মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রতিকূল আবহাওয়ায় (Hostile Weather) ব্যাহত উদ্ধার কাজ। প্রবল বৃষ্টি ও ধসের জেরে উত্তর সিকিমে এখনও আটকে ১২১৫ জন পর্যটক। সোমবার থেকে তাঁদের নামানোর কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে গেল আবারও৷ মঙ্গলবার থেকে উদ্ধার কাজ শুরু হবে বলে রবিবার রাতে জানিয়েছে সিকিম প্রশাসন। আগামী ২৪ ঘণ্টা আটকে পড়া পর্যটকদের পাহাড়ি রাজ্যেই নিরাপদে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের যাতে কোনও অসুবিধা না-হয় সেজন্য হোম স্টে, হোটেল মালিক ও ট্যুর অপারেটরদেরও কড়া নির্দেশ দিয়েছে সিকিম (Sikkim) সরকার।
আতঙ্কে দিন গুজরান পর্যটকদের
উত্তর সিকিমে (Sikkim) আটকে থাকা পর্যটকদের মধ্যে রয়েছে প্রায় শতাধিক শিশু ও বয়স্ক মানুষ। তাঁদের কারও ওষুধ নেই, তো কারও পকেটে অর্থ নিঃশেষিত। এই অবস্থায় যত দিন বাড়ছে ততই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। পাহাড়ের ওপরে খাবারেরও সংকট দেখা গিয়েছে। মোবাইলের নেটওয়ার্কও না-থাকায় যোগের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। পে-টিএম বা জি-পেও করা যাচ্ছে না। চারিদিকে জল কিন্তু পানীয় জলের অভাবের কথা শোনা যাচ্ছে। সিকিম প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছ, মঙ্গলবার আবহাওয়ার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে উদ্ধার কাজ শুরু হবে।
#Sikkim: The evacuation of more than 1,200 tourists stranded in the Mangan district to begin today.
— All India Radio News (@airnewsalerts) June 17, 2024
District Magistrate of Mangan, Hem Kumar Chettri, stated that the evacuation process would take place either by air or road if the weather permitted. BRO has been working to… pic.twitter.com/11TiRe1VL9
পায়ে হেঁটেই নামতে হবে!
প্রশাসনের ঘোষণায় আরও বেশি আতঙ্ক ছড়িয়েছে পর্যটকদের মধ্যে। টানা বৃষ্টিতে (Hostile Weather) পর্যটকদের এয়ারলিফট করে উদ্ধারের কথা ছিল বায়ুসেনার। কিন্তু পাহাড়ে টানা বৃষ্টি ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে এয়ারলিফট করা কোনওভাবে সম্ভব নয়। এরপর সিকিম প্রশাসন রবিবার সকালে ট্রাভেল এজেন্ট, হোটেল মালিক ও ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক করে ৷ সেই বৈঠকের পরই আটকে থাকা পর্যটকদের টুং হয়ে মঙ্গন পর্যন্ত পায়ে হেঁটে নিয়ে আসার কথা জানানো হয়েছে। দিনভর বৃষ্টি। সঙ্গে ঘন কুয়াশা। দৃশ্যমানতা কমে গিয়েছে কোথাও একশো কিংবা দু'শো মিটার। এই পরিস্থিতিতে লাচুংয়ে আটকে পড়া পর্যটকদের ফেরাতে হেলিকপ্টারের উপরে ভরসা করা যাচ্ছে না। লাচুং (Sikkim) থেকে পর্যটকেরা গাড়িতে টুং পর্যন্ত আসবেন। সেখান থেকে ১৭ কিলোমিটার পথ হেঁটে তাঁদের পৌঁছতে হবে মঙ্গনে। তারপর পর্যটন সংস্থার গাড়িতে চেপে তাঁদের গ্যাংটকে ফিরতে হবে। পাহাড়ি রাস্তায় ১৭ কিলোমিটার হেঁটে মঙ্গনে ফেরা আদৌ সম্ভব কি না তা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।
আরও পড়ুন: “হিংসা শিক্ষার বিষয় হতে পারে না”, সাফ জানালেন এনসিইআরটি কর্তা
নতুন করে ধস
গত ১০ জুন থেকে সিকিমে (Sikkim) ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। উত্তর সিকিমে সেতু ভেসে গিয়েছে। ধস নেমে বাড়ি ভেঙেছে। শতাধিক মানুষ নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছে। ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ে ঘোর বিপাকে পড়েছেন উত্তর সিকিমে বেড়াতে যাওয়া ১২১৫ জন পর্যটক। তার মধ্যে অন্তত সাতশো বাঙালি রয়েছেন। যাঁরা লাচুংয়ে ছিলেন, তাঁরা হোটেলে রাত কাটিয়েছেন। যাঁরা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে মাঝপথে আটকা পড়েছেন, তাঁরা হোটেল না-পেয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন চুঙথাঙের একটি গুরুদ্বারে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের গ্যাংটক শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, সিকিমের আবহাওয়ার দ্রুত উন্নতির সম্ভাবনা কম। পাহাড়ের একাধিক জায়গায় নতুন করে ধস নেমেছ। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সিকিমে বৃষ্টির লাল সঙ্কেত জারি করা হয়েছে।
#WATCH | A road connecting Mangan district with other districts of Sikkim washed away after the landslide, visuals from Lal Bazar.
— ANI (@ANI) June 17, 2024
(Source: Local) pic.twitter.com/a1K2r1unAy
দার্জিলিঙেও ধস
ভারী বৃষ্টি (Hostile Weather) হচ্ছে দার্জিলিং এবং কালিম্পঙেও। শিলিগুড়িতে মহানন্দা ও বালাসন নদী ফুলে উঠেছে। গোটা দার্জিলিং পাহাড়ি এলাকা জুড়েই বিক্ষিপ্ত ভাবে ধস নেমেছে। কার্শিয়ঙের সিটংয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ। এই অবস্থায় আপাতত পাহাড়ে যাওয়া থেকে পর্যটকদের কয়েকদিন বিরতি নিতে অনুরোধ করছেন বিভিন্ন ভ্রমণ সংস্থা ও প্রশাসন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours