চাকরি না পেয়েও জীবনযুদ্ধে রিয়া!
নিজের বাড়িতে অলংকার তৈরিতে ব্যস্ত রিয়া। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া শিখে, বড় বড় ডিগ্রি নিয়ে চাকরির (Employment) জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এরকম অসহায় যুবক-যুবতীর সংখ্যা এ রাজ্যে যত দিন যাচ্ছে, বেড়েই চলেছে। এঁদেরই মধ্যে কেউ কেউ মনের জোর নিয়ে নেমে পড়েছেন ব্যবসায়, খুলে ফেলেছেন চায়ের দোকান, হোটেল, এমনকি রাস্তার ধারে বসে সবজিও বেচছেন। রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা এবং চাকরির করুণ চিত্র একটা প্রজন্মকে ক্রমশ যেন হতাশার অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে। তবুও মনের জোর এবং লেগে থাকার মানসিকতা নিয়ে যাঁরা নিজে কিছু করার জন্য জীবনযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, তাঁদেরই একজন হলেন রিয়া। আসুন, জেনে নিই তাঁর লড়াইয়ের কাহিনি।
কীভাবে এগিয়ে চলেছেন রিয়া?
নদিয়ার কৃষ্ণনগর শক্তিনগরের বাসিন্দা রিয়া বিশ্বাস। বাংলায় এমএ পাশ করে আর পাঁচজন শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীর মতো তিনিও টিউশনকেই একমাত্র বেঁচে থাকার রসদ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই বুঝলেন, শুধু এই দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। তাই এর পাশাপাশি নিজের হাতে তৈরি করতে শুরু করলেন বিভিন্ন ধরনের জুয়েলারি। এমএ পাশ করার পর থেকেই চেষ্টা করছেন চাকরির (Employment)। কিন্তু ভাগ্য বিরূপ। তাই নিজের হাতে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে তৈরি করেন এই সমস্ত অলংকার। এখন যে কোনও উৎসবের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তোলা ট্রেন্ড। তাই সামনেই স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেশের পতাকার রঙের বিভিন্ন কারুকার্য এবং নকশা করা জুয়েলারি তৈরি করে বিক্রি করছেন তিনি। কোনও দোকানে নয়, সমস্ত জিনিসপত্র কিনে এনে বাড়িতে বসেই সেই সমস্ত জুয়েলারি বানিয়ে সরাসরি খরিদ্দারের কাছে বিক্রি করেন তিনি। শুধু স্বাধীনতা দিবসই নয়, আসন্ন বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো উপলক্ষেও বিভিন্ন ধরনের আধুনিক জুয়েলারি বানিয়ে বিক্রি করছেন। প্রথম দিকে সাধারণত শখের বসেই তিনি এই জুয়েলারি বানান। তবে ধীরে ধীরে তাঁর এই জুয়েলারির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন জায়গায়। নিজের ইচ্ছাশক্তি ও অদম্য জেদ থেকেই নিজের সঙ্গে আরও মানুষকে কর্মসংস্থান করে দেওয়ার আশায় রয়েছেন তিনি। কম পুঁজিতে অধিক লাভ এই ব্যবসায়। তাই অন্যদেরও স্বাবলম্বী হওয়ার পথ দেখাচ্ছেন রিয়া।
কী বলছেন রিয়া?
এ বিষয়ে রিয়া বিশ্বাস বলেন, চাকরি (Employment) না পেয়ে প্রথমে নেশা হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীকালে বাবা মারা যাওয়ার পর আর্থিক সংকটের কারণে এটা পেশায় পরিণত হয়। বাড়িতে দাদা রয়েছে, তিনিও কাজ করেন। কিন্তু তাঁর নিজস্ব সংসার রয়েছে। সেই কারণে কিছুটা যদি সবাইকে সাহায্য করতে পারি আর্থিক দিক থেকে, তার প্রচেষ্টাই চালাচ্ছি আমি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।