খনি গহ্বরে দুর্ঘটনা, পরিবার-পরিজন নিয়ে রাতভর বাইরে
এভাবেই খনিমুখ থেকে বেরিয়ে আসছে বিষাক্ত গ্যাস। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০২০ সালের ১৪ ই জুন দুপুর দেড়টা। বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছিল অন্ডালের (Andal) হরিশপুর গ্রামের মাটি। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছিল বাড়িঘর। একাধিক বাড়ি তলিয়ে গিয়েছিল মাটির নিচে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভিটেমাটি হারা হন গ্রামবাসীরা। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে ওঠার পর তাঁরা বুঝতে পারেন, গ্রামের কাছেই থাকা ইসিএলের খোলা মুখ খনির কয়লা উৎপাদনের কারণেই ধসে তাঁরা সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন। ইসিএল ও রাজনৈতিক নেতারা গ্রামে এসে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। মিলেছিল পুনর্বাসনের আশ্বাসও।
তিন বছর পর একই ঘটনা (Andal)
ধসের ঘটনার পর তিন বছর অতিক্রান্ত। ফের সোমবার ঠিক একই সময় বেলা ১ টা ৩০ মিনিট থেকে ২ টোর মধ্যে হরিশপুর গ্রামের ঝরে পাড়া এলাকা থেকে ৫০ মিটার দূরে ইসিএলের (Andal) একটি পরিত্যক্ত খনি গহ্বর থেকে বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া বের হতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসীরা। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে আসে মাধবপুর কোলিয়ারির কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে এই এলাকায় ইসিএল-এর একটা খনি ছিল, যেটা বর্তমানে পরিত্যক্ত। হঠাৎ সেই পরিত্যক্ত খনি থেকে কালো ধোঁয়ার সাথে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হরিশপুর গ্রামের বাসিন্দারা।
বাধার মুখে ইসিএল (Andal)
ইসিএল পরিত্যক্ত খনি গহ্বর মাটি দিয়ে ভরাট করার উদ্যোগ নিলে, প্রথমেই গ্রামবাসীদের বাধার মুখে পড়তে হয় তাদের। গ্রামবাসীদের দাবি, পুনর্বাসন দিতে হবে গ্রামের লোকেদের। যদিও নিজেদের সুরক্ষার খাতিরেই পরে ওই পরিত্যক্ত খনি গহ্বর মাটি দিয়ে ভরাট করাতে রাজি হয় এলাকার মানুষ। কিন্তু ২২ ঘন্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পরও ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ইসিএল। গতকাল রাত থেকে মেশিন দিয়ে খনি গহ্বরের মাটি ভরাটের কাজ চলছে। কিন্তু ২২ ঘন্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পরও এলাকায় (Andal) আতঙ্ক রয়েছে এখনও।
কী দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের (Andal)?
লাজন্তী বাউরি নামে স্থানীয় এক মহিলা জানান, যেভাবে পাড়ার একেবারে কাছেই পরিত্যক্ত ঘনি থেকে (Andal) বিষাক্ত গ্যাস ও ধোঁয়া বের হচ্ছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই ভয় ধরেছে মনে । কখন যে কী হয়, এই ভয়ই তাড়া করছে তাঁদের। আর ভয়ের কারণেই নাওয়া খাওয়া ভুলে গতকাল রাত থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়ির বাইরে সারারাত জেগে কাটাতে হয়েছে তাঁদের। তিনি জানান, ইসিএল বা অন্য কোনও প্রশাসনিক দফতরের লোক কোনওরকম আশ্বাস দেননি। তাই স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। তাঁরা চান, পুনর্বাসন দিক ইসিএল। যাতে করে তাঁরা পরিবার-পরিজন নিয়ে নির্ভয়ে, শান্তিতে বসবাস করতে পারেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।