img

Follow us on

Monday, Sep 16, 2024

Waqf Act: "ওয়াকফ আইন সংশোধন করা হলে দেশ ভাগ হবে", হুমকি রাশিদির

Waqf Act Amendment: ওয়াকফ আইন সংশোধন নিয়ে বড় হুমকি দিলেন ভারতীয় মওলানা...

img

ভারতীয় মুসলমানদের খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন মওলানা! প্রতীকী ছবি।

  2024-08-06 14:52:07

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহর লাল নেহরুর রেখে যাওয়া ‘গ্যাঁজ’ উপড়ে ফেলতে সচেষ্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওয়াকফ আইন (Waqf Act) ১৯৯৫ সংশোধন করার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। আর তার পরেই হুমকি ধেয়ে এল মওলানা সাজিদ রশিদির দিক থেকে (Maulana Sajid Rashidi)। তিনি বলেন, “ওয়াকফ আইন সংশোধন করা হলে ভারতকে আর একটি বিভাজনের সম্মুখীন হতে হবে।” অবশ্য এই প্রথম নয়, রাশিদি মাঝেমধ্যেই হুমকি দেন ভারত ও হিন্দুদের।

ওয়াকফ অ্যাক্ট প্রণয়ন (Waqf Act)

১৯৫৪ সালে ওয়াকফ অ্যাক্ট প্রণয়ন করে নেহরু সরকার। পরে সেই আইন বার দুয়েক সংশোধন করা হয়। শেষবার সংশোধনী আনা হয় ১৯৯৫ সালে। সেটাই ফের সংশোধন করতে সোমবারই লোকসভায় পেশ হয়েছে বিল। এই বিলে চল্লিশটিরও বেশি বদল আনা হয়েছে। ২ অগাস্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দেওয়ার পরে বিলটি পেশ হয় লোকসভায়। এতদিন যে কোনও জমিকে ওয়াকফ বোর্ড তাদের সম্পত্তি বলে ঘোষণা করতে পারত। নয়া বিলে ওয়াকফ বোর্ডের এই ক্ষমতাই সীমিত করার কথা বলা হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এটাই গাত্রদাহের কারণ মওলানা সাহেবের। সেই কারণেই দেশে যাতে অশান্তির আগুন জ্বলে, তাতে ইন্ধন জোগাতে শুরু করেছেন তিনি।

মওলানার হুমকি

চাকরিতে সংরক্ষণকে কেন্দ্র করে উত্তাল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। ভারতের জনসংখ্যারও একটা বড় অংশ মুসলমান। অভিজ্ঞ মহলের মতে, সেই কারণেই হুমকি দেওয়ার জন্য এই ‘সন্ধিক্ষণ’-টিকেই বেছে নিয়েছেন রাশিদি। রাশিদি অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। বিলের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “এবার মুসলমানরা রাস্তায় নামবে। তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করবে।” বিল সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে রাশিদি আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপিকেও। তিনি বলেন, “একের পর এক বিভাজনমূলক ইস্যু এনে রাজনৈতিক সুবিধা পেতে চাইছে বিজেপি। রাম মন্দিরের পর তারা কাশী বিশ্বনাথ মন্দির বনাম জ্ঞানব্যাপী মসজিদ ও শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি ভার্সেস মথুরার ইদগাহের মতো নয়া বিভাজনমূলক সমস্যা খুঁজে পেয়েছে।” এর পরেই হুমকির সুরে এই মওলানা বলেন, “কৃষকরা যেভাবে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে তিনটি আইন বাতিল করেছে, একইভাবে এখন মুসলমানরাও রাজপথে নামবে। লড়াই করবে তাদের সাংবিধানিক অধিকারের জন্য।”

বিজেপিকে নিশানা

তিনি বলেন, “ওয়াকফ বোঝাটা গুরুত্বপূর্ণ। মুসলমান সম্প্রদায়ের সুবিধার জন্য সরকার সাংবিধানিকভাবে মুসলমানদের ওয়াকফের অধিকার দিয়েছে।” ফের একবার হুমকির সুরে রাশিদি বলেন, “এই মুহূর্তে মুসলমানরা নীরব। আমাদের সম্পত্তির একটা উল্লেখযোগ্য অংশ রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মালিকানাধীন। মুসলমানরা যদি তাদের অধিকার দাবি করতে শুরু করে, তাহলে পরিস্থিতি বদলে যাবে। তাই উদ্বেগে প্রশাসন।” অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, “মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কেবলই মুসলমানদের টার্গেট করছে। সেই রকমই বিল আনছে।” তিনি বলেন, “যে হিন্দুরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, তাঁদেরও ভাবতে হবে এই সরকার তাঁদের জন্যই বা কী করেছেন।” মুদ্রাস্ফীতি ও কর্মসংস্থান নিয়ে এই সরকার উচ্চবাচ্য করে না বলেও দাবি রাশিদির।

মওলানার গুণপনার শেষ কই!

মওলানা সাহেবের (Maulana Sajid Rashidi) গুণপনার শেষ নেই! এমন হুমকি এই প্রথম নয়, তিনি আগেও দিয়েছেন। অযোধ্যায় রাম মন্দির ভেঙে ফেলার জন্য (Waqf Act) মুসলমানদের উসকানি দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল ২০২০ সালের অগাস্টে। রাম মন্দিরের ভূমি পূজনের একদিন পর তিনি বলেছিলেন, “অযোধ্যায় যে রাম মন্দির এখনও তৈরি হয়নি, তা ভেঙে পুনর্নির্মাণ করা হবে মসজিদ।” বিতর্কিত এই মন্তব্যের দু’বছর পরে রশিদি ফের বেফাঁস মন্তব্য করেন ২০২২ সালে। উত্তরাখণ্ড সরকার সে রাজ্যের মাদ্রাসাগুলিকে আধুনিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তার প্রেক্ষিতেই মওলানা সাহেব বলেছিলেন, “প্রত্যেক রাজ্যে একটি করে মাদ্রাসা বোর্ড রয়েছে। মাদ্রাসাগুলি সরকারের অধীন। এই মাদ্রাসাগুলিতে সরকার ড্রেস কোড দিতে পারে, সিনেমা কিংবা গানও চালাতে পারে, যা খুশি তাই করতে পারে। কেউ তাদের বাধা দিতে পারে না।”

আরও পড়ুন: তাঁর আমলেই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পথ দেখিয়েছিলেন হাসিনা

এরপর তিনি বলেন, “তবে আপনাকে প্রাইভেট মাদ্রাসায় কিছু করতে দেব না। ভারতীয় মুসলমানরা প্রাইভেট মাদ্রাসা থেকে ৪ শতাংশ শিশুকে ধরে রেখেছেন মৌলভী ও মওলানা হওয়ার জন্য। তাই যদি তারা সেইসব মাদ্রাসায় হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করে, তবে সব ভারতীয় মুসলমান এর বিরোধিতা করবে। আমরা এই প্রাইভেট মাদ্রাসায় হস্তক্ষেপ করতে দেব না।” রাশিদি বলেন, “আমরা কখনওই সরকারের কাছ থেকে কিছু নিই না। আমাদের কারও কাছ থেকে কিছু নেওয়ার দরকারও নেই।...সরকার পরিচালিত মাদ্রাসাগুলিতে যা খুশি তাই করুন। তবে প্রাইভেট মাদ্রাসাগুলিকে স্পর্শ করবেন না।” তাঁর (Maulana Sajid Rashidi) হুমকি, “ভারত আগুনে পুড়ে যাবে।” ২০২২ সালেই ফের একবার ভারতীয় মুসলমানদের ওসকানোর চেষ্টা করেছিলেন রাশিদি। এই বছর রাজ্যের সাড়ে ৭ হাজার অস্বীকৃত মাদ্রাসায় সমীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। তখন মওলানা সাহেব মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে বলেছিলেন, “রাজ্যের তরফে যাঁরা সমীক্ষা করতে যাবেন, তাঁদের চপ্পল এবং জুতো দিয়ে স্বাগত জানান। ২০০৯ সালের আইন দিয়ে তাঁদের মারধর করুন।”

কাঠগড়ায় তুষ্টিকরণের রাজনীতি

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রাশিদির এই মন্তব্যের নেপথ্যে রয়েছে কংগ্রেস-তৃণমূলের প্রচ্ছন্ন প্রশয়। এই দুই রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় টিকে থাকতে নিরন্তর করে চলেছে তোষণের রাজনীতি। কেন্দ্রে কংগ্রেস জমানায় এবং বাংলায় তৃণমূল জমানায় প্রকাশ্যে মুসলমান তুষ্টিকরণের রাজনীতি চলছে। ওয়াকফ অ্যাক্ট প্রণয়ন করে যে বিষবৃক্ষের বীজ পুঁতেছিলেন নেহরু, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা পরিণত হয়েছে মহীরুহে। বস্তুত মুসলিম তোষণ করেই দশকের পর দশক ধরে দিল্লিশ্বর সেজে বসেছিল কংগ্রেস। উন্নয়নের স্লোগান দিয়ে কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে ধস নামিয়েছিলেন বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের কান্ডারি নরেন্দ্র মোদি। তার জেরেই ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসে বিজেপি সরকার।

কংগ্রেস-তৃণমূল

কেন্দ্রে যেমন তুষ্টিকরণের রাজনীতি করে চলেছে কংগ্রেস, তেমনি মুলমান সেন্টিমেন্টে নিরন্তর সুড়সুড়ি দিয়ে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার। ইমামদের ভাতা দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার। মুসলমানদের স্বার্থে যাতে ঘা না লাগে, তাই রামনবমীর মিছিলে মুসলিমরা হামলা চালালেও, সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। কংগ্রেস এবং তার ‘নাড়ি ছেঁড়া ধন’ তৃণমূলের এই তুষ্টিকরণের রাজনীতিতে একদিকে যেমন বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে মুসলমানদের, তেমনি সাহস বাড়ছে রাশিদির (Maulana Sajid Rashidi) মতো মানুষদের।

মোদি সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত মওলানার

রাশিদি যখন ভারতীয় মুসলমানদের খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন, তখন মোদি সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশিষ্ট শিয়া আলেম মওলানা ইয়াসুব আব্বাস। ওয়াকফ অ্যাক্টের সংশোধনীগুলিকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, “আইনের পরিবর্তনগুলি ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনবে। প্রবর্তন করবে জবাবদিহির। দুর্নীতির অবসানও ঘটবে। এবং এই জাতীয় সম্পত্তির আয় বাড়বে।” ইয়াসুব আব্বাস সাহেবের কথায় স্পষ্ট, ওয়াকফ সম্পত্তিতে দুর্নীতি হয় এবং তার অবসানও ঘটানো প্রয়োজন। সেই চেষ্টাই করছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। এহেন আবহে উসকানিমূলক বিবৃতি দিয়ে মুসলমানদের খেপিয়ে তুলছে চাইছেন রাশিদি! যার বিপদ সম্পর্কে হয় তিনি জানেন না, নয়তো না জানার ভান করে রয়েছেন।

কথায় বলে, শহরে আগুন লাগলে পিরের বাড়িও বাদ যায় না (Waqf Act)। অতএব, আগুন নিয়ে না খেলাই ভালো, তাই নয় কি?

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Tags:

congress

Mamata Banerjee

Madhyom

tmc

bangla news

Bengali news

hindu

muslim

maulana

news in bengali

Waqf Act Amendment

Waqf Act

Maulana Sajid Rashidi

Sajid Rashidi

Amendment

rashidi  threatens india


আরও খবর