Interns: ইন্টার্নদের বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করার নয়া নির্দেশ নিয়ে বিতর্ক

সরকারি পরিষেবাকে পঙ্গু করতেই নতুন নিয়ম, অভিমত চিকিৎসকদের
interns_in_bengal_medical
interns_in_bengal_medical

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সরকারি হাসপাতালে এমবিবিএস পড়ার সময় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার কাজে নিযুক্ত হওয়া যাবে। ইন্টার্নদের (Interns) বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে যুক্ত হওয়ার অনুমতি দিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্য সরকারের এই নতুন নির্দেশিকায় হতবাক রাজ্যের চিকিৎসক মহল। সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরও পঙ্গু করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ইন্টার্নরাও বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে যুক্ত হতে পারেন। আর তার জেরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। দেশের কোথাও এমন কোনও আইন নেই। এমনকি রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলেও এমন নিয়ম নেই। পড়াচলাকালীন এমন কিছু করা আইনের বিরুদ্ধে বলেও উল্লেখ রয়েছে। তারপরেও স্বাস্থ্য দফতর কীভাবে এমন বিজ্ঞপ্তি জারি করল, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

চিকিৎসকদের অভিমত 

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সরকারি হাসপাতালের পড়ুয়া কীভাবে বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোমে চিকিৎসার কাজে যুক্ত হবেন? ইন্টার্নরা (Interns) স্থায়ী রেজিস্ট্রেশন নম্বর পান না। কারণ তখনও তাঁদের এমবিবিএস-র কোর্স সম্পূর্ণ হয় না। তাই তাঁরা কীভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে রোগী পরিষেবা দেবেন? সেটা কি আদৌও বৈধ হবে? একজন চিকিৎসকের স্থায়ী রেজিস্ট্রেশন নম্বর না থাকলে, আইনত সে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারেন না। সেক্ষেত্রে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর কীসের ভিত্তিতে এমন নির্দেশ দিলেন?

রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে রোগীর লম্বা লাইন। যে কোনও রোগের নিরাময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয় কয়েক মাস। সরকারি হাসপাতালে কর্মী সঙ্কট চরম। চিকিৎসকের অভাবের জেরেই রোগীদের ভোগান্তি বাড়ে। প্রয়োজনের তুলনায় এ রাজ্যে চিকিৎসক কম। জেলার হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনের পরিষেবা ব্যহত হয় পর্যাপ্ত চিকিৎসকের অভাবে। সরকারি হাসপাতালে জরুরি পরিষেবা থেকে স্ত্রী রোগ কিংবা মেডিসিন, যে কোনও বিভাগেই রোগী পরিষেবা দেন জুনিয়র চিকিৎসকেরাই (Interns)। তাঁরাই মূলত সব সময় হাসপাতালে থাকেন। এইরকম পরিস্থিতিতে সেই জুনিয়র চিকিৎসকদের যদি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে চিকিৎসক সঙ্কট আরও বাড়বে। রোগীদের হয়রানিও বাড়বে। সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা আরও ভেঙে পড়বে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

আরও পড়ুন: জেলার মেডিক্যাল কলেজ কী শুধুই বিজ্ঞাপন? এসএসকেএমের নতুন রেকর্ডে নয়া বিতর্ক

রাজ্যে বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবা

বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা এখন স্বাস্থ্য সাথী নির্ভর করা হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামোগত উন্নতিতে নজর নেই। ফলে, সরকারি ক্ষেত্রে রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে। স্বাস্থ্য সাথীর বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। মানুষকে কার্ড দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলেও পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না বলে বারবার অভিযোগ উঠছে। তারপরেও বেসরকারি হাসপাতালে ইন্টার্নদের (Interns) কাজ করার অনুমতি কেন, সে নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই!

স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কাছেও এ নিয়ে কোনও স্পষ্ট উত্তর নেই। এক কর্তা বলেন, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে সাধারণ মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন। সেখানেও রোগীর চাপ বাড়ছে। তাই ইন্টার্নরা সেখানেও কাজ শিখতে পারবে। এই ভাবনা থেকেই নতুন বিজ্ঞপ্তি। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপের তুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপ অনেকটাই কম। তারপরেও কেন এমন ভাবনা? সে নিয়ে অবশ্য কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles