মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আসছে পুজো বাড়ছে মদের দাম। বাড়তি রোজগারের টাকাতেই পুজোয় ক্লাব অনুদানের টাকা তুলে নিতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। শুধু তাই নয়, পুজোর আবহ তৈরি করে মদের বিক্রি বাড়াতেই ভাদ্রের মল মাসেও দুর্গাপুজো নিয়ে পদযাত্রা করে বাঙালিকে মাতিয়ে দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে নবান্নের অন্দরের খবর।
আবগারি দফতর সূত্রের খবর, সবকিছু ঠিকঠাক চললে মহালয়ার দিন সাতেক আগেই দিশি এবং ফরেন লিকারের(বিলিতি)দাম ৭ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে আবগারি শুল্কের কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। দিশি এবং ফরেন লিকারের উৎপাদকেরা তাদের ডিস্টিলারি থেকে মদ উৎপাদনের খরচ বাড়ার কারণে উৎপাদন মূল্য বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছিলেন।গত ছমাস ধরে সেই প্রস্তাব থাকলেও নবান্ন তা মঞ্জুর করেনি। দুর্গাপুজোর ক্লাব অনুদান ঘোষণার দুএকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মদের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছেন। যদিও সরকার আবগারি শুল্কের কোনও পরিবর্তন করছে না, তবুও মদের দাম বাড়ার ফলে বেভারেজ কর্পোরেশনের লেনদেনে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। মদের উৎবপাদন মূল্য যত বেশি হবে বেভকো তত বেশি কমিশন পাবে। ফলে ইডিপি বাড়ার ফলে নবান্নের রোজগার বাড়বে। সেই টাকাতেই ক্লাবগুলিতে দেওয়া পুজোর অনুদাম তুলে নেওয়া হবে।
আবগারি কর্তাদের আশা, সরাসরি কর আদায় না বাড়লেও বাড়তি দামের ফলে আরও মোটা টাকার লেনদেন হবে, তাতে অন্তত ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা রাজস্ব বাড়তে পারে। পুজোর অনুদানের খরচ মদ বিক্রি করে দুমাসেই তুলে নিতে পারবে রাজ্য।রাজ্যে এখন প্রায় দেড় কোটি কেস ফরেন লিকার এবং ১ কোটি কেস বিয়ার বিক্রি হয়। করোনার সময় দীর্ঘদিন মদের দোকান বন্ধ থাকায় আবগারি রাজস্ব কমে গিয়েছিল। ২০২১ এর নভেম্বরে সরকার মদের দাম অনেকটাঅ কমিয়ে দিয়েছিল। তার ফলে বিলিতি মদ বা বিয়ারের বিক্রি প্রায় ৫০% বেড়ে গিয়েছে। এখন মদ্যপায়ীদের পানের অভ্যাস আগের মতো ফিরে আসায় সরকার ফের মদের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে মদের উৎপাদন মূল্য বাড়ানোর পিছনে কোনও এক রহস্য আছে বলেও শোনা যাচ্ছে।
আবগারি দফতর জানাচ্ছে, দুর্গাপুজো থেকে ছট পর্যন্ত প্রতি বছরই মদের বিপুল বিক্রি হয়। উৎসবের মরশুমে বাঙালি হাতখুলে খরচও করে থাকে। ফলে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি মদের দাম বাড়ালে বিক্রিতে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। বরং বাড়তি আয় দিয়ে পুজোর আগে নবান্নের বাড়তি খরচ পুষিয়ে দেওয়া যাবে।
মদের দাম বৃদ্ধির কানাঘুষো খবর বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মন বলেন, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। একদিকে দুর্গাপুজোর সহায়তা দিতে ক্লাবগুলিকে অনুদান দিচ্ছে সরকার। সেই টাকা তোলা হচ্ছে মদের বিক্রি এবং দাম বাড়িয়ে। ভাদ্রের মল মাসেও মুখ্যমন্ত্রী পুজোর আবহ তৈরি করতে চাইছেন।যাতে এখন থেকেই মদে মেতে ওঠে যুব সমাজ। ঘুরিয়ে মদের দাম বাড়িয়ে তাদের পকেট কেটেই ক্লাব অনুদানের টাকা তুলছে নবান্ন। বাঙালি আর কবে বুঝবে? আর কত ঠকবে?
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours