যুগান্তকারী ঘটনা! প্রথম চেষ্টাতেই বাজিমাত 'নাসা'-র 'ডার্ট মিশন'...
নাসা ডার্ট মিশন
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মহাজাগতিক বিস্ময়! পৃথিবীকে মহাজাগতিক বস্তু থেকে বাঁচাতে নাসা-র (NASA) ডার্ট মিশনের (DART Mission) প্রথম চেষ্টাই দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করল। গতকাল স্থানীয় সময় অনুসারে, সন্ধ্যে ৭টা ১৪ মিনিট নাগাদ গ্রহাণু ডিমরফস-এর (Dimorphos) সঙ্গে সংর্ঘর্ষ ঘটানো হয় নাসার ডার্ট মিশনের যানের। এর মাধ্যমে পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে গ্রহাণুটিকে সরিয়ে নিতে সফল হয়েছে নাসা। ফলে নাসার মিশন মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে এনে দিয়েছে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন।
IMPACT SUCCESS! Watch from #DARTMIssion’s DRACO Camera, as the vending machine-sized spacecraft successfully collides with asteroid Dimorphos, which is the size of a football stadium and poses no threat to Earth. pic.twitter.com/7bXipPkjWD
— NASA (@NASA) September 26, 2022
জানা গিয়েছে, গ্রহাণুটি পৃথিবীর কক্ষপথের কাছাকাছি ছিল এবং গতকাল এই অভিযানের সময় পৃথিবী থেকে ৭০ লক্ষ মাইল দূরে অবস্থান ছিল গ্রহাণুটির। নাসার ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডায়রেকশন টেস্ট (ডার্ট) মহাকাশযান সেটির উপর আছড়ে পড়ে। ফলে গ্রহাণুটির দিক কক্ষপথ থেকে বের করে দিতে সক্ষম হয়েছে মহাকাশযানটি। নাসার প্ল্যানেটারি সায়েন্স ডিভিশনের ডিরেক্টর লরি গ্লেজ বলেছেন, "আমরা একটি নতুন যুগের সূচনা করলাম। যে যুগে বিপজ্জনক গ্রহাণুর প্রভাবের থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করার ক্ষমতা আছে।"
আরও পড়ুন: আজই গ্রহাণুতে ধাক্কা নাসার ডার্ট মিশনের! সরাসরি সেই ভিডিও কখন, কোথায় দেখবেন?
প্রসঙ্গত, এই মহাকাশযানটিকে প্রায় ১০ মাস আগে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এই বিশেষ অভিযানের জন্য মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। গতকাল এই মহাকাশযনটি প্রায় ঘণ্টায় ২৩ হাজার ৫০০ কিলোমিটার গতিতে ডিমরফস-এর উপর আছড়ে পড়ে। ডিমরফস (Dimorphos) আয়তনে প্রায় ৫৩০ ফুট ও এর আকার মিশরের বৃহদাকার পিরামিডের মত। এতদিন এই গ্রহাণুটি ডিডিমস (Didymos) নামের গ্রহাণুকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছিল। ডার্ট এই ডিমরফস-এ আছড়ে পড়ার আগে এই গ্রহাণুর রুক্ষ্ম, পাথুরে পৃষ্ঠদেশ স্পষ্ট দেখা গিয়েছিল।
বিজ্ঞানীদের দাবি, ডিফরমস গ্রহাণুটি পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক না, বরং এই অভিযানের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হল যে, ডার্ট গ্রহাণুর দিক পরিবর্তন করতে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছেন, সংঘর্ষ হওয়ার পরে গ্রহাণুটি তুলনামূলক ছোট একটি কক্ষপথে গিয়ে পড়েছে তবে তার নির্দিষ্ট অবস্থান জানতে গ্রাউন্ড টেলিস্কোপ ব্যবহার করবেন বিজ্ঞানীরা। এ ছাড়াও, ডার্টের সঙ্গে লিসিয়াকিউব নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহও মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। ডার্ট গ্রহাণুর উপর আছড়ে পড়ার আগে লিসিয়াকিউব তার থেকে আলাদা হয়ে যায়। আগামী কয়েক মাস মহাকাশে ওই দুই গ্রহাণুকে (ডিমরফস ও ডিডিমস) পর্যবেক্ষণ করবে লিসিয়াকিউব ও সেই ছবি পাঠাবে নাসা-র বিজ্ঞানীদের। এর ফলে দুই গ্রহাণু থেকে সংগৃহীত পদার্থও সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য বিজ্ঞানীরা জানতে পারবেন ও তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারবেন।