মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সূর্যের মুখ দেখেন না দেবী। তাই সূর্যাস্তের পর প্রতিমা তৈরি করে, রাতে শ্যামা মায়ের পুজো করে, ভোরের আলো ফোটার আগেই বিসর্জন হয়। প্রায় পাঁচশো বছর ধরে এমনই রীতি মেনে দীপাবলির রাতে কালীপূজো হয়ে আসছে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগর কালীবাড়ির মন্দিরে। শুধু তাই নয়, দেবীর আদেশে এই মন্দিরে নেই কোনও ছাদ বা আচ্ছাদন। চারদিক দেওয়াল দিয়ে ঘিরে মন্দির থাকলেও খোলা আকাশের নিচেই পরম জাগ্রত দেবীনগর কালীবাড়ির দেবী পূজিতা হন বেদিতেই (Kali Puja 2023)।
ভিনরাজ্য থেকে দর্শনার্থীদের সমাগম (Kali Puja 2023)
শুধু উত্তর দিনাজপুর নয়, রাজ্যের অন্যান্য জেলা সহ কলকাতা, এমনকি ভিনরাজ্য থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হয় দীপাবলির রাতে, ঐতিহ্যবাহী দেবীনগর কালীবাড়ির শ্যামাপুজোয়। কথিত আছে, রায়গঞ্জ শহরের দক্ষিণ প্রান্তে দেবীনগরে রাজপথের ধারে এই কালীমন্দিরে এক সময় গাছের তলায় ডাকাতদল পুজো করত। দিনাজপুরের জমিদার তাঁর লোকজন নিয়ে এসে এখানে পুজো করে ফিরে যেতেন। একবার এই পথ দিয়ে ভূপালপুর রাজবাড়ি যাওয়ার পথে এই স্থানে আটকে পড়েন তৎকালীন দিনাজপুরের জমিদার। সেই সময় তিনি দেবীর আদেশ পান এই স্থানে মন্দির তৈরি করে পুজো করার। দেবীর এই আদেশও ছিল মন্দির হবে ছাদ খোলা। মা রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে এখানে পূজিতা হবেন (Kali Puja 2023)। দিনাজপুরের রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন দীপাবলির অমাবস্যায় সূর্য অস্ত যাওয়ার পরে মায়ের মূর্তি তৈরি করা শুরু হবে। আর সূর্য উদয় হওয়ার আগেই মায়ের বিসর্জন দিয়ে দিতে হবে। বাকি সারাটা বছর মা পূজিতা হবেন বেদিতেই। মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে দিনাজপুরের জমিদার রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগরে রাজপথের ধারে তৈরি করে দেন ছাদ খোলা মায়ের মন্দির। সেই থেকে আজও এই ছাদ খোলা মন্দিরে বেদিতে মা কালীর আরাধনা হয়। দীপাবলির রাতে এক রাতেই মায়ের মূর্তি তৈরি করে পুজো করে ভোরের আলো ফোটার আগে বিসর্জন দিয়ে দেওয়া হয় কালী প্রতিমার। একটিবারের জন্যও এই রীতির অন্যথা হয়নি রায়গঞ্জ শহরের দেবীনগর কালীবাড়ির পুজোয়।
জাগ্রত দেবী বলে এর খ্যাতি (Kali Puja 2023)
জাগ্রত দেবী বলে এর খ্যাতি ছড়িয়েছে গোটা দেশজুড়ে। অসম থেকে ঝাড়খণ্ড, ওডিশা, বিহার সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় দীপাবলির কালীপুজোর রাতে। স্থানীয় পুরোহিত সাধন মুখার্জী বলেন, "আনুমানিক ৫০০ বছরের পুরনো এই পুজো। তৎকালীন দিনাজপুরের জমিদার স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো শুরু করেছিলেন। সেই থেকে পুজো হয়ে আসছে। দেবী সূর্যের মুখ দেখেন না। তাই সন্ধ্যায় চক্ষুদান হয় এবং ভোর হওয়ার আগেই বিসর্জন হয়। এখানে বৈষ্ণব মতে পুজো (Kali Puja 2023) হয়। অন্নভোগ হয় না। দেবী জাগ্রত হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তদের সমাগম হয় এখানে। "
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours