NASA: সুনীতার ওজন দ্রুত স্থিতিশীল করা দরকার, দাবি নাসার এক কর্তার
মহাকাশে শীর্ণকায় সুনীতা উইলিয়ামস। সংগৃহীত চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ দিন ধরে মহাকাশে আটকে থাকায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে সুনীতা উইলিয়ামস (Sunita Williams) ও বুচ উইলমোরের। সম্প্রতি নাসার পক্ষ থেকে সুনীতার যে ক’টি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভোচরের স্বাস্থ্যের অবনতি লক্ষ করার মতো। এই পাঁচ মাসে তাঁর ওজন এতটাই হ্রাস পেয়েছে যে সুনীতাকে অত্যন্ত শীর্ণকায় লাগছে। তাঁর এতটাই ওজন হ্রাস পেয়েছে, যা চিন্তা বাড়িয়েছে নাসারও।
গত পাঁচ মাস ধরে মহাকাশযানের ছোট্ট গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ সুনীতা উইলিয়ামসের (Sunita Williams) দুনিয়া। এক দিন এক দিন করে মহাকাশে ১৫০ দিন পার করে ফেলেছেন সুনীতা ও তাঁর সঙ্গী বুচ। মহাকাশকে নিজের ‘হ্যাপি প্লেস’ বলে বর্ণনা করেছেন সুনীতা উইলিয়ামস। বোয়িং স্টারলাইনারের যান্ত্রিক ত্রুটি সত্ত্বেও কখনও পৃথিবীতে ফেরা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েননি। তবে তাঁর ওজন মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ায় চিন্তিত নাসা। এই মিশনের সঙ্গে জড়িত নাসার এক কর্মীর কথায়, ‘ওঁর চামড়া ঝুলে গিয়েছে এবং হাড় ক্ষয়েছে। বর্তমানে শরীরের ওজন স্থিতিশীল করা সর্বাপেক্ষা জরুরি।’ ওই কর্মীর সংযোজন, ‘সুনীতার সর্বশেষ ছবি দেখে আমি আঁতকে উঠেছিলাম। যা দেখলাম তাতে উদ্বেগ হওয়া খুব স্বাভাবিক। বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’ সুনীতার ওজন দ্রুত স্থিতিশীল করা দরকার এবং এই মুহূর্তে তাঁদের স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন নাসার ওই কর্তা।
সুনীতার স্বাস্থ্যের উপর কড়া নজর রাখছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। মহাকাশ যাত্রা শুরুর সময় গত ৫ জুন সুনীতার (Sunita Williams) ওজন ছিল ৬৩ কেজি। দিন যতই গড়িয়েছে ওজন ক্রমেই কমেছে সুনীতার। মহাকাশে ওজন স্থিতিশীল রাখতে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেতে হয় মহাকাশচারীদের। শুধুমাত্র ওজন বজায় রাখার জন্য মহাকাশ সফরের সময় প্রতি দিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার ক্যালোরির খাবার খেতে হয় নভোচরদের। সেই পরিমাণ খাবার শরীরকে না দিলে শরীর ভাঙতে শুরু করে ও দ্রুত ওজন কমতে থাকে।
আরও পড়ুন: নিমেষে ধ্বংস হবে হাজার কিমি দূরের যুদ্ধজাহাজ, ডিআরডিও-র নয়া মিসাইলের পরীক্ষা শীঘ্রই
মহাকাশ ভ্রমণের সময় বিপাকের পরিবর্তনের কারণে পুরুষ নভোচরদের তুলনায় দ্রুত পেশি ক্ষয় অনুভব করেন মহিলা মহাকাশচারীরা। শরীরের ওপর অভিকর্ষের নিরবচ্ছিন্ন টান না থাকায় মহাকাশে মানবদেহের পেশি ও হাড়ের ঘনত্ব দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। দুই সপ্তাহ পরেই পেশির ঘনত্ব ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। ছয় মাস থাকলে তা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। খুব বেশি দিন মহাকাশে থাকলে দ্রুত হারে কমতে থাকে লাল রক্তকণিকার পরিমাণ। সে ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে রক্তাল্পতার মতো শারীরিক সমস্যাও। গবেষণা বলছে, মহাকাশে থাককালীন প্রতি সেকেন্ডে ২ লক্ষের বদলে ৩ লক্ষ লোহিত কণিকা ধ্বংস হয়ে যায় নভোচরদের। পৃথিবী থেকে ৪০০ কিলোমিটার উপরে আইএসএসে রয়েছেন সুনীতারা। সেখানে বসেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন তিনি। নিজের শারীরিক সমস্যা নিয়েও চিন্তিত নন সুনীতা। মহাকাশেই ঘর বানিয়েছেন তিনি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।