মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ মামলায় মুখ পুড়ল স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission)। রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর (Paresh Adhikary) মেয়ের চাকরিতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার সিবিআই তদন্তের (CBI probe) নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। পরেশকে সিবিআইয়ের সামনে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি, তাঁকে মন্ত্রী পদ সরানোর জন্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা (Mamata) বন্দ্যোপাধ্যায়কে আদালত অনুরোধ করেছে। একইসঙ্গে তদন্তের খাতিরে মামলার সঙ্গে জড়িত যে কোনও কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের স্বাধীনতা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Teacher Recruitment) মামলায় বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এল। অভিযোগ, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে বেআইনিভাবে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে অঙ্কিতা মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। মামলাকারীদের দাবি, পার্সোনালিটি টেস্টে না বসেও এবং মেধাতালিকায় নাম না থেকেও অঙ্কিতা চাকরি পেয়েছেন।
এই ঘটনায় মঙ্গলবার সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। এই অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার জেরেই পরেশকে সিবিআইয়ের সামনে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেয় আদালত। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) সিঙ্গল বেঞ্চ বলেছিল, মঙ্গলবার রাত আটটার মধ্যে নিজাম প্যালেসে (Nizam Palace) হাজিরা দিতে হবে পরেশ অধিকারীকে।
কিন্তু, সেই হাজিরা দেননি রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, এদিন আদালত যখন রায় দিচ্ছে, তখন মেখলিগঞ্জে ছিলেন পরেশ। সূত্রের খবর, নির্দেশ পাওয়া মাত্রই তিনি মেয়ে অঙ্কিতাকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন। ফলে, ৮টার মধ্যে তিনি যে কলকাতায় হাজির হচ্ছেন না, তা একপ্রকার নিশ্চিত ছিল।
তবে, এদিনই জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন থেকে রাত পৌনে ৮টার পদাতিক এক্সপ্রেসে চড়ে রওনা হন কলকাতার উদ্দেশে।
তার আগে, আদালতের রায় নিয়ে পরেশকে প্রশ্ন করা হলে, রায় সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। পরেশ বলেন, ‘‘এ প্রসঙ্গে আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা হয়নি। যে হেতু কোর্টের বিষয়, তাই এ প্রসঙ্গে কোনও উত্তর দিতে পারছি না। কোর্টের কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতে পারছি না। যা কিছু বলা হচ্ছে, সে তো একতরফা ভাবে বলা হচ্ছে। কোর্টের কাগজ হাতে পাওয়ার পরে নিশ্চয়ই জবাব দেব।’’
এদিকে, নিজাম প্যালেস সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পরেশকে ফোন করা হলেও সে সময় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁর ফোন বন্ধ করা ছিল বলে দাবি। এর পর সিবিআই আধিকারিকরা মন্ত্রীকে মেসেজ করেন। তাতে জানতে চাওয়া হয়, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মতো তিনি কখন কলকাতায় সিবিআই দফতরে আসছেন? ওই সূত্র মারফত খবর, পরেশের জন্য রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন সিবিআই আধিকারিকেরা।
পরেশ অধিকারীর মেয়ের স্কুল শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জালিয়াতির মামলা কোন দিকে এগোয়, এখন দেখার সেটাই।
+ There are no comments
Add yours