রবিবার থেকে নিঁখোজ ছিল ডুবোজাহাজ টাইটান....
ওশেনগেটের টাইটান সাবমেরিন
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আটলান্টিক মহাসমুদ্রে তলিয়ে গেল খুদে সাবমেরিন টাইটান (Titan Submarine)। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের ১৬০০ ফুট দূরে মেলে টাইটান ডুবোজাহাজের ধ্বংসাবশেষ। প্রসঙ্গত, ১১১ বছর আগে হিমশৈলে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায় এই মস্ত জাহাজ। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কানাডার নিউ ফাউন্ড ল্যান্ড এর কোস্টাল লাইন থেকে প্রায় চারশো মাইল দূরের সমুদ্রের নিচে রয়েছে টাইটানিক! মহাসমুদ্রের প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার গভীর জলের নিচে! সেই টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়েই ঝরে গেল ৫টি প্রাণ।
টাইটানের (Titan Submarine) পাঁচ যাত্রীর মধ্যে ওশানগেটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশ(৬১) ছিলেন। তাছাড়া ছিলেন ব্রিটিশ বিমানসংস্থা অ্যাকশন এভিয়েশনের চেয়ারম্যান হামিশ হার্ডিং(৫৮), পাকিস্তানের শিল্পপতি শাহজাদা দাউদ(৪৮) ও তার ছেলে সুলেইমান দাউদ(১৯) এবং ফরাসি পর্যটক পল অঁরি নারজিলে(৭৭)। জানা গিয়েছে, ৭৭ বছরের পল অঁরি নারজিওলেট এই অভিযানের নেতৃত্বের দায়িত্ব ছিলেন। তবে, ফরাসি নৌবাহিনীর প্রাক্তন ডুবুরি পল অঁরি নারজোলের আরও একটি পরিচয় রয়েছে। অনেকেই তাকে ‘মিস্টার টাইটানিক’ বলে ডাকেন। টাইটানিক ডুবে যাওয়ার ৭৫ বছর পর ১৯৮৭ সালে প্রথমবার এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ চালানো হয়। সেই অভিযানেরও সদস্য ছিলেন এই ফরাসি ডুবুরি।
প্রসঙ্গত, অভিশপ্ত টাইটানিক জাহাজের ধ্বংশাবশেষ চাক্ষুস করাতে ওশেনগেট নামে একটি মার্কিন বেসরকারি সংস্থা ট্যুর করায়। খুদে সাবমেরিনে টাইটানে চাপিয়ে পর্যটকদের দেখানো হয় সমাধিস্থ টাইটানিক। খরচও নেহাত কম নয়, এই ট্যুরে গুনতে হয় কোটি টাকারও বেশি ভারতীয় মুদ্রা। সেরকমই একটি ট্যুরে সাবমেরিনে চেপে রওনা হয়েছিলেন পাঁচ যাত্রী। জানা গিয়েছে, গত রবিবার কানাডার নিউ সাউথহ্যাম্পটনের সেন্ট জন্স থেকে আটলান্টিকে যাত্রা শুরু করে ওশেনগেটের ডুবোজাহাজ 'টাইটান'। কিন্তু যাত্রা শুরুর পৌনে দু'ঘণ্টার মধ্যেই দিক নির্দেশকারী জাহাজ বা মাদার শিপ 'পোলার প্রিন্স'-র সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় 'টাইটান'-এর।
অনুমান করা হচ্ছে, সাবমেরিনের বাইরের অংশে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে জলের চাপ বেড়ে যায়। তার ফলেই বিস্ফোরণ ঘটে সাবমেরিনে। মিলি সেকেন্ডের মধ্যে সাবমেরিনটি প্রচণ্ড জলের চাপে একেবারে দুমড়ে মুচড়ে যায়। আর ওই বন্ধ সাবমেরিনের মধ্যে প্রাণ হারান পাঁচ যাত্রী। তবে ইতিমধ্যে সাবমেরিনে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে! ২০১৮ সালে ওশানগেট সংস্থা থেকে বিতাড়িত হন মেরিন অপারেশনের প্রাক্তন ডিরেক্টর ডেভিড লচরিজ। তিনি সম্প্রতি এই টাইটান সাবমেরিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, সাবমেরিনের বাইরের অংশ কার্বন ফাইবার সঠিকভাবে পরীক্ষিত নয়। আর বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, বাইরের অংশের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই ধ্বংস হয়েছে খুদে টাইটান।
আরও পড়ুন: ‘‘এই সম্মান ১৪০ কোটি ভারতবাসীর’’, মার্কিন কংগ্রেসে বললেন মোদি
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।