NFHS 5 Report: পুরুষের তুলনায় বাঙালি মহিলারা নিরাপদ যৌন সংসর্গে বেশি আগ্রহী, বলছে কেন্দ্রীয় রিপোর্ট

Bengali People HIV Awareness: এইচআইভিকে 'নিঃশব্দ মহামারি' বলেই ব্যাখ্যা করতে চান বিশেষজ্ঞরা...
HIV-test-aids-generic
HIV-test-aids-generic

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল: সচেতন ও সর্তক ভাবেই হোক যৌন সম্পর্ক। বাঙালি মহিলারা (Bengali Women) কিন্তু নিরাপদ যৌন সংসর্গে (Protective Sex) যেতেই অধিক আগ্রহী। বাঙালি পুরুষের (Bengali Men) তুলনায় মহিলারাই যৌন নিরাপত্তা (Safe Sex) নিয়ে অধিক সচেতন। অন্তত দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট সে রকম ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভিস ৫ ( NFHS 5 Report) রিপোর্ট অনুযায়ী, এইচআইভি (HIV) নিয়ে বাঙালি মহিলাদের মধ্যে সচেতনার হার ১৮.৫ শতাংশ। গ্রামীণ মহিলাদের সচেতনতা ১২.৩ শতাংশ আর শহুরে মহিলাদের মধ্যে এই হার ৩০.৮ শতাংশ। সেই তুলনায় পুরুষেরা অনেকটাই পিছিয়ে। এইচআইভি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পুরুষদের সচেতনতার সার্বিক হার ১৫.৫ শতাংশ। শহুরে পুরুষদের এইচআইভি নিয়ে সচেতনতা ২১.৩ শতাংশ। গ্রামে সেই হার ১২.৮ শতাংশ। অর্থাৎ, পুরুষদের তুলনায় সচেতনায় এগিয়ে মহিলারা। 

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, এইচআইভি নিয়ে সচেতনা বলতে বোঝানো হয়েছে, এইচআইভি সংক্রমণ কীভাবে হয়, স্পর্শ, হাঁচি কিংবা এক শৌচাগার ব্যবহার থেকে নয়। বরং অসচেতন যৌন সম্পর্ক থেকেই এই রোগ সংক্রমিত হয়। তাছাড়া কন্ডোমের ব্যবহার এইচআইভি সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে, এগুলো সম্পর্কে এ রাজ্যের মহিলারাই অধিক সচেতন। 

আরও পড়ুন: রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল নির্বাচন 'নির্মল' হবে কিনা সংশয়ে চিকিৎসকরা

এইচআইভিকে 'নিঃশব্দ মহামারি' বলেই ব্যাখ্যা করতে চান বিশেষজ্ঞরা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, নিঃশব্দে দেশে শক্তিশালী হচ্ছে এই 'মহামারি'। রাজ্যেও তার প্রকোপও বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আরেক হিসাব অনুযায়ী, গোটা দেশের ৬ শতাংশ এইচআইভি রোগী পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) বাসিন্দা। প্রতি কয়েক হাজার মানুষ নতুন করে এইচআইভি রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বাবা-মায়ের থেকে এই রোগ সন্তানদের মধ্যেও সংক্রমিত হচ্ছে। তাই এই রাজ্যে শিশুরাও এইচআইভি-তে আক্রান্ত হচ্ছে। যার জেরে জীবনভর তাদের এই রোগের যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। দেহের প্রতিষেধক ক্ষমতা খুব কম থাকে। এইচআইভি আক্রান্তরা যে কোনও রোগে খুব সহজেই কাবু হয়ে যান।

তবে, এ রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গর্ভাবস্থায় চিকিৎসা করলে অনেক সময়েই গর্ভস্থ শিশু এইচআইভি রোগ থেকে বাঁচানো যায়। ক্যালকাটা স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন-র চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন ধরেই এইচআইভি চিকিৎসা চালানোর পাশপাশি এইচআইভি নিয়ে সচেতনতা ও চালানো হচ্ছে। এক চিকিৎসকের কথায়, "মায়েরা সচেতন হচ্ছেন। নিজেরাই সময় মতো এসে চিকিৎসা করান। পরবর্তী প্রজন্মকে এই রোগের হাত থেকে বাঁচাতে চান। এটা নিঃসন্দেহে একটা ইতিবাচক দিক।"

আরও পড়ুন: শিক্ষক দিবসের দিন 'যন্ত্রণা' দিবস পালন করলেন বিক্ষোভরত হবু শিক্ষকরা

স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তার কথায়, স্কুল স্তর থেকেই এইচআইভি নিয়ে সচেতনতার কাজ হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্টে দেখাচ্ছে, ১৫ বছরের ঊর্ধ্বের মেয়েরা যৌন নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হচ্ছে। নিরাপদ যৌন সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল। তবে শুধু মেয়েরা সতর্ক হলেই চলবে না। ছেলেদেরও এই নিয়ে সচেতন হতে হবে, তবেই এই রোগের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করা যাবে। তবে, এ রাজ্যের ক্ষেত্রে একটা বড় সমস্যা হল পরিযায়ী শ্রমিক। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ ভারতে এ রাজ্যের একটি বড় অংশের পুরুষেরা কাজ করতে যান। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সেখানে নানান সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সেখান থেকেই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেক সময় কিন্তু বাইরে থেকে আক্রান্ত হয়ে এসে স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে মহিলারাও আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই এ রাজ্যে এইচআইভি সংক্রমণের বৃদ্ধি রুখতে মহিলাদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মহিলারা যদি নিরাপদ যৌন সম্পর্কে অধিক আগ্রহী হন, তাহলে তাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমবে। যার ফলে, এ রাজ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার ও কমবে। সেটাও যথেষ্ট ইতিবাচক দিক। 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles