Google Report: মোদি জমানায় ভারতীয় ক্রীড়া শিল্পে এসেছে বিরাট জোয়ার, বলছে গুগলের সমীক্ষা...
ভারতে ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নতির জোয়ার। সংগৃহীত চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ক্রিকেট থেকে ফুটবল, হকি থেকে কাবাডি, তীরন্দাজি, ব্যাডমিন্টন, টেনিস, দাবা ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারত (India’s Sports Industry) এখন উল্লেখযোগ্য নাম। মোদি সরকারের হাত ধরে ক্রিকেট-ফুটবলের বাইরেও ছোট বড় অন্য নানা খেলার উন্নতি ঘটেছে। ভারতের ক্রীড়া শিল্প ২০২৩ সালে ৫২ বিলিয়ন (৫ হাজার ২০০ কোটি) ডলার থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৩০ বিলিয়ন (১৩ হাজার কোটি) ডলারে উন্নীত হতে চলেছে। সম্প্রতি গুগলের একটি গবেষণায় এই ভারতীয়দের মধ্যে ক্রমে ক্রিকেট-ফুটবল ছাড়াও নানা খেলার দিকে আগ্রহ বাড়ছে। যা বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিচ্ছে।
খেলাধুলা (India’s Sports Industry) সব সময়ই মানবজাতির বিকাশ ঘটায়। জাতীয় গর্ব ও ঐক্যের অনুভূতি তৈরি করে। পাশাপাশি, একজন ব্যক্তির স্বাস্থ্য শৃঙ্খলা ও নেতৃত্ব দানের ক্ষমতার বিকাশ ঘটায়। ভারতের খেলাধুলার প্রচলন শুরু হয় সিন্ধু সভ্যতার যুগে অর্থাৎ আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে। সেই যুগের পাওয়া বিভিন্ন সিলমোহর থেকে প্রাচীন কালে খেলাধুলার চর্চার প্রমাণ পাওয়া যায়। জানা গিয়েছে প্রাচীন সেই সমস্ত মুদ্রার মধ্যে দাবা, পাশা খেলা, পশু শিকার এবং বক্সিং যা বৈদিক যুগে দেহবাদ নামে পরিচিত ছিল। এই সমস্ত খেলার নিদর্শন পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, প্রাচীন ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারতেও পাশা খেলার উল্লেখ রয়েছে। এই প্রাচীন কাব্যগ্রন্থ গুলিতে আরও বিভিন্ন ধরনের শারীরিক কসরত দৌড়, তীরন্দাজ, ঘোড়দৌড়, সামরিক কৌশল, ভারোত্তোলন, শিকার, সাঁতার এবং বল খেলার উল্লেখ পাওয়া যায়। যা থেকে উপলব্ধি করা যায় যে সেই সময়ে এই খেলাগুলি যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। মধ্যযুগীয় কালে নালন্দা তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পেহেলওয়ানী অর্থাৎ কুস্তি প্রচলন হয়। এমনকী, মনে করা হয় সাপ লুডো, তাস খেলা, কুস্তি, পোলো, তীরন্দাজি সব খেলাগুলির উৎপত্তি হয় ভারতে। পরবর্তীকালে তা বিদেশে প্রেরণ করা হয় সেখান থেকেই তাদের আধুনিকীকরণ ঘটে।
গুগল ইন্ডিয়ার তরফে রোমা দত্ত চৌবে বলেন, “এটি ভারতের খেলাধুলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আমরা মাল্টি-স্পোর্ট ফ্যানডমের বৃদ্ধি, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা এবং ভারতের ক্রীড়া অনুরাগীদের বৃহত্তম অংশের প্রতিনিধিত্বকারী জেনারেশন জেডের (জেন জি) গভীর সম্পৃক্ততা প্রত্যক্ষ করছি৷ এই প্রবণতাগুলি ব্যবসার জন্য উদ্ভাবন, উৎসাহী অনুরাগীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং বাস্তুতন্ত্র জুড়ে বৃদ্ধির জন্য অনন্য সুযোগ উপস্থাপন করে।"
ভারতে খেলার জনপ্রিয়তা প্রসঙ্গে রোমা জানান, ৭০ শতাংশ ভারতীয় ক্রিকেট খেলা পছন্দ করেন। তাঁদের মধ্যে আবার অনেকে অন্য খেলার প্রতিও আকৃষ্ট। ভারতে (India’s Sports Industry) অধিকাংশ মানুষ খেলার প্রতি আকৃষ্ট। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার এখন ছোট ছোট খেলাগুলোকেও প্রচারের আলোয় আনার চেষ্টা করছে। অধিকাংশ ভারতীয় এখন ২০ শতাংশ বেশি সময় ব্যয় করে নন-লাইভ (রেকর্ডেড) সম্প্রচার যেমন হাইলাইটস এবং শর্ট-ফর্ম ভিডিওতেও খেলা দেখেন। এর ফলে জিডিপি বাড়ছে।
গবেষণা বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারতে ১ কোটির বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বাড়বে রাজস্বের হারও। ২০৩০ সালের মধ্যে ২১০০ কোটি ডলার পরোক্ষ কর রাজস্ব উৎপন্ন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ক্রীড়া সামগ্রী এবং পোশাকের বাজার দ্বিগুণ ৫৮০০ কোটি ডলার হবে, যা ফিটনেস-সচেতন জনসংখ্যার দ্বারা চালিত হবে এবং পছন্দের দলগুলির পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন: ভারত-জাপান বিশেষ প্রতিরক্ষা-চুক্তি, নৌসেনার রণতরীগুলিতে বসবে ‘স্টেলথ’ মাস্তুল
ভারতীয় ক্রিকেটে মিলিয়ন ডলার ক্রিকেট লিগ নামে পরিচিত আইপিএল। এই লিগের এতটাই জৌলুশ এবং বিশ্বব্যাপি দাপট যে বহুদেশই ওই সময় ক্রিকেটারদের ছেড়ে দেন আইপিএলে খেলতে, শুধু তাই নয়। ক্রিকেটারদের তাঁরা জাতীয় দলেও রাখেন না। ২০২৩ সালে আইপিএল থেকে আয়ের অঙ্ক ছিল ৫১২০ কোটি টাকা। এর আগে বছর পর অর্থাৎ ২০২২ সালের আইপিএলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এই লিগ থেকে আয় করেছিল ২৩৬৭ কোটি টাকা, অর্থাৎ এক বছরে ২০২৩ সালে আয়ের শতাংশ ১১৬ গুন বৃদ্ধি পায়। আইপিএল ভারতের ক্রীড়াক্ষেত্রে সম্প্রচার অধিকার এবং স্পনসরশিপ আয়ও নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) একাই বছরে ১২০ কোটি ডলার উপার্জন করছে। আইপিএল-এর সাফল্য দেখে ধীরে ধীরে ভারতে চালু হয়েছে ফুটবল লিগ আইএসএল, খেলো কাবাডির মতো টুর্নামেন্ট।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।