‘ফিফা’ ম্যাগাজিনের পাঠক এবং জুরি বোর্ডের বিচারে তিনিই বিংশ শতাব্দীর ‘শ্রেষ্ঠ’ ফুটবলার।
ফুটবল সম্রাট পেলে।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চলে গেলেন ফুটবল সম্রাট পেলে। হার না মানা মানসিকতা নিয়ে যেমন ফুটবল ময়দান দাপিয়ে বেড়াতেন তেমনই জীবনযুদ্ধে লড়াই চালালেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। মারণরোগ ক্যান্সারের সঙ্গে চোয়ালচাপা লড়াইয়ের পরে শেষমেশ হার মানলেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে মাত্র ৮২ বছর বয়সে ইহলোক ত্যাগ করলেন কিংবদন্তি ফুটবলার। এবার তারাদের সঙ্গে ফুটবল খেলার পালা। তিনবারের বিশ্বকাপজয়ীর মেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পিতার মৃত্যুর খবর জানান। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া সারা ফুটবল বিশ্বে।
বিশ্ব ফুটবলের প্রথম মহাতারকা পেলে। তিনিই বিশ্বের একমাত্র ফুটবলার যিনি তিন বার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন। প্রয়াত হলেন বিশ্বকাপের পরেই। ২০২১ সাল থেকে অন্ত্রের ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন পেলে। ৮২ বছরের পেলে চেয়েছিলেন মাঠে বসে কাতার বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখবেন। শরীর সায় দেয়নি। সেই কাতার, যেখানে ১৯৭৩ সালে প্রথমবার স্যান্টোসের হয়ে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। শরীরে মারণ রোগের থাবা। তার উপর হৃদযন্ত্রে সমস্যা। হাসপাতালেই থাকতে হয়েছিল তাঁকে। কাতার বিশ্বকাপের সময় শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ২৯ নভেম্বর তাঁকে সাও পাওলোর অ্যালবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ২২ ডিসেম্বর ক্যানসারের প্রকোপ হঠাৎ বেড়ে যায়। ডাক্তারদের পরামর্শ মেনে বাড়ি ফেরা হয়নি। বড়দিনে বিছানায় অসুস্থ বাবাকে জড়িয়ে ধরে ছবি পোস্ট করেছিলেন তাঁর কন্যা মেয়ে কেলি। গত শনিবার হাসপাতালে গিয়েছিলেন তাঁর ছেলে এডিসনও। কয়েকদিন ধরে পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে তাঁর পাশেই ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। চিরনিদ্রার দেশে পাড়ি জমালেন পেলে।
আরও পড়ুন: প্রয়াত নরেন্দ্র মোদির মা হীরাবেন মোদি, মাতৃবিয়োগের খবর ট্যুইটে জানালেন প্রধানমন্ত্রী
পেলের জন্ম ১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর। বাবার দেওয়া নাম এডসন আরান্তেস দি নাসিমেন্তো। ১৯৫৮ সালে ব্রাজিলের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন। পর পর চারটি বিশ্বকাপে খেলেছিলেন কিংবদন্তি। তার মধ্যে তিন বার চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। বিশ্বের আর কোনও ফুটবলারের এই নজির নেই। ‘ফিফা’ ম্যাগাজিনের পাঠক এবং জুরি বোর্ডের বিচারে তিনিই বিংশ শতাব্দীর ‘শ্রেষ্ঠ’ ফুটবলার। তবে ইন্টারনেটে সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের ভোট গিয়েছিল দিয়েগো মারাদোনার পক্ষে। ফিফা শেষ পর্যন্ত যুগ্ম ভাবে শতাব্দীসেরা ঘোষণা করে দু’জনকেই। দিদি-ভাভার ব্রাজিল যে সুন্দর ফুটবলের জন্ম দিয়েছিল, তাকেই লালন-পালন করে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন পেলে-গ্যারিঞ্চা।