গবেষকরা শুক্র গ্রহের সালফার ডাই অক্সাইড-সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রত্যাশিত মডেল তৈরি করেছেন।
শুক্র গ্রহ
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শুক্র গ্রহের (Venus) মেঘের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে সেখানে প্রাণের (Life) অস্তিত্ব না থাকার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of Cambridge) একটি গবেষণায় (Research) জানা গিয়েছে শুক্র গ্রহে সম্ভবত প্রাণের অস্তিত্ব নেই। গবেষণাটি একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে প্রাণের অস্বিত্ব থাকার মতো কোনও প্রমাণ মেলেনি গবেষণায়। গবেষণাটিতে বলা হয়েছে শুক্র গ্রহের মেঘের অদ্ভুত রাসায়নিক গঠন ব্যাখ্যা করা যাবে না সাধারণ তত্ত্ব দিয়ে।
বিজ্ঞানীরা শুক্রে উপস্থিত ঘন সালফার-সমৃদ্ধ মেঘের জৈব রসায়ন বিশ্লেষণ করেছেন। তিনজন গবেষকের দল: শন জর্ডন, অলিভার শর্টল এবং পল বি. রিমার "আঙ্গুলের ছাপ" খুঁজেছেন প্রাণের অস্বিত্বের প্রমাণ স্বরূপ। এমনকি তাঁরা কোনও খাওয়ার বা মলত্যাগের কোনও প্রমাণও খুঁজে পান নি।
গবেষকরা শুক্র গ্রহের সালফার ডাই অক্সাইড-সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রত্যাশিত মডেল তৈরি করেছেন। দেখা গিয়েছে গ্রহের পৃষ্ঠের কাছাকাছি মেঘে সালফার ডাই অক্সাইডের ঘনত্ব বেশি। তবে উচ্চতার সঙ্গে সঙ্গে তা হ্রাস পেয়েছে। বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন মেঘে বসবাসকারী জীবাণুগুলির কারণে সালফার ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমেছে। যাইহোক মডেলগুলি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে সেই সম্ভবনা নেই।
এক বিজ্ঞানী এ বিষয়ে বলেন, "শুক্রের বায়ুমণ্ডলে যেসব সালফার সমৃদ্ধ 'খাবার' রয়েছে সেগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। যদি এই 'খাবার' কোনো জীব গ্রহণ করে তবে নির্দিষ্ট রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তার প্রমাণ পাওয়া সম্ভব। প্রাণের অস্তিত্ব থাকলে সেখানে যে পরিমাণে রাসায়নিক পদার্থ নির্গমন হওয়ার কথা তা হয়নি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা শুক্রের মেঘে যে আলাদা ধরণের সালফার রসায়ন দেখি তা দুবছর ধরে ব্যাখ্যা করার চেষ্ঠা করেছি। কিন্তু প্রাণের সন্ধান মেলেনি।"
আরও পড়ুন: শুক্র গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব নেই, নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা
২০২০ সালে একদল বিজ্ঞানী দাবি করেন, শুক্র গ্রহের মেঘে ফসফিন গ্যাসের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন তাঁরা। এ থেকে এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে জল্পনা কল্পনা আরও জোরালো হয়।
এর আগে ষাটের দশকে জ্যোতির্বিজ্ঞানী কার্ল সাগান ও জীবপদার্থ বিজ্ঞানী হ্যারল্ড মরোইটজ শুক্র গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
আরও পড়ুন: সফলভাবে সিঙ্গাপুরের তিনটি উপগ্রহ কক্ষপথে স্থাপন করল পিএসএলভি-সি৫৩
শুক্র গ্রহের বায়ুমণ্ডলে সংঘটিত জটিল রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে সেখানে পৃথিবীর অনুরুপ সালফার-বেজড অনুজীবের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিলো। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ ও রসায়নবিদ পল রিমার বলেন, "শুক্র গ্রহের মেঘের মধ্যে যে অদ্ভুত রাসায়নিক প্রক্রিয়া ঘটে তা থেকে আমরা সেখানে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করেছি। প্রাণের সন্ধান মেলেনি"।