West Bengal NCC: ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ জাগছে, রাজ্যে এনসিসি বন্ধ করে দিল মমতা প্রশাসন

NCC: এরাজ্যে এনসিসিতে নতুন করে কোনও নাম নথিভুক্ত করা যাবে না...
ncc-main
ncc-main

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এবার এনসিসি (NCC West Bengal) বন্ধ হলো এরাজ্যে। গত ৬ অক্টোবর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে পাঠানো রাজ্যের এনসিসি-র এডিজি মেজর জেনারেল সেনগুপ্তর চিঠি সামনে আসতেই বিষয়টা পরিষ্কার হয়। ওই চিঠিতে ষ্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, এরাজ্যে এনসিসিতে নতুন করে কোনও নাম নথিভুক্ত করা যাবে না। কারণ হিসাবে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রাজ্য সরকারের এই খাতে বাজেট বরাদ্দ না করার বিষয়টি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, নাম নথিভুক্ত রয়েছে এমন এনসিসি ক্যাডারের সংখ্যা এরাজ্যে ৯৫ হাজার ১২০, যাদের মধ্যে ৫৪ হাজার ৩২৪ জন জাতীয় স্তরের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছে। 

ফলে প্রশ্ন উঠছে, যেখানে ক্লাবগুলোকে দুর্গাপুজোর নামে বিপুল পরিমাণ টাকা দেওয়া হচ্ছে, লক্ষ্মীভাণ্ডার প্রকল্পে মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হচ্ছে, সেখানে এনসিসির খাতে বরাদ্দ কেন নেই? ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এখানে অন্য কারণ থাকতে পারে। স্কুল কলেজে অসংখ্য পড়ুয়া এনসিসিতে ভর্তি হয়। দেশাত্মবোধক গান, প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে তাদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ জাগে। তাই এই কারণেই হয়তো এনসিসিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হল। 


ক্লাবকে আর্থিক সাহায্য, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের (Lakshmi Bhandar) মতো প্রকল্পে শাসক দলের ভোট ব্যাংক তৈরী হয়। কিন্তু জাতীয়তাবোধ জাগলে সেটাকে শাসক দলের বিপক্ষ ভোট ব্যাংক বলেই মনে করে মমতা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুলওয়ামা হামলার বদলা হিসেবে এয়ার স্ট্রাইকের দ্বারা জঙ্গি নিকেশ করে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সারাদেশের মতো তখন পশ্চিমবঙ্গেও বিজয় দিবস পালিত হয়েছিল। রাস্তায় নেমে জাতীয় পতাকা হাতে বহু সাধারণ মানুষ, দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে দিয়ে দেশের সেনাবাহিনীকে সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছিল। তখন একাধিক জায়গায় মমতা প্রশাসনের বিপক্ষে অভিযোগ ওঠে এই প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়ার। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী (Mamata) সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দেন - ‘‘জাতীয় পতাকা হাতে, সন্ধ্যা হলেই রাস্তায় নামছে। ওরা কারা?’’ তাই অনেকেই মনে করছেন, জাতীয়তাবোধ জাগে বলেই এনসিসি বন্ধের এই সিদ্ধান্ত। 

গরুপাচার, শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিতে ইতিমধ্যে নাজেহাল শাসক দল, তার মধ্যে এনসিসি বন্ধ হওয়ার বিষয়টি মমতা প্রশাসনের অস্বস্তির মাত্রা বাড়াল বলেই মনে করছে অনেকে। এনসিসি শুধুমাত্র যে একটি প্রশিক্ষণ তাই নয়, এই ট্রেনিং এর দ্বারা সরাসরি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ভর্তির সুযোগ রয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। সেদিক থেকে দেখলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দপ্তরে চাকরি করার সুযোগটাও চলে গেল অসংখ্য কলেজ পড়ুয়ার।

দুর্নীতি, স্বজনপোষণে এবং একাধিক মামলায় জর্জরিত হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ‌‌। এখন শিক্ষক নিয়োগ বা অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষা এরাজ্যে প্রায় বন্ধ বললেই চলে‌। অসংখ্য তরুণ-তরুণী এনসিসির মারফত ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সরাসরি ভর্তি হতে পারতেন। এনসিসির 'বি' এবং 'সি' সার্টিফিকেটের পরীক্ষায় যাঁরা ভাল নম্বর নিয়ে পাশ করতেন এবং স্নাতক স্তরে যাদের ৫৫% শতাংশ নম্বর থাকত, তাঁদের 'কম্বাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিস' এর লিখিত পরীক্ষায় বসতে হতো না‌। সরাসরি তাঁরা ইন্টারভিউয়ের সুযোগ পেতেন। এবার সে সুযোগ থেকেও তাঁরা বঞ্চিত হলেন।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles