মুর্শিদাবাদের ব্যাসপুরের শিবের মাহাত্ম্য কী জানেন?
ব্যাসপুরের শিব মন্দিরে দুধ ঢেলে পুজো করা হচ্ছে। নিজেস্ব চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর শহরের একটি অতি প্রাচীন মন্দির হলো ব্যাসপুর শিব মন্দির। শিবরাত্রি (Maha Shivratri) উপলক্ষে চলে চার দিনব্যাপী উৎসব ও নরনারায়ণ সেবা। বহু দূর-দুরান্ত থেকে ভক্তেরা সমাবেত হন এই মন্দিরে, এই মন্দিরের উৎসব আজ থেকেই শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্দির কমিটির সদস্যবৃন্দরা।
বহরমপুর শহরের কাশিমবাজারের ব্যাসপুরে অবস্থিত এই বিখ্যাত শিব মন্দির। কথিত রয়েছে যে পণ্ডিত রামকেশব দেবশর্মন ১৮১১ সালে এই মন্দির তৈরি করেন। এই মন্দিরটির স্থাপত্য শৈলী খুব সুন্দর। এরকম উচু মন্দির এখানে আর নেই। অনেকের মতে আবার রাণী ভবানীর তৈরি বরানগরের মন্দির থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই মন্দির তৈরি হয়েছে। আজ এই মন্দিরে শিবরাত্রির দিনেই শিবকে পুজো করা হয়েছে। তবে সময়ের সাথে সাথে এই মন্দিরটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ১৯১৮ সালে মুর্শিদাবাদের লালগোলার মহারাজা যোগীন্দ্র নারায়ণ রায় বাহাদুর এই মন্দিররের সংস্কার করেন। তখন এই মন্দিরের সংস্কারের তত্ত্বাবধানে ছিলেন আইনজীবী ও জাতীয়তাবাদী নেতা রায়বাহাদুর বৈকুণ্ঠ নাথ সেন। ১৯৯৫ সালে মহারাষ্ট্রের অমিত কুমার ভোঁসলে আবার এই মন্দিরের সংস্কার করেন।
মন্দিরটি বিভিন্ন স্থাপত্য শৈলীর মিশ্রণে তৈরি। মন্দিরে কার্নিশসহ চালা,পদ্মফুলের আট পাপড়ি, মন্দিরে আট কোণ যুক্ত চূড়া আছে। মন্দিরের চুড়ায় কলস ও ত্রিশূল আছে। যা উল্টো পদ্মের মতো দেখতে। মন্দিরের গায়ে দুর্গা, কালী, রাধামাধব, গণেশ ,সিংহ, হাতি, সর্প ইত্যাদি অঙ্কিত রয়েছে। মন্দিরের প্রবেশ পথে মন্দিরের গায়ে রাম-রাবণের যুদ্ধ, কৃষ্ণলীলা, বিষ্ণুর দশাবতার, মহিষাসুরমর্দিনী, ফুল, লতাপাতা আঁকা রয়েছে। মন্দির সংস্কারের ফলে টেরাকোটার কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। শিবরাত্রির (Maha Shivratri) দিনে জল ঢালার জন্য প্রচুর মানুষের সমাগম হয়।
এই মন্দিরের উচ্চতা ৫৭ ফুট। মন্দিরের গর্ভগৃহে আছে কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গ। তাঁরই নাম ব্যাস দেব। এই শিবলিঙ্গের উচ্চতা ৫ ফুট। সম্প্রতি মন্দিরটির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মন্দিরের প্রবেশ পথের পাশেই তৈরি করা হয়েছে বিশাল "হরগৌরীর" মূর্তি। প্রধান মন্দিরের সম্মুখে তৈরি হয়েছে বিশাল "নাট মন্দির"। এখানে শিবরাত্রিতে (Maha Shivratri) ভক্তরা নিজের মনস্কামনার কথা জানিয়ে থাকেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।