তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
আধুনিক ব্যস্ত জীবনে বদলে গিয়েছে প্রতিদিনের রুটিন। কাজের সময়, খাদ্যাভ্যাস কিংবা ঘুমানো, সবটাই বদলে যাচ্ছে। অফিসের নির্দিষ্ট সময় না থাকা, তার জেরে চটজলদি খাবারে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া, আবার রাতে ঘুমের জন্য সময়ের স্বল্প বরাদ্দ! চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই ধরনের নানা অভ্যাসের জেরেই বাড়ছে বন্ধ্যাত্বের (Infertility) মতো সমস্যা।
সমস্যা (Infertility) কোথায়?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের (Infertility) সমস্যা বাড়ছে। তার সঙ্গে দেখা দিচ্ছে পিসিওডি, ওভারির ক্যানসারের মতো একাধিক অসুখ।
কী কারণে বাড়ছে বন্ধ্যাত্ব (Infertility)?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, গর্ভধারণের জন্য সুস্থ শরীর ও মন প্রয়োজন। আর সমস্যা হচ্ছে, খুব কম বয়স থেকেই মহিলারা জরায়ু ও ওভারির একাধিক অসুখে ভুগছেন। এই অসুখ বাড়ার অন্যতম কারণ, ফাস্টফুড।পিৎজা, বার্গার, বিরিয়ানির মতো অতিরিক্ত তেলমশলার খাবার বা প্রিজারভেটিভ খাবারেই অভ্যস্ত তরুণ প্রজন্ম। আর এই ধরনের খাবার একেবারেই স্বাস্থ্যকর হয় না। অধিকাংশ সময় কাজের চাপে তাঁরা দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকেন। আর যখন খাবার সুযোগ হয়, তখন চটজলদি তেলমশলা যুক্ত খাবার খান। আর তার ফলেই দেখা দেয় একাধিক সমস্যা। অধিকাংশ সময় যে ধরনের খাবার খাওয়া হয়, তাতে স্থূলতা বাড়ে। যেমন প্যাকেটজাত ঠান্ডা পানীয়, চিপস, হটডগ জাতীয় প্রসেসড খাবার। স্থূলতার সমস্যা বন্ধ্যাত্বের সমস্যাকে বাড়াতে সাহায্য করে বলেই জানাচ্ছে চিকিৎসকদের একাংশ।
মানসিক চাপ বন্ধ্যাত্বের (Infertility) অন্যতম কারণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। গর্ভধারণের জন্য যেমন সুস্থ শরীর প্রয়োজন, তেমনি দরকার সুস্থ মন। কিন্তু, আধুনিক জীবনে বাড়ছে মানসিক চাপ, অবসাদের মতো সমস্যা। তাই বন্ধ্যাত্বের সমস্যা হলে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়েও নজরদারি জরুরি বলে জানাচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল।
ব্যস্ত জীবনে কমছে ঘুমের সময়। অনেকেই রাত জেগে কাজ করেন। অফিস চলে রাতে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, রাতে ঘুমানোর সময় শরীরে একাধিক হরমোনের ভারসাম্য তৈরি হয়। যা দিনের বেলায় বা অসময়ে ঘুমালে হয় না। বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। তাই পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব সেই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
কীভাবে রুখবেন এই সমস্যা (Infertility)?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, স্বাস্থ্যের যত্ন নিলে কমানো যায় ঝুঁকি (Infertility)। বিশেষত, যাদের কম বয়স থেকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়, বা ঋতুস্রাবে জটিলতা রয়েছে, তাদের বাড়তি সতর্ক থাকা জরুরি। কোনও রকম সমস্যা হলে প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
তবে, জীবনযাপনের ধরন বদলেও ঝুঁকি কমানো যায় বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, খাবারে বাড়তি নজরদারি জরুরি। দিনে নির্দিষ্ট সময়ে খাবারের অভ্যাস রাখতে হবে। নিয়মিত ফল, ড্রাই ফ্রুটস রাখতে হবে খাবারের তালিকায়। অতিরিক্ত তেলমশলা, চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। পেঁপে, কলার মতো ফল নিয়মিত খেতে হবে। নিয়মিত সব্জি খাওয়া দরকার। এতে শরীর সুস্থ থাকে।
আট ঘণ্টা ঘুমের অভ্যাস রাখতে হবে। সকালে যোগাভ্যাস করতে হবে। নিয়মিত আধ ঘণ্টা হাঁটা আর যোগাভ্যাস শরীরের একাধিক হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। পাশপাশি মনকেও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours