অচিন্ত্যর বাবা পেশায় ছিলেন ভ্যানচালক। ৯ বছর আগে মারা যান বাবা। তারপর থেকেই টানাটানির সংসার। জরির কাজ করে সংসার চালান মা।
দাদার সঙ্গে অচিন্ত্য।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাবা ছিলেন ভ্যানচালক। মা জরির কাজ করে সংসার চালান। একেবারেই নিম্ন-মধ্যবিত্ত সংসার। সেখান থেকে কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জয়। কঠিন পথে স্বপ্নপূরণ পাঁচলার ছেলে অচিন্ত্য শিউলির। রবিবার মধ্যরাতে (ভারতীয় সময় অনুসারে) পাঁচলার দেউলপুরের শিউলি পরিবারে তখন উৎসবের আমেজ। ঘরের ছেলে সোনা জিতেছে যে! ২০ বছর বয়সি অচিন্ত্য শিউলি পুরুষদের ৭৩ কিলোগ্রাম ভারোত্তলন বিভাগে সোনার পদক জয় করলেন। অচিন্ত্য স্ন্যাচ বিভাগে ১৪৩ কেজি ওজন তুলেছেন। পাশাপাশি ক্লিন অ্যান্ড জার্ক বিভাগে তিনি ১৭০ কিলোগ্রাম ওজন তুলে দেশের হয়ে এক নয়া ইতিহাস কায়েম করলেন। মোট ৩১৩ কেজি ওজন তুলে দেশকে সোনা এনে দিলেন অচিন্ত্য।
এখন হাওড়ার অচিন্ত্যকে চেনে গোটা দেশ। কিন্তু লড়াইটা সহজ ছিল না। সোনা জয়ের পর জানালেন অচিন্ত্য। বললেন, "বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে দাদাই আমার জন্য সবকিছু করেছে। আর তাই এই পুরস্কার আমি আমার দাদা এবং কোচকে উৎসর্গ করতে চাই। দাদা নিজে ওয়েট লিফটিং করত। কিন্তু আমার দিকে তাকিয়ে ও ছেড়ে দিয়েছে।"
আরও পড়ুন: কমনওয়েলথ গেমসে রেকর্ড গড়ে সোনা জিতলেন বাংলার অচিন্ত্য, মণিপুরের জেরেমি
অচিন্ত্যর বাবা পেশায় ছিলেন ভ্যানচালক। ৯ বছর আগে মারা যান বাবা। তারপর থেকেই টানাটানির সংসার। জরির কাজ করে সংসার চালান মা। ২০১১ সালে দাদা অলোকের হাত ধরেই অষ্টম দাসের কাছে ভারোত্তলন প্রশিক্ষণ নিতে যান অচিন্ত্য। ২০১৩ সালে দুইভাই একসঙ্গে ন্যাশানাল ভারোত্তলক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এরপর ভাইকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য খেলা ছেড়ে দেন দাদা। মা ও দাদা মিলে টানতে থাকেন সংসার। সঙ্গে ভাইয়ের খেলার খরচ। তাই পুরস্কার জিতে তা দাদাকেই উৎসর্গ করলেন অচিন্ত্য।
সোনা জিতলেও, পুরস্কার গ্রহণ করতে এসে খানিকটা হতাশই দেখাল পাঁচলার এই ওয়েট লিফটারকে! কিন্তু কেন? প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন, "এই লড়াইটা ছিল আমার নিজের সঙ্গে। সোনা জিততে আমি আসিনি। এসেছিলাম নিজের রেকর্ডটা টপকে যেতে। চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু, শেষপর্যন্ত সেটা আর করতে পারলাম না। তাই খানিকটা খারাপই লাগছে।"