ঘণ্টায় প্রায় ২৮০০ কিলোমিটারের বেশি বেগে পৃথিবীকে ৯০ মিনিটে একবার প্রদক্ষিণ করছে!
আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের ফাইল চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আমাদের পৃথিবী ভেসে আছে এক মহাশূন্যে, আর সেই মহাশূন্যে লুকিয়ে আছে অজস্র রহস্য। সেইসব রহস্য ভেদ করতে পৃথিবীতে আছে অনেক স্পেস স্টেশন, যেখান থেকে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর বহির্জগৎ নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা করে চলেছেন। কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে, পৃথিবীর বাইরে অর্থাৎ মহাকাশেও আছে ভাসমান স্পেস স্টেশন, যেগুলি পৃথিবীকে প্রতিনিয়ত প্রদক্ষিণ করে চলেছে এবং মহাশূন্য থেকে বিভিন্ন গবেষণা করে চলেছে? ঠিক এরকমই একটি বৃহৎ আকারের স্পেস স্টেশন হল ISS বা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন। এই স্পেস স্টেশনটি বিজ্ঞানীদের বসবাসযোগ্য এবং সেখানে অর্থাৎ মহাশূন্যে থেকেই বিজ্ঞানীরা গবেষণা করতে পারেন।
এই ISS বা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন হল এখনও পর্যন্ত মহাকাশে ভাসমান সবথেকে বড় একটি স্পেস স্টেশন। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের মূল উদ্দেশ্য হল, মহাকাশ বিষয়ক যে কোনও বিষয়বস্তুকে আরও কাছে থেকে গবেষণা করা। মাইক্রোগ্র্যাভিটি, মহাকাশে মানুষের অভিযান, পৃথিবীর আবহওয়া ও বিভিন্ন ভৌগোলিক বিষয়বস্তু নিয়ে গবেষণা করা। ১৬টি দেশের সহযোগিতা ও প্রচেষ্টার ফসল এই ISS। এর মহাকাশ যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৮ সালের ২০ নভেম্বর কজাকাস্তানের বাইকোনুর কসমোড্রাম লঞ্চ সাইটের একটি লঞ্চ প্যাড থেকে।
এর (ISS) ওজন প্রায় ৪৫০ টনের কাছাকাছি। কিন্তু একদিনে এত বড় স্পেস স্টেশন পূর্ণতা পায়নি, পর পর ১২ বছর ধরে ৩০টিরও বেশি মিশনের মাধ্যমে পূর্ণতা পায় আইএসএস। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ২৮০০ কিলোমিটারের বেশি বেগে পৃথিবীকে ৯০ মিনিটে একবার প্রদক্ষিণ করছে এটি, যা শুনলেই অবাক হতে হয়। এটি একদিনে ১৬ বার প্রদক্ষিণ করে পৃথিবীকে। পৃথিবীর লোয়ার আর্থ অরবিটে মাত্র ৪৮০ কিলোমিটার দূরত্বে এটি পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। ১৫০ বিলিয়নের বেশি মার্কিন ডলার খরচে তৈরি এই স্পেস স্টেশন ২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী ইতিহাসের তৈরি সবথেকে ব্যয়বহুল বস্তু। এতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন কানাডা, ইউরোপিয়ন স্পেস এজেন্সি, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের বিজ্ঞানীরা, যাঁরা ISS এর মধ্যে থেকে তাঁদের গবেষণার কাজ করেন।
রাতের আকাশে চোখ মেললে দেখা যায় ISS?
হ্যাঁ, ঠিকই তাই। খোলা চোখে পৃথিবীতে বসেও আমরা দেখতে পাই এই ISS কে। অনেক সময় রাতের আকাশে চোখ রাখলে দেখা যায়, আলোকিত উজ্জ্বল তারার মতো একটি বস্তু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভেসে চলেছে। সেটিই ISS যা অনেক সাধারণ মানুষই নজর করেছেন।
গত এক দশকে মহাকাশ গবেষণায় ও মহাকাশের বিভিন্ন অজানা তথ্য জানতে এই ISS অসামান্য ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু সম্প্রতি জানা গেছে, এর ভবিষ্যৎ রয়েছে অনিশ্চয়তার মধ্যে। ২০২৪ সালের পর নাসা এই ISS খাতে আর কোনও অর্থ বিনিয়োগ করবে না বলে জানিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৬০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে নাসা ১০০ বিলিয়ন ডলার নিজে ব্যয় করেছে। ফান্ডিং-এর সংকটের কারণে ২০২৮ সালের পর শেষ হতে চলেছে এই কালজয়ী মহাকাশ স্টেশনের যাত্রা, ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনটাই ঘোষণা করেছিলেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।