ISRO Chandrayaan 3 Launch: শুরু হয়ে গেল ‘চন্দ্রযান ৩’ উৎক্ষেপণের কাউন্টডাউন, আর বাকি মাত্র ৭ দিন...
উৎক্ষেপণের আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি! ছবি সৌজন্য- ইসরোর ফেসবুক পেজ
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সব ঠিকঠাক চললে আগামী ১৪ জুলাই মহাকাশে পাড়ি দেবে ‘চন্দ্রযান ৩’ (Chandrayaan 3)। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর (ISRO) তরফে এমনটাই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসরো প্রধান এস সোমনাথ জানান, ১৪ তারিখ দুপুর ২টো ৩৫ মিনিট নাগাদ ‘চন্দ্রযান ৩’-কে সঙ্গে নিয়ে চাঁদের দেশে পাড়ি দেবে ভারতের বৃহত্তম রকেট। একইসঙ্গে, চাঁদের মাটিতে কবে অবতরণ করবে ‘চন্দ্রযান ৩’, তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সংস্থার তরফে।
Announcing the launch of Chandrayaan-3:
— ISRO (@isro) July 6, 2023
🚀LVM3-M4/Chandrayaan-3 🛰️Mission:
The launch is now scheduled for
📆July 14, 2023, at 2:35 pm IST
from SDSC, Sriharikota
Stay tuned for the updates!
আর মাত্র সাত দিনের অপেক্ষা। শুরু হয়ে গিয়েছে কাউন্টডাউন। তারপরই ফের চাঁদের মাটি ছোঁয়ার হাতছানি। সময় যত গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে উত্তেজনা। ততই চড়ছে আশার পারদ। ২০১৯ সালে ভারত ‘চন্দ্রযান ২’ উৎক্ষেপণ করেছিল। ল্যান্ডিংয়ের আগে, মিশন কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চন্দ্রযানের। চাঁদের বুকে আছড়ে পড়ে ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ ও রোভার ‘প্রজ্ঞান’। তারপর চার-চারটে বছর কেটে গিয়েছে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার পুরোদস্তুর প্রস্তুতি নিয়ে নামছে ইসরো। বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে সফট ল্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে। এস সোমনাথ বলেন, “আমরা চাঁদে সফট ল্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে সক্ষম হব।”
ইতিমধ্যেই, ‘চন্দ্রযান ৩’-কে (Chandrayaan 3) মহাকাশে বহনকারী রকেটের সাথে সংযুক্ত করেছে। গত বুধবার শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারে পুরোদমে প্রস্তুত ‘লঞ্চ ভেহিকল মার্ক ৩’ বা সংক্ষেপে ‘এলভিএম৩’ (LVM3)। প্রসঙ্গত, গত বছর অক্টোবরে ‘জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল মার্ক ৩’ বা ‘জিএসএলভি মার্ক ৩’ (GSLV Mark 3) রকেটের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘লঞ্চ ভেহিকল মার্ক ৩’। বুধবার, এই রকেটের মাথায় পেলোড সংযুক্ত করা হয়। এই পেলোডের মধ্যে রয়েছে ‘চন্দ্রযান ৩’ মডিউল। মূলত তিনটি জিনিস রয়েছে এই মডিউলে। একটি ল্যান্ডার, একটি রোভার ও একটি প্রোপালসন মডিউল। বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে এই পেলোড ফেয়ারিংয়ে ভর করে ‘চন্দ্রযান ৩’ মডিউল চাঁদের উপরে ১০০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। সেখান থেকে চাঁদের বুকে অবতরণ-পর্ব শুরু করবে ল্যান্ডার ও রোভার।
‘এলভিএম৩’ হলো ভারতের সবচেয়ে ভারী ও উন্নত প্রযুক্তির রকেট। রকেটটির ওজন ৬৪০ টন। দৈর্ঘ্য ৪৩.৫ মিটার, প্রস্থ ৪ মিটার। মাথায় অবস্থিত পেলোড ফেয়ারিংটি হলো ৫ মিটার ব্যাসের। লঞ্চ যানটি পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ‘লোয়ার আর্থ অরবিট’-এ (LEO) ৮ টন পর্যন্ত পেলোড বা সরঞ্জাম বহন করতে পারে। কিন্তু যখন ‘জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার অরবিট’ (জিটিও)-এর কথা আসে যা পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৫ হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত, তখন অনেক কম অর্থাৎ মাত্র চার টন পেলোড বহন করতে পারে ‘এলভিএম৩’। ‘চন্দ্রযান ৩’-এর (Chandrayaan 3) মোট ওজন ৩ হাজার ৯০০ কেজি। অর্থাৎ, প্রায় ৪ টনের কাছাকাছি। এর মধ্যে, শুধু প্রোপালশান মডিউলটির ওজনই ২ হাজার ১৪৮ কেজি।
🚀LVM3-M4/Chandrayaan-3🛰️ Mission:
— ISRO (@isro) July 5, 2023
Today, at Satish Dhawan Space Centre, Sriharikota, the encapsulated assembly containing Chandrayaan-3 is mated with LVM3. pic.twitter.com/4sUxxps5Ah
শুধু উৎক্ষেপণ নয়, একেবারে সম্ভাব্য ল্যান্ডিংয়ের দিনক্ষণও ঘোষণা করেছে ইসরো। অর্থাৎ, চাঁদের মাটি কখন ছোঁবে ‘চন্দ্রযান ৩’, তাও জানিয়ে দিয়েছে ইসরো। সংস্থার চেয়ারম্যান এস সোমনাথ জানান, ২৩ অথবা ২৪ অগাস্ট চাঁদের মাটিতে নিরাপদে চন্দ্রযানটিকে অবতরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। ইসরো সূত্রে খবর, ‘চন্দ্রযান ২’-এ ল্যান্ডার ও রোভারের যে নাম ছিল, এবারও তাই রাখা হয়েছে। ‘চন্দ্রযান ৩’ (Chandrayaan 3) চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে অনুসন্ধান চালাবে। চাঁদের ভূতাত্বিক অনুসন্ধান করা হবে। চাঁদের কিছু বিশেষ জায়গায় থার্মোফিজিক্যাল পদার্থ অনুসন্ধান, ল্যান্ডিং সাইটের আশেপাশে চন্দ্রের ভূমিকম্প, চন্দ্র পৃষ্ঠের প্লাজমা পরিবেশ এবং মৌলিক রচনা সংক্রান্ত কিছু তথ্যের সন্ধানে চলছে এই সাম্প্রতিক অভিযান। সোমনাথ জানান, সব ঠিকঠাক চললে আমরা সফট ল্যান্ডিং করব। রোভারের ৬টি চাকা রয়েছে। আনুমানিক ১৪ দিন পর্যন্ত কাজ করবে প্রজ্ঞান।
এর আগে চাঁদের মাটি স্পর্শ করতে সক্ষম হয়েছে বিশ্বের তিন দেশের তৈরি চন্দ্রযান। ‘চন্দ্রযান ৩’-এর (Chandrayaan 3) সফল উৎক্ষেপণ হলে সেই তালিকায় জ্বলজ্বল করবে ভারতের নাম। ভারতের কাছে বিশ্ব ইতিহাসের পাতায় নাম তোলার আরও একবার হাতছানি। আশায় বুক বাঁধছে আপামর ভারতবাসী।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।