মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নাজবুল্লা খাতুন মারা গিয়েছে। ১১ বছর বয়সে সে এক আত্মীয়ের হাত ধরে মিনাখাঁ থেকে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিল। আর সে বাড়ি ফেরেনি। বহু খোঁজ করেছেন বাড়ির লোকজন। কিন্তু, আর হদিশ পাননি নাজবুল্লার। এরপর ১৬ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। অবশেষে বাড়ির লোকজনের পাশাপাশি প্রতিবেশীরাও ধরে নিয়েছিলেন আর নাজবুল্লা আর বেঁচে নেই। সেই ১৬ বছর আগে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) মিনাখাঁ থেকে হারিয়ে যাওয়া যুবতীর হদিশ করল হ্যাম রেডিও।
কী করে খোঁজ মিলল?
১১ বছর বয়সে কাজের খোঁজে সে এক আত্মীয়ের হাত ধরে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) মিনাখাঁ থেকে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিল। তারপর আর তার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাড়ির লোকজন বহুবার দিল্লি গিয়েছেন তার খোঁজে। কিন্তু, খালি হাতেই বার বার তাঁদের ফিরতে হয়েছে। হ্যাম রেডিও সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে হ্যাম রেডিওর এক কর্মকর্তার কাছে। সেই ফোনে কথা বলেই নাজবুল্লার হদিশ পাওয়া যায়। জানা যায়, ১১ বছরের ছোট্ট নাজবুল্লার বয়স এখন ২৭ বছর। এখন তিনি রাজস্থানে থাকেন। তিনি তিন সন্তানের মা। তাঁর নাম এখন রূপা মণ্ডল। তিনি এক জাঠ সম্প্রদায় যুবককে বিয়ে করেছেন। নাজবুল্লার স্বামী বলেন, বহু বছর আগে দিল্লি থেকে রাজস্থান ফেরার পথে নিউ দিল্লি স্টেশনে হাউ হাউ করে কাঁদছিল নাজবুল্লা খাতুন নামে ওই মেয়েটি। একটি অসহায় মেয়েকে বাড়িতে স্থান দেব ভেবেই বাড়িতে নিয়ে এসে মার হাতে তুলে দিয়েছিলাম। পরবর্তীকালে মা মারা যাওয়ার পর মার কথা মতনই বিয়ে করলাম ওকে। তখন রেজিস্ট্রি করার জন্য আধার কার্ডের প্রয়োজন হয়ে পড়ল। একেকবার এক নাম বলছে দেখে আমি ঠিক করি রূপা মন্ডলই ওর নাম দেওয়া থাক। তাই ছোটবেলার নাজবুল্লা আজ রুপা। ওর বাড়়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। খুব শীঘ্রই আমরা যাব। আর নাজবুল্লা বলেন, ১৬ বছর পর বাড়ি ফিরব জেনেই খুবই আনন্দ লাগবে।
কী বললেন হ্যাম রেডিও ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক?
হ্যাম রেডিও ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অম্বরীশ নাগবিশ্বাস বলেন, নাজবুল্লার সঙ্গে কথা বলে ওর একজন আত্মীয়ের নামের কথা জানতে পারি। এরপর হ্যাম রেডিওর সদস্যদের সাহায্যে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) মিনাখাঁয় ওর বাড়ির হদিশ পাই। বাড়ির লোকজন জানেন নাজবুল্লা বেঁচে নেই। ১৬ বছর পর মোবাইল ভিডিও কলে কথা বলতে পেরে ফোনের ওপারে রাজস্থানে বসে নাজবুল্লা আর মিনাখাঁর বাড়িতে বসে পরিবারের লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। খুব শীঘ্রই দুই পরিবার এক হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours