তাঁর সংগ্রহে রয়েছে একটি সাদা আমব্রেলা কাকাতুয়া, যার মূল্য প্রায় আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা
নানা ধরনের পাখিকে নিয়েই তাঁর সংসার। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশ-বিদেশের রঙবেরঙের পাখি (Exotic Birds) পুষেই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন দুর্গাপুরের এক পড়ুয়া অভিষেক রাম। নিজের আয়ের পাশাপাশি রাজ্য ও ভিন রাজ্যের বহু যুবককে রোজগারের দিশা দেখাচ্ছেন অভিষেক। বর্তমানে তাঁর পাখির সম্ভার চারশোরও অধিক। লক্ষ টাকা মূল্যের ম্যাকাও সহ আফ্রিকার জঙ্গল থেকে আনিয়েছেন নানা ওয়াইল্ড বার্ড। তাঁর সংগ্রহে রয়েছে একটি সাদা আমব্রেলা কাকাতুয়া, যার মূল্য প্রায় আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা। বিভিন্ন জেলা থেকে বহু কৌতূহলী মানুষ ভিড় জমায় তাঁর খামারে। ইতিমধ্যেই বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২০ থেকে ২৫ টি প্রজাতির পাখি সংগ্রহ করে তাক লাগিয়েছেন অভিষেক।
দক্ষিণ ভারত থেকেই ভাবনা শুরু
বাবা অশোক রাম পেশায় ফুচকা বিক্রেতা, মা গৃহবধূ। আর্থিক অনটনের সংসারে অভিষেক ও তাঁর দাদা বিবেক রামের বেড়ে ওঠা। তাঁর দাদা কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে গ্রাজুয়েশন করে অ্যানিমেশন নিয়ে কাজ করছেন। অভিষেকও সবেমাত্র গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। অভিষেক একজন দক্ষ ক্রিকেটার। ক্রিকেটের জন্যই তিনি গিয়েছিলেন দক্ষিণ ভারতে। তখনই তাঁর নজরে পড়ে একটি বার্ডস ফার্ম। যা দেখার পরেই অভিষেকের এমন ভাবনা মাথায় আসে। আগেও তিনি বদ্রি, ককটেল, লাভবার্ডস ইত্যাদি পাখি (Exotic Birds) পালন করতেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই উত্থান
এই ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে সেই সমস্ত পাখির (Exotic Birds) খাবার-দাবার, পরিচর্যা ইত্যাদির পাশাপাশি সঠিক পরিবেশ, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, প্রজনন প্রক্রিয়া, বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা ইত্যাদি ভিডিও'র মাধ্যমে তিনি তুলে ধরেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। বছর খানেকের মধ্যেই অভিষেকের তৈরি করা সেইসব ভিডিও অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে পশুপ্রেমীদের পাশাপাশি অসংখ্য দর্শকের কাছে। সেখান থেকেই রোজগারের দিশা দেখেন অভিষেক। আরও অনেকেই রোজগারের পথ খুঁজে পান তাঁর দেখানো রাস্তায়।
এরপর তিনি প্রায় আড়াই বছর ধরে এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, পড়াশোনা করেছেন। আর নিজের জমানো টাকায় এক এক করে কিনেছেন নানান নামিদামি পাখি (Exotic Birds)। ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে বর্তমানে তাঁর সংগ্রহে রয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার পাখি। সান কনিওর পাখির ব্রিডিং শুরু করে তিনি প্রথম উপার্জন করা শুরু করেন। বয়স অনুযায়ী এই পাখির দাম ৫ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এখন তাঁর মাসিক আয় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। অভিষেক রাম জানিয়েছেন, তিনি ২০১৪ সাল থেকে পাখি পালন শুরু করেন। ২০২২ সালে তিনি দুর্গাপুরের পারদই গ্রামে একটি বাড়ি তৈরি করেন। সেই বাড়ির ছাদেই তৈরি করেছেন বার্ডস ফার্ম হাউস। সেখানে রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। পাখিদের থাকার মতো পরিবেশ তৈরি করেছেন তিনি। একইসঙ্গে সেখানে পাখিদের ব্রিডিংও শুরু করেছেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।