেচ্ছামৃত্যু চাওয়া ব্যক্তি জ্ঞান হারানোর পর অবশ্য যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে না। ‘সারকো-পডের’ মধ্যে ঢুকে নিজের মৃত্যু নিশ্চিত করতে গেলে তিনটি ধাপ পের হতে হবে। প্রথমে স্বেচ্ছামৃত্যুতে আগ্রহী ব্যক্তিকে তাঁর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ দেওয়া হবে। ওই ব্যক্তি সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এর পর স্বেচ্ছামৃত্যুর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।
সুইজারল্যান্ড (Switzerland) সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সে দেশে স্বেচ্ছামৃত্যু ১৯৪২ থেকে বৈধ ভাবে শুরু হয়। বছরে মোটামুটি ১৩০০ জন স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করে থাকেন। স্বেচ্ছামৃত্যু জনপ্রিয় হলে সেই ট্রেন্ড আরও বাড়বে। অনেক দেশেই স্বেচ্ছামৃত্যু অবৈধ। অনেকেই সুইজারল্যান্ডে গিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু বিতর্ক ‘সারকো-পড’ (Sarco Pod) নিয়েও কম নয়। কারণ এই মেশিন এক ধরনের গ্যাস চেম্বার। নাজি বাহিনী যেভাবে গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে মারত, এই নয়া যন্ত্র গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে নিজেকে মেরে ফেলার সমান। ‘সারকো-পড’ ব্যবহার করা নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে সরব হয়েছে বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। তাঁদের বক্তব্য, এই যন্ত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই গ্যাস চেম্বারের স্মৃতি ফিরিয়ে আনবে। মেশিনের বোতাম কার কন্ট্রোলে থাকবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
এই মেশিনের আবিষ্কারক ফিলিপ নিৎস্কে। তাঁকে ‘ডক্টর ডেথ’ বলে ডাকা হয়। মৃত্যুকে অকারণে গ্ল্যামার দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। (Sarco Pod) যন্ত্রটির আবিষ্কারক পিলিপ বলছেন মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ২১ শতাংশ থেকে ০.৫ শতাংশে নেমে আসবে অক্সিজেনের মাত্রা। খুব সহজেই অবচেতন অবস্থায় স্বেচ্ছামৃত্যু পাবেন আবেদনকারী ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বাড়ল হিন্দু জনসংখ্যা, জানেন কত?
যন্ত্রণা একেবারে যাতে কম হয় তা নিশ্চিত করবে এই যন্ত্র। এই যন্ত্রের মাধ্যমে জীবনের ইতি টানতে গেলে খরচ করতে হবে ২০ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় ২ হাজার টাকার একটু কম। এই যন্ত্র তৈরি করতে সময় লেগেছে ১২ বছর। খরচ হয়েছে ৭.১০ লক্ষ ডলার। প্রয়োজনে এই যন্ত্র বাড়িতে নিয়ে গিয়েও স্বেচ্ছামৃত্যু ঘটানো যেতে পারে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।