মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘সিলেকশান কমিটিতে কোনও আত্মীয় ছিলেন না’, এই মর্মে প্রাথমিক শিক্ষকদের থেকে হলফনামা নিচ্ছে পুলিশ। ২০১২ সালে নিয়োগ পাওয়া পূর্ব মেদিনীপুরের ৩,৯২৪ জন প্রাথমিক শিক্ষককে দ্রুত এই হলফনামা স্থানীয় পুলিশ স্টেশন ও প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের অফিসে জমা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরেই জেলার ২১টি থানায় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের এই হলফনামা জমা দিতে দেখা গিয়েছে।
থানায় লাইন দিয়ে হলফনামা জমা দেওয়া নিয়ে কী বললেন প্রাইমারি শিক্ষক?
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ২০১২ সালে প্রাথমিকে ঢালাও শিক্ষক নিয়োগ হয় রাজ্য জুড়ে। সেই নিয়োগে সিলেকশন কমিটিতে প্রার্থীদের আত্মীয়দের থাকার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন মৃণাল কান্তি মাইতি নামে এক ব্যক্তি। সেই মামলার সূত্র ধরেই ২০১২ সালের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের থেকে হলফনামা চায় জেলা প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল। ৪ আগষ্টের মধ্যে এই হলফনামা জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আচমকাই পুলিশের তরফ থেকেও ওই শিক্ষকদের ফোন করে থানাতেও হলফনামা জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নিয়েই শুরু হয়েছে চাপানউতোর। জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, জেলা শাসকের থেকে নির্দেশ পাওয়ার পরেই পুলিশের তরফ থেকেও মুচলেকা জমা নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। থানায় লাইন দিয়ে হলফনামা জমা প্রসঙ্গে এক শিক্ষক বলেন, মনে হচ্ছে আমরা কোনও অপরাধ করেছি। অন্য এক শিক্ষক বলেন, 'শিক্ষা দফতর থেকে পুলিশের কাছে মুচলেকা জমা দেওয়ার কোনও নির্দশ নেই। কিন্তু আচমকা পুলিশের ফোন পেয়ে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এখন নির্দেশ মেনেই আমরা হলফনামা জমা দিয়েছি।'
কি রয়েছে এই হলফনামায়?
জেলা প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই হলফনামায় নিজের নাম পরিচয় উল্লেখ করার পাশাপাশি ৩টি পয়েন্টের উল্লেখ করতে হচ্ছে। যেখানে ওই শিক্ষকদের জানাতে হচ্ছে, 'আমি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলের ২০০৯ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২০১২ সালে চাকরি প্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক। ইন্টারভিউ বোর্ড বা সিলেকশন কমিটির এক বা একাধিক সদস্য আমার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয় এবং আমি ঘোষণা করছি, আমার দেওয়া বিবরণ মিথ্যা বা ভুল হলে আমার নিয়োগ বাতিল করা হবে এবং আমি প্যানেল কর্তৃক শাস্তিমূলক ব্যবস্থার জন্য দায়ী থাকব'। স্ট্যাম্প পেপারে এই হলফনামাটি লিখে এফিডেভিটের পর তা জেলা স্কুল কাউন্সিলে জমার পাশাপাশি প্রত্যয়িত কপি থানায় জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে প্রথমবার বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়। এই পরীক্ষায় বেসিক পাশ না থাকাদেরও বসতে সুযোগ দেওয়া হয় এবং ওই বছর বিপুল পরিমাণে নিয়োগ হয় রাজ্যে। যার মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর শীর্ষস্থানে ছিল বলে খবর। পরে এনসিইআরটি’র গাইডলাইন মেনে এই সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক ভাবে উচ্চমাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর নিয়ে নতুন করে পাশ করতে হয় এবং ডিএড পাশ করে সেই সার্টিফিকেটও জমা করতে হয় সংসদে। এবার নতুন করে এই সমস্ত শিক্ষকদের হলফনামা দেওয়া নিয়েই জল্পনা শুরু হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours