Chandrayaan 4: সময় ঘোষণা হয়ে গেল, কবে মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছে ইসরোর শুক্রযান, চন্দ্রযান ৪, গগনযান মিশন?...
শিল্পীর কল্পনায় ইসরোর মহাকাশ স্টেশন। প্রতীকী চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর (ISRO) তরফ থেকে শুক্রযান, চন্দ্রযান ৪ (Chandrayaan 4), গগনযান এবং মহাকাশ স্টেশন নিয়ে ছয়টি মিশনের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য ভারতের এই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা লাগাতার অভিনব প্রয়োগের কৌশলকে বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপন করে অনন্য নজির গড়ছে। ইতিমধ্যে চন্দ্রযান ৩, আদিত্য এল-১ মিশনের সাফল্যে নাসার কাছেও ব্যাপক প্রশংসার পাত্র হয়েছে ইসরো। আসুন এবার থেকে জেনে নিই ইসরো তার ভবিষ্যৎ কর্মসূচি কীভাবে পরিকল্পনা করেছে।
শুক্রের রহস্য উন্মোচনের জন্য ইসরো (ISRO) শুক্রকে প্রদক্ষিণ করবে। এই কাজের জন্য একটি উপগ্রহ উৎক্ষেপণের জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে শুক্রযানকে। এই যানকে ২০২৮ সালে উৎক্ষেপণ করা হবে। শুক্রযান সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার এবং আল্ট্রাভায়োলেট ইমেজিং সিস্টেমের মতো উন্নত যন্ত্র দিয়ে সজ্জিত। শুক্রযান শুক্রের ঘন বায়ুমণ্ডল সম্পর্কে খোঁজ খবর করবে। মূলত কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং সালফিউরিক অ্যাসিডের সমন্বয়ে গঠিত ওই বায়ুমণ্ডলকে নিরীক্ষণ করবে। সেই সঙ্গে এই শুক্রের মিশনের মূল উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে একটি হল সক্রিয় আগ্নেয়গিরি সনাক্তকরণ করা এবং গ্রহের ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপের মূল্যায়ন করা। ইসরোর (ISRO) এই মিশনের পরিচালক নীলেশ দেশাই জানিয়েছেন, ভারত সরকার শুক্রযান উপগ্রহকে বিশেষ অনুমোদন দিয়েছে।
প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল সফট ল্যান্ডিং ঘটিয়ে ইসরো সারা বিশ্বে মান্যতা পেয়েছে। অবশ্য এই দক্ষিণ মেরুতে ভারত প্রথম সফল ভাবে অবতরণ করে বিশ্বের ক্ষমতাশীল দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে। ইসরো (ISRO) এবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুকে ফের লক্ষ্য করে জাপানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অবতরণ করবে। এই অভিযানের মাধ্যমে চাঁদের (Chandrayaan 4) মাটি, পাথর এবং খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান করবে। এই মিশনের অভিপ্রায় শুধু অবতরণ নয় সেই সঙ্গে চন্দ্রযানকে পৃথিবীর মাটিতে ফিরিয়ে আনাও মিশনের প্রধান অঙ্গ। অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে এই অভিযানের কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে। মিশনের পরিচালক দেশাই জানিয়েছেন, “যদি আমরা সরকারের ঠিকঠাক অনুমোদন পাই তাহলে আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে মিশনটি সফল ভাবে কার্যকর করব। আমরা এই মিশন নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী।”
মঙ্গলগ্রহে অভিযানের জন্য ইসরো (ISRO) মঙ্গল অরবাইটার মিশনের অন্তর্গত দ্বিতীয় মঙ্গলযান তৈরির কাজ করছে বলে ইসরো জানিয়েছে। তবে শুধুমাত্র মঙ্গলগ্রহ প্রদক্ষিণ নয়, এই লালগ্রহকে পরিক্রমা করে পৃষ্ঠদেশে অবতরণ করার চেষ্টাও একটা প্রধান অঙ্গ। মিশনের পরিচালক দেশাই বলেছেন, “মঙ্গল মিশনের একটি অংশ হিসেবে শুধু কক্ষপথের উপর আমাদের নির্মিত উপগ্রহকে রাখব না। বরং কীভাবে ভূ-মণ্ডলের উপর অবতরণ করা হবে সেই চেষ্টাও করা হবে। এই গ্রহকে নিয়ে আরও অনেক গবেষণা এবং তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।”
মহাকাশে মানুষ পাঠাবে ইসরো (ISRO)। গগনযান মিশনের এটি হবে একটি মাইলফলক মিশন। প্রথমে মানুষবিহীন ভাবে এই গগনযান পাঠানো হবে এরপর পরীক্ষামূলক সফলের মাধ্যমে মানুষবাহী মহাকাশযান পাঠানো হবে। এই মিশনের পরিচালক জানিয়েছেন, “আগামী ২ বছরের মধ্যে গগনযান পাঠানো হবে। মহাকাশের নানা অজানা তথ্য এবং খোঁজ পেতে এই মিশন ব্যাপক ভাবে কার্যকর হবে। তবে এই মিশনে দেশের জন্য সর্বাত্মক উৎসর্গ করা ভাবনাকে বিশেষ প্রধান্য দেওয়া হবে।”
ইসরো (ISRO) মহাকাশযানের মধ্যে ইনস্যাট ৪ সিরিজের পরবর্তী উপগ্রহর উৎক্ষেপণ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই মিশনে ভূমণ্ডলের আবহাওয়া, সমুদ্র সংক্রান্ত ক্ষমতার উন্নতি, দুর্যোগের পূর্বাভাস সহ একাধিক নানা তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করা হবে। এটি নতুন সেন্সর এবং অত্যাধুনিক স্যাটেলাইটের অঙ্গ।
আরও পড়ুনঃ উপত্যকায় সন্ত্রাস দমনে আরও সক্রিয় কেন্দ্র, জম্মুতে স্থায়ী মোতায়েন এনএসজি-র বিশেষ দল
ভারত সরকার একটি মহাকাশ স্টেশনের পরিকল্পনাকে অনুমোদন করেছে। তবে এটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে আকারে কিছুটা ছোট হবে। ইসরোর (ISRO) এই মহাকাশ স্টেশনে ৫টি মডিউল থাকবে। প্রথম মডিউলটি ২০২৮ সালের মধ্যেই চালু হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে ২০৩৫ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ স্টেশন চালু হয়ে যাবে বলে আশাপ্রকাশ করা হয়েছে।
দূরবর্তী গ্রহ অন্বেষণ থেকে শুরু করে মানুষের মহাকাশযান অগ্রসর করা পর্যন্ত, প্রতিটি মিশন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় অর্থপূর্ণ অবদান রাখার জন্য ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিনিয়ত প্রতিফলিত হচ্ছে। বর্তমান ভারত সরকার এবং ইসরোর পরিকল্পনা আগামী দিনে ভারতকে মহাশক্তিধর রাষ্ট্র এবং বিকশিত ভারতের দিকে যে এগিয়ে নিয়ে যাবে তা মহাকাশ বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।