স্পাই ইমাম প্রজেক্টে ট্রেনিং দিচ্ছে তুরস্ক, প্রশিক্ষণ শেষে কী করবেন এই ইমামরা জানেন?...
প্রতীকী ছবি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তাঁরা ইমাম। ইসলামের শান্তির ললিত বাণী জনমনে ছড়িয়ে দেওয়াই তাঁদের কাজ। এঁদের দিয়েই গোয়েন্দাগিরির কাজ করাতে চাইছে তুরস্ক। সেজন্য সরকারি খরচে দেওয়া হচ্ছে ট্রেনিং। এই প্রজেক্টের পোশাকি নাম ‘স্পাই ইমাম’ প্রজেক্ট (Spy Imam Project)। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পে প্রশিক্ষণ নিতে তুরস্কে ইমাম পাঠাচ্ছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। তুরস্কে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই ইমামরাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা হিন্দু এবং অহিন্দু ভারতীয়দের ছলে-বলে-কৌশলে ইসলামে দীক্ষিত করবেন। পাক গোয়েন্দা সংস্থার ধারণা, এতে এক ঢিলে দুই পাখি মরবে। এক, বিশ্বে দ্রুত বাড়বে ইসলামে দীক্ষিত মানুষের সংখ্যা। দুই, শত্রু দেশ ভারতকে উচিত শিক্ষা দেওয়া যাবে।
তুরস্কের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থার নাম মিল্লি ইস্তিবার্ত টেসকিলাতি। তারা (Spy Imam Project) ছাড়াও সে দেশের আরও কয়েকটি সংস্থা, যার মধ্যে সরকারের রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স ডিরেকটরেট ‘দিয়ানেট’ও রয়েছে, যৌথভাবে পরিচালনা করছে এই স্পাই ইমাম প্রজেক্ট। স্বদেশের তো বটেই, পাকিস্তানের মতো আরও কয়েকটি ইসালামি দেশের ইমামদেরও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তারা। ইসলামের প্রসারের পাশাপাশি এই ইমামরা যে দেশের মসজিদে নিয়োজিত হবেন, সেখানকার তথ্য সংগ্রহ করবেন। সেই তথ্যই গোপনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে নিজের দেশে। যার প্রেক্ষিতে যুদ্ধের অনেক আগে থেকেই অস্ত্রে শান দিতে পারবে ওই ইমামদের দেশ।
প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য যে ইমামদের বেছে নেওয়া হচ্ছে, তাঁদের হয় দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকতে হবে, নয়ত ভিন দেশের নাগরিক হতে হবে (Spy Imam Project)। তুরস্কেরই অরিজিন তাঁদের হতে হবে, এমনটা নয়। প্রশিক্ষণ নিতে হলে প্রার্থীর বয়স হতে হবে পঁচিশের নীচে। অবিবাহিত হওয়ার পাশাপাশি তুর্কি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যোগ্যতামানের চৌকাঠ পার হলেই প্রশিক্ষণ নিতে তাঁদের পাঠানো হবে তুরস্কের ধর্মীয় স্কুলগুলিতে। জানা গিয়েছে, স্পাই ইমাম প্রজেক্টে গত বছরই গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন ১ হাজার ৮১ জন। বিশ্বের ১৩টি দেশের ৪৬২ জন পড়ুয়া নাম নথিভুক্ত করেছেন প্রশিক্ষণ নেবেন বলে। পাশআউটদের মধ্যে সব চেয়ে ইমাম এসেছিলেন জার্মানি থেকে।
দিয়ানেটের প্রেসিডেন্ট এরবাস জানান, এই প্রোগ্রামে যাঁরা গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৫০০ জনকে দিয়ানেট নিয়োগপত্র দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজও করছেন তাঁরা। ইন্টারন্যাশনাল সেমিনারি প্রোগ্রামকে তিনি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বহুমুখী মানব সম্পদকে কাজে লাগানোর একটা পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানান, কেবল দিয়ানেটই নয়, অন্যান্য সরকারি সংস্থাও এঁদের নিয়োগ করছে। স্পাই ইমাম প্রজেক্টে (Spy Imam Project) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই ইমামদের সমুদ্রপারের বিভিন্ন দেশে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের দেওয়া হয়েছে ডিপ্লোমেটিক পাসপোর্টও। সেই ইমামরাই ইসলামের বাণী প্রেরণের পাশাপাশি সংগ্রহ করছেন তথ্যও।
এসব করতে গিয়ে বেঘোরে প্রাণও হারাতে হচ্ছে অনেক ইমামকে। এই যেমন পাকিস্তানের স্পাই ইমাম কলোনেল সুলতান আমির তারার। তাঁর কোড নেম কলোনেল ইমাম। স্পাই হিসেবে পাকিস্তানে তিনি চলে গিয়েছিলেন লেজেন্ডারি পর্যায়ে। ২০১১ সালে তাঁকে অপহরণ করা হয়। অভিযোগের আঙুল উঠেছিল পাকিস্তানি তালিবানের একটা অংশের দিকে। আর এক প্রাক্তন স্পাই খলিদ খাওয়াজাকে নৃশংসভাবে খুন করে অপহরণকারীরা।
আরও পড়ুুন: "অনুপ্রবেশকারী ও অপরাধীদের কাছে বাংলাকে লিজ দিয়ে দিয়েছে তৃণমূল", বিস্ফোরক মোদি
তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া (Spy Imam Project) প্রশিক্ষণপর্ব শেষে পাকিস্তানের স্পাই ইমামদের বিভিন্ন দেশে নিয়োগ করছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। এঁদের মধ্যে অনেকেই তৃতীয় কোনও দেশের পাশপোর্ট ব্যবহার করে ভারতে ঢুকে পড়তে সফল হয়েছে। তাঁরা কাজ করছেন তবলিঘি জামাতের অঙ্গুলি হেলনে। ভারতে থাকা আইএসআইয়ের অ্যাসেস্টস পরিদর্শন করেছেন এঁরা। ভারতীয় অর্থনীতিতে ধাক্কা দিতে এই স্পাই ইমামদের অনেকেই আবার জাল নোট ছড়িয়ে দিচ্ছেন। দেশের মধ্যে যে জাল বিছানো রয়েছে আইএসআইয়ের, তার মাধ্যমেই এই দুষ্কর্ম করে চলেছে স্পাই ইমামরা।
তুরস্কের সাংবাদিক আবদুল্লা বজকুর্ত বলেন, “দিয়ানেট বছর বছর এই খাতে (স্পাই ইমাম প্রজেক্টে) বাজেট বাড়িয়েই চলেছে। ইতিমধ্যেই তারা তুরস্ক এবং অন্যান্য দেশে নিয়োগ করেছে এক লাখ চল্লিশ হাজার স্পাই ইমামকে। এদের মধ্যে সমুদ্রপারের বিভিন্ন মসজিদে রয়েছেন ৯০ হাজার স্পাই ইমাম। চলতি বছর বাজেটে এই খাতে ৯১.৮ বিলিয়ন টার্কিস লিরা বরাদ্দ করা হয়েছে। গতবারের বাজেটের চেয়ে যা ১৫১ শতাংশ বেশি (Spy Imam Project)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।