মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুপায়ের চার আঙুলে ফ্রস্ট বাইটের চুমু। গিয়েছিলেন মাকালু পর্বত জয় করতে। জয় করেও ছিলেন। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে মাকালু থেকে নামার সময়। পথে প্রচন্ড তুষার ঝড়ের কবলে পড়ে যান পিয়ালি। কঠিন পরিস্থিকে জয় করে অবশেষে বাড়িতে (Hooghly) ফিরলেন পিয়ালি বসাক ।
বাড়িতে (Hooghly) কীভাবে ফিরলেন?
এবারে গত ৯ মার্চ অন্নপূর্ণা এবং মাকালু শৃঙ্গ জয় করার লক্ষ্যে চন্দননগরের (Hooghly) বাড়ি থেকে রওনা হন পিয়ালি। ১৭ এপ্রিল বিশ্বের দশম উচ্চতম শৃঙ্গ অন্নপূর্ণা জয় করেছিলেন। তাঁর কথায় প্রায় মাইনাস পঞ্চাশ ডিগ্রি ঠান্ডা ওইখানে। তারমধ্যে প্রচন্ড তুষার ঝড়ে, তাঁর চোখে বরফ কুচির ঝাপটা লাগায় স্নো ব্লাইন্ড নেস হয়ে যায়। কিছু দেখতে পাচ্ছিলেন না। আটকে পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গী সাথীরা নেমে গেলেও খাড়াই বরফ পাহাড়ে দুটি পা খাঁজে আটকে, প্রায় ২২ ঘন্টা না ঘুমিয়ে টানা দাঁড়িয়ে থাকেন পিয়ালি। অবশেষে এক রাশিয়ান পর্বতারোহিনী মাকালু থেকে নামার পথে, তাঁকে ওই অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্যাটেলাইট ফোনে নেপালে পাইওনিয়ার সংস্থায় খবর দেন। পরদিন সকালে শেরপারা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে চপারে করে পিয়ালি নামিয়ে কাটমান্ডু হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ততক্ষণে তাঁর দুপায়ের আঙুলেই ফ্রস্ট বাইট ধরে নিয়েছে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা করিয়ে অবশেষে শনিবার সন্ধ্যায় পিয়ালি চন্দননগরের (Hooghly) বাড়িতে পৌঁছন।
কতটা কঠিন ছিল যাত্রা!
নেপালের সংস্থা পাইওনিয়ার অ্যাডভেঞ্চার সূত্রে জানা যায়, এই মাকালু শৃঙ্গ জয় মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। এই পর্বতের চার পাশে ধারালো জায়গা উলম্বভাবে প্রায় ২৭৭৬৫ ফুট শিখরের দিকে আরোহণ করে, যা অভিজ্ঞ পর্বতারোহী ছাড়া আরোহণ করা অসম্ভব।পিয়ালির বাড়িতে (Hooghly) ফেরা খুব কঠিন ছিল এই যাত্রায়।
পিয়ালীর সাফল্য
স্বাভাবিক ভাবেই ভীষণ ক্লান্ত বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল তাঁকে। যদিও মানসিক ভাবে ভেঙে পড়লেও এখন তিনি চাঙ্গা। পিয়ালি (Hooghly) জানিয়েছেন, পা সারলে আবার যাবেন সামিটে। এভারেস্ট জয়ী পিয়ালি গত ১৭ মে তারিখে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম পর্বত শৃঙ্গ মাকালু জয় করেন। মাকালুকে বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পর্বত আরোহণ বলে মনে করা হয়। এই নিয়ে ৬ টি আটহাজারী শৃঙ্গ জয় করেছেন পিয়ালি। কয়েক বছরের মধ্যে এভারেস্ট, লোৎসে, মানাসুলু, ধৌলাগিরি এবং অন্নপূর্ণা জয় করেছেন তিনি। এর আগেও একবার মাকালু অভিযানে যেতে গিয়ে অসুস্থ বাবার জন্য মাকালু অভিযান স্থগিত রেখে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন পিয়ালি। এদিনপিয়ালির বাড়িতে গেলে দেখা যায় আত্মীয়স্বজনরা তাঁকে পেয়ে খুব খুশি। বাড়ির মেয়ে ফিরে এসেছেন দীর্ঘদিন বাদে। আপাতত ৬ মাস বিশ্রামের নিদান দিয়েছেন চিকিৎসক। ইতিমধ্যেই মা স্বপ্না বসাক মেয়ের শুশ্রূষাতে তৎপর।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours