Mominpur Violence: সেদিনও ছিল ১০ অক্টোবর কোজাগরীর রাত, মোমিনপুরের ঘটনা উস্কে দিল নোয়াখালির স্মৃতি

Bengal Communal Clash: অতীতেও, বারবার সাম্প্রদায়িক হিংসার সাক্ষী থেকেছে পশ্চিমবঙ্গ...
noakhali-mominpur
noakhali-mominpur

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সেদিনও ছিল কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর (Kojagori Lakshmi Puja) দিন। পূর্ণিমার চাঁদের আলো সুপারি গাছের উপর পড়ে সম্পূর্ণ পরিবেশটা আলো-আবছায়া করে তুলছিল। কোজাগরী জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধতা, উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনির তাল কাটলো পাকিস্তানের উত্তাল দাবির স্লোগানে। ১০ অক্টোবর ১৯৪৬ নোয়াখালি দাঙ্গা (1946 Noakhali riots) ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। গতকালও ছিল কোজাগরী পূর্ণিমা। নোয়াখালির ঘটনার ৭৬ বছর অতিক্রান্ত হল আজ। 

এরমধ্যে দুই বাংলার বিভিন্ন ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে নানান সময়ে। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার কারণেই ১৯৫০ সালের ৮ অক্টোবর পাকিস্তানের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন সেদেশের একমাত্র সংখ্যালঘু মন্ত্রী যোগেন মণ্ডল। শরণার্থী হিসেবে তাঁকে আশ্রয় নিতে হয় পশ্চিমবঙ্গে। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার জন্যই পূর্ব পাকিস্তানের অসংখ্য সংখ্যালঘু হিন্দুকে বারবার শরণার্থী হয়ে আসতে হয়েছে এই ভারত ভূখণ্ডে। 

১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ অবধি কিংবা তারপরেও খুব একটা বদলায়নি চিত্রটা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের (১৯৭১ সাল) সময় সেদেশের রাজাকার এবং পাকিস্তানি সৈন্যদের আক্রমণে তছনছ হয়েছে ঢাকার রমনা কালী মন্দির, যেটাকে বলা হতো ‘Largest Landmark of Dhaka’। ওই বছরেই ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে অজস্র শরণার্থী আসতে বাধ্য হন পশ্চিমবঙ্গে। বিগত বছরগুলোতে পশ্চিমবঙ্গের বেশকিছু ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার ঘটনা নিশ্চয়ই আমাদের অগোচরে যায়নি।

আরও পড়ুন: গোষ্ঠী হিংসা রাজ্যে খুবই সাধারণ হয়ে উঠেছে! মোমিনপুর-কাণ্ডে মমতার সরকারকে দুষলেন অমিত মালব্য

এক ঝলকে এরাজ্যে সাম্প্রতীককালে ঘটে যাওয়া কয়েকটি সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনাবলি—

২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল করাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয় উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা। 

২০১৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং অঞ্চলের অন্তর্গত ঘুটিয়ারি শরিফের একজন ইমাম জয়নগরের জামতলায় ধার্মিক অনুষ্ঠান শেষ করে বন্ধুদের সঙ্গে মোটরসাইকেল করে আসছিলেন। রাত প্রায় ২টা নাগাদ নোলিয়াখলির পথে তাঁদের থামানো হয় ও টাকা লুণ্ঠন করে গুলি করে মারা হয়। পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী, এক অজ্ঞাত বন্দুকধারী কয়েক লক্ষ টাকা লুঠ করে ইমামকে গুলি করে। এই ঘটনায় ক্যানিংয়ের সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট হয় এবং দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে।

২০১৫ সালের মে মাসে ধর্মীয় হিংসায় উত্তপ্ত হয় নদিয়া জেলার কালিয়াগঞ্জ। পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলির জামালপুরের বুড়োরাজ তলা শিব ভক্তদের তীর্থস্থান বলে গণ্য হয়। সেখান থেকে শিব ভক্তদের শোভাযাত্রা, জুরানপুরের মজসিদের সামনে পৌছাঁনোর সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং ধর্মীয় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: মোমিনপুরের ঘটনায় শাহকে চিঠি শুভেন্দুর! স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জি বিরোধী নেতার

২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ব্যাপক উত্তপ্ত হয় মালদা জেলার কালিয়াচক। বর্তমানে প্রয়াত, তৎকালীন হিন্দু মহাসভার নেতা কমলেশ তেওয়ারির মন্তব্যের বিরোধিতা করে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে এক গোষ্ঠীর মানুষ। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই বিক্ষোভ ধর্মীয় হিংসার আকার নিয়ে নেয়‌।

২০১৬ এর ডিসেম্বরেই হাওড়া জেলার ধুলাগড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল ধর্মীয় হিংসা। একপক্ষের ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে।

২০১৭ এর জুলাই মাসে বসিরহাটের ধর্মীয় অশান্তি ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল। এক নাবালকের ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করেই এই অশান্তি শুরু হয়েছিল বলে জানা যায়।

২০১৮ সালে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলে রামনবমীর ঠিক পরেই ধর্মীয় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: উত্তপ্ত মোমিনপুর! বাইক ভাঙচুর, দোকানে আগুন, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ বিজেপির

২০১৯ সালে ডিসেম্বরে নাগরিকত্ব আইন সংসদে পাশ হওয়ার পরে, পশ্চিমবঙ্গের মালদা মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, নদিয়া সমেত একাধিক জায়গায় অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে।

২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসার কয়েকটি ঘটনা ধর্মীয় হিংসার রূপ নিয়েছিল।

২০২২ সালে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের কিছু জায়গায় ধর্মীয় অশান্তি ছড়িয়েছিল বলেই জানা যায়।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles