Donald Trump: ভারতের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন গীতা! আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ পদে বসতে চলা কে এই তুলসি গ্যাবার্ড?
তুলসীর মতে, হিন্দু ধর্ম শ্রেষ্ঠ ধর্ম। সংগৃহীত ছবি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু ধর্মকে ভালোবেসে তাঁর মা হিন্দু হয়েছিলেন। সন্তানদের নাম দিয়েছিলেন হিন্দুদের নামে। এহেন এক মার্কিন মহিলার এক সন্তান তুলসি গ্যাবার্ড (Tulsi Gabbard) বর্তমানে খবরের শিরোনামে। অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগেও তিনি এসেছিলেন খবরের হেডলাইনে। সেবার মার্কিন দেশে সফর করাকালীন (Donald Trump) ভারতের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন গীতা। তখনই প্রকাশ পেয়েছিল তুলসীর গীতা-প্রেম। তিনি বলেছিলেন, “হিন্দু ধর্ম শ্রেষ্ঠ ধর্ম, গীতা শ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ।”
এক সময় তুলসী ছিলেন ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। পরে যোগ দেন ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানে। সদ্য সমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি প্রচার করেছেন ট্রাম্পের হয়ে। তার জেরে জুটেছে পুরস্কারও। ট্রাম্প তাঁকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ পদে বসিয়ে দিয়েছেন। তুলসী প্রথম হিন্দু হিসেবে মার্কিন কংগ্রেসে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন। সারা জীবন নিরামিষ খেয়ে আসছেন। শপথগ্রহণ করেছিলেন পবিত্র হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভাগবত গীতায় হাত রেখে। হিন্দু ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তাঁর মা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তুলসীকেও বড় করেছিলেন সেই ধর্মের আদর্শেই। সেই কারণেই তুলসীও মনে-প্রাণে মায় ধর্মেও হিন্দু (Tulsi Gabbard)। হাওয়াইয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তুলসী। তিনি কেবল হাউজের প্রথম হিন্দু সদস্যই হননি, কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্বকারী প্রথম আমেরিকান সামোয়ানও হয়েছিলেন। তুলসি (Tulsi Gabbard) সেনাবাহিনীর এক অভিজ্ঞ সদস্য। দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। তিনি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আর্মি ন্যাশনাল গার্ডে কাজ করার সুবাদে ইরাক ও কুয়েতে মোতায়েন ছিলেন তুলসি। দু’বছর ধরে হাউস হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কমিটিতেও কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘‘‘ওপারে ইউনূস আর এপারে মমতা, দুই-ই এক’’, শ্যামপুরের সভা থেকে তোপ শুভেন্দুর
ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান-দুই দলেই তুলসীর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। সে কথা স্বীকারও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “ডেমেক্র্যাট প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে, একজন প্রাক্তন প্রার্থী হিসেবে তাঁর উভয় দলের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে–তিনি এখন গর্বিত রিপাবলিকান।” তুলসীর ভারত-প্রেম বেশ পুরানো। ২০১৪ সালে প্রথম হিন্দু-আমেরিকান কংগ্রেসওম্যান তুলসী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আন্তর্জাতিক যোগ দিবস প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে সমর্থনের অঙ্গীকার করেছিলেন। এক বিবৃতিতে তুলসী বলেছিলেন, “আমি প্রধানমন্ত্রী মোদির রাষ্ট্রসঙ্ঘে আহ্বানকে সমর্থন করার জন্য একটি প্রস্তাব পাশ করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। তুলসী এবং মোদি-দুজনেই একমত হন যে যোগব্যায়াম শুধুমাত্র শারীরিক অনুশীলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি জীবনধারা সচেতনতা এবং বিশ্বদৃষ্টি, যা স্বাস্থ্যের উন্নতি, শান্তির প্রচার এবং (Donald Trump) বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান প্রদান করতে পারে।” তিনি এও বলেছিলেন, “প্রাচীন বৈদিক গ্রন্থগুলিতে আধুনিক বিশ্বের জন্য যে বিশাল জ্ঞান রয়েছে, তা পশ্চিমি বিশ্বকে বিস্মিত করবে।” আন্তর্জাতিক যোগ দিবস প্রতিষ্ঠায় মোদির প্রস্তাবের পক্ষে জোরালো সওয়ালও করেছিলেন তুলসী।
কাশ্মীর নিয়েও তুলসী সুন্দর মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “কাশ্মীরের জটিল ইতিহাস বোঝা আমাদের মতো বাইরের লোকদের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।” তিনি বলেন, “অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে এবং এখনও ফিরে আসতে পারেনি। অঞ্চলটির নীতিগুলি ঐতিহাসিকভাবে অধিকার, বিশেষ করে নারীদের অধিকার সীমিত করেছিল।” তুলসীর মতে, সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলো নতুন আশা এবং উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে মানবাধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে। তিনি বলেন, “এই সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান ভারতের অভ্যন্তর থেকেই আসা উচিত। এটি একটি সার্বভৌম দেশের পরিস্থিতি... যা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের দ্বারা সমাধান করতে হবে, যাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ এখানে নির্ভর করছে।”
তুলসী (Tulsi Gabbard) বলেন, “আজ হিন্দু আমেরিকানদের প্রোফাইলিং এবং লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে... আগামীকাল কি মুসলিম বা ইহুদি আমেরিকানদের পালা আসবে?” তিনি বলেন, “এটি ধর্মীয় এবং জাতিগত প্রোফাইলিংয়ের ক্ষেত্রে একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। অতীতের নির্বাচনে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার ধর্মবিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে ভীতি সঞ্চারের চেষ্টা করেছে।” তিনি মনে করিয়ে দেন, তাঁর রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীরা হিন্দুধর্মকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে দাবি করেছিলেন। এই ধরনের বিভাজনমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে সতর্ক করে তুলসী বলেন, “ধর্মীয় বিদ্বেষ এবং হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মগুলোর প্রতি ভীতি সঞ্চারের প্রচেষ্টা এখনও রয়ে গেছে।”
বাংলাদেশে হিন্দু নিধনযজ্ঞ দেখে তুলসী বলেছিলেন, “এই ধরনের ঘৃণা ও হিংসা দেখে আমার হৃদয় ভেঙে গিয়েছে।” বাংলাদেশের সরকারকে হিন্দু, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ-সহ সকল ধর্মীয় সংখ্যালঘুকে ঘৃণার জিহাদি শক্তি থেকে সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। তুলসী বলেন, “এই ধরনের হিংসা বিশ্বাসের মৌলিক নীতিগুলির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। ঈশ্বর হলেন ভালোবাসা এবং তাঁর প্রকৃত সেবকরা সেই ভালোবাসা পৃথিবীতে (Donald Trump) ধারণ ও প্রকাশ করে (Tulsi Gabbard)।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।