মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরও একবার বন্যার কবলে আসাম (Assam Flood)। প্রাক-বর্ষার বৃষ্টিতে এক মাস আগেই বন্যার কবলে পড়েছিল উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। ফের জলের তলায় আসামের ১৫০০ গ্রাম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। লাগাতার বৃষ্টির জেরে বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমেছে। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।
প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্যজুড়ে ২৫ জেলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ১১ লক্ষ মানুষ। সদ্য গঠিত বাজলি জেলা সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
আরও পড়ুন: আসামে বন্যায় মৃত ২৪, ক্ষতিগ্রস্ত সাত লক্ষের বেশি মানুষ
কামরূপে বরোলিয়া নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। ফলে একটানা বৃষ্টির জেরে বরোলিয়া নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে। বরোলিয়ার জল বাড়তে শুরু করায় হাজো, চৌমুখাসহ একাধিক এলাকার গ্রাম জলের নীচে। রঙ্গিয়া এলাকার ৭৭টি গ্রাম জলের নীচে বলে জানা যাচ্ছে। যার জেরে ৪৪ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ বলে জানা যাচ্ছে। বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য রঙ্গিয়া এলাকায় আশ্রয় শিবির গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে একাধিক এলাকার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
বন্যার জেরে কামরূপ জেলা প্রশাসন স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি ডিমা হাসাও, বাজালি, নলবাড়ি, বোঙ্গাইগাঁও ও তামুলপুর জেলা প্রশাসনও স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্কুল বন্ধ রাখা হলেও পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন।
আরও পড়ুন: শুক্রবার থেকে কমতে পারে বৃষ্টি, বানভাসি আসামে মৃত ৯, ক্ষতিগ্রস্ত ৬ লক্ষ মানুষ
ধসের কারণে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর জেরে দক্ষিণ আসামের সঙ্গে মেঘালয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টানা দুদিন ধরে প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে গুয়াহাটির বিভিন্ন জায়গা থেকে ধসের খবর পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি একাধিক রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ভূমিধসের কারণে গীতানগর, সোনাপুর, কালাপাহাড়, নিজারাপার এলাকার একাধিক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাজ্যে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে জানানো হয়েছে, গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে আসামের ১৮টি জেলার ৩৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে বলে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। চলতি বছর বন্যায় এই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়াও বন্যার জেরে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উত্তর-পূর্বের বেশ কয়েকটি রাজ্য। মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, অরুণাচল প্রদেশেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পরিস্থিতি আরও আশঙ্কাজনক হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
আসামের গোপালপাড়ায় ধসে বাড়ি ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছে দুই শিশুর। বন্যার জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ডিমা হাসাও এবং উদলগিরির দুজনের। এছাড়াও বাকি রাজ্যগুলি মিলিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। উত্তর-পুর্বের রাজ্যগুলিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের।
+ There are no comments
Add yours