বিশ্বকাপ শেষের পথে। কাতারে এখন 'খেলা ভাঙার খেলা'।
কাতার: ফাঁকা স্টেডিয়াম।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিঃসঙ্গ কাতার। বিশ্বকাপ শেষের পথে। গ্রুপ পর্যায়ের পর থেকে ধীরে ধীরে খালি হতে শুরু হওয়া কাতার, এখন বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে কার্যত ভাঙা হাটের রূপ নিয়েছে। এই এক মাস প্রায় ৭ লক্ষ ফুটবলপ্রেমী আরব দেশটিকে মাতিয়ে রাখলেও কাতার আবার ফিরছে তার পুরনো রূপে। সাত লক্ষের অধিকাংশই দেশ ছেড়েছে। দীর্ঘ একমাসের মিলন মেলার পর এক ঝটকায় শূন্যতা বিরাজ করছে দোঁহায়।
২০১০ সালে যখন ফিফা (FIFA) বিশ্বকাপ আয়োজনে কাতারের (Qatar) নাম উঠে এসেছিল, তখন চমকে উঠেছিল অনেকেই। দেশটা তো আদৌ ফুটবল খেলিয়ে হিসেবে পরিচিত নয়। ভাল স্টেডিয়াম আছে কি না, সেখানে বিশ্বকাপ (World Cup) কতটা জমবে, তা নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু ১২টা বছর এবং ৩০০ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৫ লক্ষ কোটি টাকা) হাতে পেলে বহু অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। আর হয়েছেও সেটাই। জমজমাট কাতার বিশ্বকাপ শেষের মুখে। বাকি আছে আর দুটো মাত্র খেলা। টুর্নামেন্ট যে সফল তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে অন্য জায়গায়।
এই বিপুল অর্থ খরচ করার দরকার ছিল কি? রেকর্ড সংখ্যক টিভি দর্শক, আনন্দিত ফ্যান, কার্নিভ্যালের মেজাজ। কিন্তু আসল প্রশ্ন, বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পরে কী হবে? ফাইনাল ম্যাচের পর যখন দেশবিদেশের লক্ষ লক্ষ সমর্থক থেকে ফিরে যাবে, কাতার হয়ে পড়বে ফাঁকা জায়গা। হোটেলের ঘরগুলো শূন্য হয়ে পড়ে থাকবে এবং সবথেকে বড় কথা কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি স্টেডিয়ামের (Stadium) একাধিক হয়তো আর ব্যবহারই হবে না। কাতারে ঘরোয়া ফুটবল ব্যাপক হারে খেলা হয় না। এবং এর কারণে কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হওয়া স্টেডিয়ামগুলির মধ্যে অনেকগুলিই ভেঙে ফেলা হবে বা অন্য কিছুতে এগুলিকে পরিবর্তিত করা হবে। কাতার আন্তর্জাতিক ফোন কোড ৯৭৪ থেকে বিশ্বকাপের একটি স্টেডিয়ামের নাম হয়েছে স্টেডিয়াম ৯৭৪। কন্টেনার দিয়ে এই স্টেডিয়ামটি তৈরি হয়েছে। বিশ্বকাপের পর এই স্টেডিয়ামটিকেও ভেঙে ফেলা হবে। অন্যান্য ছয়টি স্টেডিয়ামকে শপিং মল, হোটেলৈ রূপান্তরিত করার কথা চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: তোমরা ইতিহাস লিখেছো! ম্যাচ শেষে বন্ধু হাকিমির জার্সি গায়ে বললেন এমবাপে
বিশ্বকাপের আগে কাতার বারবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে উপযুক্ত ব্যবহার না করার কারণে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বারবার খবরের শিরোনামে এসেছে কাতার। তবে, মানবাধিকারের জন্য লড়াই করা সংস্থাগুলোর তরফ থেকে প্রতিবাদের পর এবং সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সমালোচিত হওয়ার পর মানবাধিকারকে অগ্রধিকার দিয়েছে কাতার এবং অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়েও তারা কাজ করেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। কিন্তু সবই তো সাময়িক। এখন তো 'খেলা ভাঙার খেলা'।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।