শিশুমৃত্যুর পিছনে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য, কী জানেন?
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১১ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আর এই মৃত্যুর ঘটনার জন্য পরিবারের লোকজন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। নজরদারি অভাব বা গাফিলতির জন্য পর পর এই শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, এমনই দাবি মৃতের পরিবারের লোকজনের।
একের পর এক শিশুমৃত্যুর কারণ নিয়ে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) মেডিক্যাল কলেজ এবং জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল একে অন্যের দিকে দায় ঠেলেছে। পরিস্থিতি দেখে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। শিশুমৃত্যুর কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল। তাতে উঠে আসে একটি তথ্য। দেখা যাচ্ছে, সদ্য সন্তান হারানো মায়েদের ঠিকানা আলাদা হলেও তাদের বেশির ভাগের মধ্যে একটি মিল, অপরিণত বয়সে বিয়ে এবং মা হওয়া। ১১ জন শিশুর মধ্যে সাত জনের মা নাবালিকা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার ১৬ বছর বয়সি এক কিশোরী ৪৬০ গ্রাম ওজনের একটি সন্তানের জন্ম দেয়। জঙ্গিপুরের ১৭ বছর ৩ মাস বয়সি এক নাবালিকা যে সন্তান প্রসব করে, তার ওজন ছিল ৫১০ গ্রাম। শুধু এই দুই মা নয়, ২৪ ঘণ্টায় যে ১১ সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মায়েরা সবাই হয় নাবালিকা নয়তো সবে আঠারো পেরোনো। আসলে শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা দিতে না দিতেই মেয়েদের পাত্রস্থ করার চল এখনও রয়েছে মুর্শিদাবাদের গ্রামগঞ্জে। বাল্যবিবাহ রুখতে কেন্দ্র এবং রাজ্যের একাধিক প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু মুর্শিদাবাদের গ্রামে গ্রামে গেলে দেখা যাবে বাল্যবিবাহের ছবি। বাড়ির মেয়েরা ভালো খাবার না পেয়ে অপুষ্টিতে ভোগেন। আর তারই ফলশ্রুতিতে অপুষ্টিজনিত সমস্যা নিয়ে শিশুদের জন্ম হয়। জন্মের পর থেকেই বিভিন্ন অসুখে ভুগে থাকে তারা।
গ্রামবাংলার আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার কমিশনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য প্রসূন ভৌমিক বলেন, 'আসলে এখনও বাবা-মায়েরা ছেলেদের প্রতি যতটা যত্নবান হন, কন্যাসন্তানের প্রতি ততটা নন। এই ভয়াবহ সামাজিক অভিশাপেই এক নাবালিকার অল্প বয়সে মা হতে হয়। প্রসবের সময় প্রাণের ঝুঁকি থাকে তাদের দু'জনেরই।'
মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অমিত দাঁ বলেন, আমাদের হাসপাতালে প্রচুর রেফার হচ্ছে। নার্সিংহোম থেকে শেষ মুহূর্তে রেফার করা হচ্ছে। আর ডাক্তার বা নার্সদের কোনও গাফিলতি রয়েছে কি না তা জানতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া ১৬ থেকে ১৭ বছরের মেয়ে মা হচ্ছে। তার ফলে কম ওজনের সন্তানের জন্ম হচ্ছে। পাশাপাশি জন্মগত ত্রুটি নিয়ে সন্তানের জন্ম হচ্ছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।