জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ বালি বোঝাই ডাম্পারের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন জামিরুল শেখ নামে এক যুবক
বাবুল সুপ্রিয়
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়’র (Babul Supriyo) নিরাপত্তারক্ষীদের অতিরিক্ত পরিষেবা দিতে গিয়ে বিনা চিকিৎসায় এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠল বীরভূমের রামপুরহাট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। মৃত যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতালের এম এস ভি পি পলাশ দাস।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ বালি বোঝাই ডাম্পারের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন জামিরুল শেখ (২৬) নামে এক যুবক। তার বাড়ি মল্লারপুর থানার সন্ধিগড়া বাজার এলাকায়। তিনি সন্ধ্যার দিকে বাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। মল্লারপুর – কামড়াঘাট রাস্তা হয়ে বাড়ি ফেরার সময় খরাসিনপুর গ্রামের কাছে বেপরোয়া গতিতে চলা বালি বোঝাই লরির ধাক্কায় জখম হন জামিরুল। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। নাক মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে শুরু করে। ওই অবস্থায় তাঁকে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার কিছুক্ষণ পরেই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়’র (Babul Supriyo) পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীকে। শুক্রবার সাঁইথিয়া থানার মাসাড্ডা গ্রামের কাছে বাবুলের নিরাপত্তারক্ষীদের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। গাড়িতে থাকা পাঁচ নিরাপত্তারক্ষী জখম হন। তাঁদের প্রথমে সাঁইথিয়া হাসপাতাল এবং রাতে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অভিযোগ বাবুলের (Babul Supriyo) নিরাপত্তারক্ষীরা ভর্তি হতেই বাকি রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্য কর্মীরা নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারনে বিনা চিকিৎসায় জামিরুলের মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে গান্ধীপার্ক ময়দানে রামপুরহাট পুরসভা আয়োজিত একটি উৎসবে বাবুল সুপ্রিয়’র (Babul Supriyo) গানের অনুষ্ঠান ছিল। ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতা থেকে রামপুরহাটে আসছিলেন তৃনমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। তখনই ঘটে এই দুর্ঘটনা।
মৃত জামিরুলের ঘনিষ্ঠ রাজা শেখ বলেন, “নিরাপত্তারক্ষীরা হাসপাতালে ঢুকতেই দলে দলে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা হাসপাতালে পৌঁছে যান। বাবুল হাসপাতালে পৌঁছলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা চিকিৎসা ছেড়ে বাবুলের সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তখনও আমাদের রোগীর নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। আমরা বার বার নার্সদের কাছে গিয়ে চিকিৎসক ডাকার অনুরোধ করেছি। কিন্তু আমাদের কথার কোন গুরুত্ব দেননি তারা। ফলে বিনা চিকিৎসায় ভোরের দিকে জামিরুলের মৃত্যু হয়”।
মৃত জামিরুলের ভাই সাফিজুল শেখ বলেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করলে দাদার মৃত্যু হত না। বড় নেতা মন্ত্রী না হলে হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া যায় না। সেটা আমরা পদে পদে অনুভব করলাম। মন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীর জন্য সবাই ব্যস্ত কিন্তু গরিব মানুষের জন্য কেউ নেই। আমার ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য বার বার অনুরোধ করেও চিকিৎসক মেলেনি। কিন্তু মন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীর জন্য একাধিক চিকিৎসক হাজির”।
হাসপাতালের এমএসভিপি পলাশ দাস বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। সকলের চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া উচিত। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে”।
Tags: