মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির টাকার খোঁজে তদন্ত চালিয়ে মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya) ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ৭ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি। মানিকের স্ত্রী, পুত্র-সহ ছ'জনের বিরুদ্ধে বুধবারই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট বা প্রসিকিউশন কমপ্লেন জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বৃহস্পতিবার ইডির তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের ৬১টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ব্যাঙ্ক ব্যালান্স এবং মিউচুয়াল ফান্ড মিলিয়ে এই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইডির দাবি, এই ৬১টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির টাকার লেনদেন হয়েছে। যদিও মানিক তাঁর আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করেন, ওই অ্যাকাউন্টগুলির সঙ্গে তাঁর কোনও যোগই নেই।
আরও পড়ুন: পরিষেবা ভাল নয়, তাই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করান না খোদ মুখ্যমন্ত্রী!
ইডির অভিযোগ, ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমে টেট দুর্নীতির টাকা সরানো হয়েছে। এছাড়া শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড, ফিক্সড ডিপোজিটের মাধ্যমেও টাকা সরানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গোয়েন্দারা। এছাড়াও ইডির নজরে রয়েছে মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর ছেলে শৌভিকের নামে থাকা স্থাবর সম্পত্তি। কোন টাকা দিয়ে কেনা হয়েছিল এই সম্পত্তি, এখন তাই খতিয়ে দেখছে ইডি। ইডির তথ্য অনুযায়ী, মানিক ও তাঁর ছেলের নামে দু’টি আমবাগান রয়েছে। তাছাড়া নদিয়ার কালীগঞ্জ থানা এলাকার মঘড়াইক্ষেত্র গ্রামে মানিকের (Manik Bhattacharya) পরিবারের দশ একর জমি আছে।
ইডির নজরে মানিকের সম্পত্তি
ইডি সূত্রে জানানো হয়েছে, মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) ছেলের নামে কালীগঞ্জে এক বিঘা আমবাগান কেনা হয়েছিল। সেই বাগান মাত্র দেড় লক্ষ টাকায় কেনা হয়েছিল। পরে সেই গ্রামেই আরও ৩৬ ছটাক আমবাগান কিনেছিলেন মানিকপুত্র শৌভিক ভট্টাচার্য। সেই জমি কেনা হয় ১ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা দিয়ে। এছাড়াও যাদবপুরে ৬৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে মানিকের। সেই ফ্ল্যাট কেনার জন্য বিমা সংস্থার থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক। তাছাড়া যাদবপুরের সেন্ট্রাল রোডে আরও এক ফ্ল্যাট রয়েছে মানিকের। সেটা দেড় হাজার বর্গফুটের। ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে কেনা হয় সেই ফ্ল্যাট। এর জন্যেও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ফ্ল্যাটগুলির ডাউন পেমেন্টের টাকা কোথা থেকে এল? এখন সেটাই ভাবাচ্ছে ইডি গোয়েন্দাদের।
ইডির তরফ থেকে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) বিরুদ্ধে। ইডির দাবি, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিকের সক্রিয় ভূমিকা তো ছিলই। পাশাপাশি বিএড ও ডিএলএড কলেজগুলিকে অনুমোদন ও ছাড়পত্র পাইয়ে দেওয়ার নামেও টাকা তুলতেন মানিক ও পার্থ। গোয়েন্দাদের আরও দাবি, মানিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁদের বন্ধু ও পরিজনদের নামেও অ্যাকাউন্ট খুলিয়েছিলেন। যাতে সহজেই দুর্নীতির টাকা লোপাট করা যায়। মানিকের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য এবং মৃত্যুঞ্জয় ভট্টাচার্য নামে এক ব্যক্তির নামে খোলা হয়েছিল এরকমই অ্যাকাউন্ট। তাতেও টাকা পাচার করা হয়েছিল বলে দাবি ইডির। মৃত্যুঞ্জয় ভট্টাচার্য ২০১৬ সালে মারা যাওয়ার পরেও তাঁর নামের অ্যাকাউন্টটি ব্যবহার করা হয়।
+ There are no comments
Add yours